tag:blogger.com,1999:blog-2920653716595774742024-03-16T07:12:56.391+06:00গ্রন্থগত - বাংলা বই রিভিউ আলোচনাBengali Book Review Website. গ্রন্থ সমালোচনা, বই আলোচনা, রিভিউ, পর্যালোচনা, পরিচিতি, বিবরণীগ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.comBlogger728125tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-44163839747496012892024-03-15T11:11:00.006+06:002024-03-15T11:11:52.585+06:00 হিমাংশু করের আলোচনায় অপু তানভীর অনুদিত পিটার শিফ ও অ্যান্ড্রু শিফ রচিত "হাউ অ্যান ইকোনোমি গ্রোস অ্যান্ড হোয়াই ইট ক্র্যাশেস"<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjiceAsxwyj5C8q63V5Wk_-uH3W_iGb5grff2vbLgAQlQkwum5URaKs-lzv3nS9oY4blWLogs_3RbvvJyrpI59DaVykAVG4ZJZSh3xoufLXfRBTMHaW-K-V_2BlOpjmKhqoc0xDj_Cnt5m2hDzFjfYK9oJjBVHQ4Gbh2u12Qe7G__OT50taijl72jvxL4Y/s500/how-an-economy-grows-and-why-it-crashes.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="অপু তানভীর অনুদিত পিটার শিফ ও অ্যান্ড্রু শিফ রচিত "হাউ অ্যান ইকোনোমি গ্রোস অ্যান্ড হোয়াই ইট ক্র্যাশেস"" border="0" data-original-height="500" data-original-width="317" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjiceAsxwyj5C8q63V5Wk_-uH3W_iGb5grff2vbLgAQlQkwum5URaKs-lzv3nS9oY4blWLogs_3RbvvJyrpI59DaVykAVG4ZJZSh3xoufLXfRBTMHaW-K-V_2BlOpjmKhqoc0xDj_Cnt5m2hDzFjfYK9oJjBVHQ4Gbh2u12Qe7G__OT50taijl72jvxL4Y/s16000/how-an-economy-grows-and-why-it-crashes.jpg" title="অপু তানভীর অনুদিত পিটার শিফ ও অ্যান্ড্রু শিফ রচিত "হাউ অ্যান ইকোনোমি গ্রোস অ্যান্ড হোয়াই ইট ক্র্যাশেস"" /></a></div><br /><p>অ্যামেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ যুগের শুরু হয় ১৯২৯ সালের ২৪ শে অক্টোবর। ঐদিন নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের প্রায় ১৩ মিলিয়ন শেয়ার একদিনেই বিক্রি হয়ে যায়। ইতিহাসে এই দিনটি “ব্ল্যাক থার্স্টডে” নামে পরিচিত। এই ঘটনাতে সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় পড়ে অ্যামেরিকার ব্যাংকগুলো। শেয়ার মার্কেটকে চাঙ্গা করতে ব্যাংকগুলো একজোট হয়ে বড় অংকের বিনিয়োগ করে। কিন্তু এতে কোনো লাভ হয়নি। এরপর ২৯ শে অক্টোবর আরও বড় ধ্বস নামে। একদিনে বিক্রি হয়ে যায় ১৬ মিলিয়ন শেয়ার। দেখতে দেখতে অ্যামেরিকার অর্থনীতি বালির প্রাসাদের মত ধ্বসে পড়ে।<br /><br />অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই বেশিরভাগ কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। দেউলিয়া হয়ে যায় শত শত ব্যাংক। প্রায় দেড় কোটি মানুষ হঠাৎ করে বেকার হয়ে পরে। গৃহহীন হয়ে পরে হাজার হাজার মানুষ । তৈরি হয় শত শত বস্তি। অপরাধ প্রবণতাও বৃদ্ধি পায় মারাত্মকভাবে। ছিন/তাই, খু/ন, বা চুরির মত অপরাধ দিন দিন বাড়তেই থাকে। ১৯৩৭ সালে প্রকাশিত উপন্যাস “অফ মাইস অ্যান্ড ম্যান” পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন- ১৯৩০ এর দশকে অ্যামেরিকার হাজার হাজার মানুষ কাজের আশায় এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরে বেড়াত। বহু মধ্যবিত্ত পরিবার একদম আক্ষরিক অর্থেই পথে বসে যায়। আধুনিক অর্থনীতির ইতিহাসে এটাই হলো সবচেয়ে ভয়াবহ মন্দা। এই মন্দা ইতিহাসে “দ্যা গ্রেট ডিপ্রেশন” নামে পরিচিত।<br /><br />কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো- মন্দা শুরু হওয়ার আগের দশটা বছর ছিল অ্যামেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে সমৃদ্ধির সময়। এ সময় অ্যামেরিকানরা দুই হাতে খরচ করেছে। ঘরে ঘরে ছিল বিলাসবহুল পণ্যের ছড়াছড়ি। রেডিও, গাড়ি, রেফ্রিজারেটর এগুলো তখন অ্যামেরিকানদের কাছে মামুলি ব্যাপার। অনেকেই তখন চার-পাঁচটা গাড়িও কিনত। এইসব মাত্রাতিরিক্ত বিলাসিতার পেছনে ব্যাংকগুলোর হাত ছিল। ব্যাংকগুলো খুব সহজ শর্তে ঋণ দিত। মানুষের হাতে বেশ ভালো টাকা থাকার কারণে সমাজের নিম্নবিত্তরাও অহরহ শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করত। আর এতে লাভও হতো নিশ্চিতভাবে। ফলে অনেক হত-দরিদ্র মানুষও নিজেদের বাড়ি বন্ধক রেখে ঋণ করে শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করত। এই এক দশকের মধ্যে অ্যামেরিকাতে প্রায় ২৫০০০ নতুন ব্যাংক গড়ে উঠেছিল। দেশে মোট ব্যাংকের সংখ্যা ছিল প্রায় ২৯ হাজার। এক কথায় বলতে গেল এই দশকটা ছিল অ্যামেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে সমৃদ্ধির সময়।<br /><br />কিন্তু অ্যামেরিকানদের এই সুখ খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। এক দশকের সোনালী দিনের শেষে মহামারির মত এসে হাজির হয় গ্রেট ডিপ্রেশন। মন্দার এই দিনগুলোতে বেশিরভাগ অ্যামেরিকান ভয়াবহ দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটিয়েছে।<br /><br />কিন্তু টানা এক দশকের দুর্দান্ত অর্থনৈতিক উন্নতির পর হঠাৎ কেন এমন ভয়াবহ মন্দা শুরু হলো?<br /><br />এই ভয়াবহ মন্দার জন্য আসলে একটি বিষয় দায়ী ছিল না। কোনো একটি বিষয়ের কারণে মন্দা হলে তা এত ভয়াবহ আকার ধারণ করত না। স্টক মার্কেটের ধ্বস দিয়ে এই গ্রেট ডিপ্রেশন শুরু হয়। এটি ছিল ডিপ্রেশনের একটি বড় কারণ। এর সাথে ছিল ঐ সময়ের ব্যাংকগুলোর অব্যবস্থাপনা এবং সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার নীতি। স্টক মার্কেট ক্রাশের পর সরকার বেশকিছু নতুন আইন পাশ করে। সেই নতুন আইনগুলোর কারণেও এই মন্দা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। তেমন একটি আইন ছিল Smoot–Hawley Tariff Act। এই সবকিছুর সাথে যোগ হয় দীর্ঘ এক খরা। এই খরা প্রায় দশ বছর স্থায়ী হয়েছিল এবং খরার কারণে ফসলের উৎপাদন অনেক কমে গিয়েছিল।<br /><br />তবে অর্থনীতিবিদদের কাছে এই মন্দা আসলে এর ভয়াবহতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাদের অনেকেই মনে করেন এই মন্দা আসলে আধুনিক অর্থনীতিকেই ডিফাইন করে। আধুনিক অর্থনীতি কীভাবে চলে, কীভাবে সমৃদ্ধি লাভ করে, বা কী কারণে ধ্বসে পরে- সেটা আমরা ভালোমতো বুঝতে পেরেছিলাম এই মন্দার পর।<br /><br />অর্থনীতির কিছু মৌলিক নীতি আছে যে নীতিগুলো ভঙ্গ করা হলে একটি দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়তে বাধ্য। আমরা এই আলোচনাতে সেই বিষয়টাতেই বেশি জোর দেব। এই আলোচনা শুরু করার আগে আমরা যদি মন্দার আগের পৃথিবীর অবস্থাটা জেনে নিই তাহলে আমাদের এই নীতিগুলো বুঝতে অনেক সুবিধা হবে। তাই চলুন ঘুরে আসি ১৯২০ সালের আগের পৃথিবী থেকে।<br /><br />প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে পৃথিবীর রাষ্ট্রব্যবস্থা ছিল বর্তমান সময়ের চেয়ে অনেকখানি আলাদা। তখন ব্রিটিশ, ফরাসি, রাশিয়ান এবং অটোম্যান সাম্রাজ্যের অধীনেই ছিল ইউরোপ-এশিয়ার বেশিরভাগ অঞ্চল। ফলে যুদ্ধ শুরু হলে ইউরোপ ও এশিয়ার বেশিরভাগ দেশই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুদ্ধে জড়িয়ে পরে। এই যুদ্ধ চলেছিল চার বছরেরও বেশি সময় ধরে। যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির কারণে ইউরোপের এবং এশিয়ার বেশিরভাগ দেশের অর্থনীতি একদম ভেঙে পড়ে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল ইউরোপ।<br /><br />একটানা যুদ্ধের কারণে ইউরোপের কৃষি এবং শিল্প-কারখানাগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এর ফলে দেখা দেয় তীব্র খাদ্য সংকট। খাদ্যের মত অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসেরও মারাত্মক ঘাটতি ছিল। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগায় অ্যামেরিকা। অ্যামেরিকা এই যুদ্ধে নিরপেক্ষ থাকার সিদ্ধান্ত নিলেও ব্যবসা করার সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি। যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউরোপের তখন প্রচুর খাদ্য এবং অস্ত্রের প্রয়োজন ছিল। আর অ্যামেরিকা তখন ইউরোপে একচেটিয়াভাবে খাদ্য ও অস্ত্র রপ্তানি করতে থাকে।<br /><br />রপ্তানির পাশাপাশি অ্যামেরিকা তখন ঋণ দিয়েও লাভবান হচ্ছিল। অ্যামেরিকার কাছে স্বর্ণ বন্ধক রেখে ইউরোপ তখন প্রচুর পরিমাণ ঋণ সহায়তা নিতে থাকে। দখলদার ইউরোপীয় দেশগুলো সারা দুনিয়া থেকে যে স্বর্ণগুলো এনে নিজেদের দেশে জমা করেছিল তা তখন অ্যামেরিকার কাছে গিয়ে জমা হয়। একদিকে ইউরোপের বাজারে পণ্য রপ্তানির জন্য অ্যামেরিকাতে হাজার হাজার কল-কারখানা গড়ে উঠছিল। অন্যদিকে জমা হচ্ছিল রাশি রাশি স্বর্ণ। সব মিলিয়ে অ্যামেরিকার অর্থনীতি এক লাফে ফুলে ফেঁপে উঠে। যত উৎপাদন, তত কারখানা, তত কর্মসংস্থান। আর বাজার যেহেতু রেডি, তাই পণ্য উৎপাদন নিয়ে উদ্যোক্তাদের কোনো চিন্তা করতে হয়নি। ফলে বিনিয়োগ করা নিয়েও কোনো সমস্যা ছিল না। যারা বিনিয়োগ করছিল তাদের প্রায় সবাই লাভবান হচ্ছিল। এভাবে অর্থনীতি ফুলে ফেঁপে উঠে, শেয়ার বাজারও দারুণ উন্নতি করে।<br /><br />কিন্তু বিশের দশকের শেষের দিকে এসে হঠাৎ করেই এই অগ্রগতি ঝিমিয়ে পড়ে। কারণ অ্যামেরিকার এই অস্বাভাবিক উন্নতি হয়েছিল মূলত ইউরোপের বাজারে রপ্তানি করে। আর সেই ইউরোপ ততদিনে যুদ্ধের ক্ষতি কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। ইউরোপের কৃষকরা একটা পর্যায়ে পুরোদমে ফসল উৎপাদন শুরু করে দেয়। একইসাথে শুরু হয় অন্যান্য পণ্যের উৎপাদন। ফলে ইউরোপের বাজার টার্গেট করে অ্যামেরিকা যে বিপুল পরিমাণ পণ্য উৎপাদন শুরু করেছিল সেগুলো তখন বিক্রির অভাবে নষ্ট হচ্ছিল। বিশেষ করে সমস্যায় পড়ে কৃষকরা। খাদ্য শস্য সহজেই নষ্ট হয়ে যায়, আর এগুলো সংরক্ষণ করাটাও কঠিন। বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্যের বিক্রি যদি একদম কমে যায় তখন কৃষকদের ভরাডুবি নিশ্চিত।<br /><br />কৃষিপণ্যের বাজার খারাপ হলে সেটার প্রভাব শিল্পখাতেও পড়বে। এই বিষয়টাই আন্দাজ করেছিল ঐ সময়ের ঋণ-দাতারা। ব্যাংক ছাড়াও বিভিন্ন ব্রোকারদের থেকে মানুষ তখন ঋণ নিয়ে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করত। ঋণদাতারা কৃষকদের পরিস্থিতি দেখে বুঝে ফেলে যে সামনে শিল্প কারখানাতেও এর প্রভাব পড়বে। ফলে তাদের ঋণের টাকা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে। তারা ঋণগ্রহীতাদের চাপ দিতে থাকে। চাপের কারণে ঋণগ্রহীতারা শেয়ার বিক্রি করে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে শুরু করে। ফলে হঠাৎ করেই শেয়ারের দরপতন শুরু হয়। ধ্বস নামে শেয়ার বাজারে। আর শেয়ারবাজারের এই ধ্বস চেইন রিঅ্যাকশনের মত ছড়িয়ে পরে গোটা দেশের অর্থনীতিতে। একে একে বন্ধ হয়ে যায় শিল্প-কারখানাগুলো। দেউলিয়া হয়ে যায় শত শত ব্যাংক। গুদাম বোঝাই মালামাল কেনার মত কোনো ক্রেতা ছিল না। অন্যদিকে ইউরোপে রপ্তানির পরিমাণ দিন দিন কমেই আসছিল। সবকিছু মিলিয়ে অ্যামেরিকা প্রবেশ করে তার ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ যুগে- “দ্যা গ্রেট ডিপ্রেশন”।<br /><br />কিন্তু এই মহামন্দা থেকে একদল অর্থনীতিবিদ আধুনিক অর্থনীতির মূলকথাটা নতুন করে উপলব্ধি করেন। এই ধারার অর্থনীতিবিদরা “অস্ট্রিয়ান স্কুল” নামে পরিচিত ছিল। এরা মূলত লুডভিগ ভন মাইসেসের মত অর্থনীতিবিদদের অনুসারী।<br /><br />অস্ট্রিয়ান স্কুলের অর্থনীতিবিদদের ঠিক বিপরীত চিন্তা করতেন “কেইনসিয়ান স্কুলের” অর্থনীতিবিদরা। এরা ছিলেন মূলত জন মেনার্ড কেইনসের অনুসারী।<br /><br />অস্ট্রিয়ান স্কুলের অর্থনীতিবিদরা মনে করেন- দেশের অর্থনীতির উত্থানের সময়টা খুব জটিল। এই সময় সরকারকে খুব হিসাব করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আর এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রায়ই ভুল হয়। সেই ভুলগুলো শুধরানোর জন্য বা ব্যালেন্স করার জন্য তখন একটা মন্দার প্রয়োজন হয়। তাই এই ধারার অর্থনীতিবিদরা দেশের অর্থনীতির কৃত্রিম উত্থান রোধ করার দিকেই বেশি নজর দিতে চান।<br /><br />অন্যদিকে, কেইনসিয়ানরা মনে করেন দেশের অর্থনীতিকে সবসময় চাঙ্গা রাখতে হবে। আর এই চাঙ্গা রাখার জন্য সরকারের যা যা করা দরকার সরকার সেটাই করবে। দরকার হলে সরকার সহজ শর্তে ঋণ দেবে, সুদের হার কমিয়ে দেবে, কর মওকুফ করবে, ব্যাংক বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে বেইলআউট দিয়ে সহায়তা করবে। ক্ষেত্রবিশেষ বড় অংকের প্রণোদনাও দেওয়া লাগতে পারে।<br /><br />অর্থাৎ, কেইনসিয়ানদের নজর যেখানে ছিল অর্থনৈতিক পতনকে আটকে দেওয়ার দিকে, সেখানে অস্ট্রিয়ানদের দৃষ্টি ছিল কৃত্রিম অর্থনৈতিক উত্থান রোধ করার দিকে। কেইনসিয়ানরা বাজার চাঙ্গা রাখার জন্য সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া থেকে শুরু করে যা যা করার দরকার তার সবকিছু করতেই সরকারকে পরামর্শ দিত। কিন্তু অস্ট্রিয়ানরা ছিল এসবের বিপক্ষে।<br /><br />গ্রেট ডিপ্রেশনের সময় অ্যামেরিকার সরকার কেইনসিয়ানদের নীতি অনুসরণ করে। কেইনসিয়ানদের নীতিগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সুবিধাজনক। কারণ এই নীতির ফলে সরকার যেহেতু নিজের ইচ্ছেমত টাকার সরবরাহ বৃদ্ধি করতে পারে, তাই কর বৃদ্ধি না করেও দেশের উন্নয়ন করা যায়। জনগণকে সহজ শর্তে এবং কম সুদে ঋণ দেওয়া যায়। এতে সরকারের নির্বাচনী প্রচারণাতেও সুবিধা হয়, আবার জনগণও খুশি হয়। এইসব সুবিধার কারণে দিন দিন অস্ট্রিয়ানদের বদলে কেইনসিয়ানদের নীতিগুলো বেশি জনপ্রিয়তা পায়। কিন্তু অস্ট্রিয়ান স্কুলের অর্থনীতিবিদরা এই নীতিগুলোর বিপক্ষে। তারা মনে করেন এভাবে কৃত্রিম উত্থান ঘটানো দীর্ঘমেয়াদে একটা দেশের অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ ব্যাপার। এতে একটি দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।<br /><br />গ্রেট ডিপ্রেশনের সময় ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্টের সরকার কেইনসিয়ানদের নীতিগুলো ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করেন। আর তারপর থেকে অ্যামেরিকা মূলত কেইনসিয়ান নীতি মেনেই দেশ পরিচালনা করছে।<br /><br />তাহলে কেইনসিয়ানদের নীতিগুলোই কি একটি দেশের অর্থনীতির জন্য বেশি উপযুক্ত? উত্তর হচ্ছে- না।<br /><br />কিন্তু আমরা তো দেখতে পাচ্ছি অ্যামেরিকা এখনও সারা পৃথিবীর অর্থনীতির একটা বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণ করে। কেইনসিয়ান নীতি যদি একটি দেশের জন্য ভয়াবহই হয়ে থাকে, তাহলে অ্যামেরিকা এখনও তার অর্থনৈতিক অগ্রগতি ধরে রেখেছে কীভাবে? অর্থ্যাৎ আমেরিকা যেভাবে ইচ্ছেমত ডলার ছাপিয়ে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করে তেমনটা যদি অন্য কোনো দেশ করত তাহলে সেই দেশের অবস্থা কি আমেরিকার মতো হতো? জিম্বাবুয়ে কিন্তু ঠিক এই কাজটাই করেছিল । জিম্বাবুয়ের অর্থনীতির অবস্থা কতটা ভয়াবহ সেটা একটা উদাহরণ দিলেই বুঝতে পারবেন। ২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে দেশটিতে ইনফ্লেশনের হার ছিল ৭৯,৬০০,০০০,০০০%। এই ধরনের ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতি জিম্বাবুয়েতে একটা নিয়মিত ঘটনা। এই ভয়াবহ অবস্থা এখনও ঠিক হয়নি।<br /><br />অথচ অ্যামেরিকা বছরের পর বছর এই কাজটাই করে যাচ্ছে। তারা ইচ্ছামতো ডলার ছাপছে অথচ তাদের অর্থনীতি এখনও টিকে আছে খুব ভালোভাবেই। কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব?<br /><br />আসলে অ্যামেরিকার এমন অগ্রগতি ধরে রাখার পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে আমেরিকার ডলার রিজার্ভ স্ট্যাটাস।<br /><br />দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে “ব্রেটন উডস মনিটারি কনফারেন্স” নামে একটি অর্থনৈতিক সম্মেলন হয় অ্যামেরিকার ব্রেটন উডস শহরে। এই সম্মেলনে অ্যামেরিকা সহ বিশ্বের বড় বড় ৪৪ টি দেশের সাতশরও বেশি প্রতিনিধি এসে হাজির হয়। এই সভায় অ্যামেরিকা একটা বিশেষ প্রস্তাব উত্থাপন করে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব ছিল প্রতিটি দেশ যেন তাদের নিজেদের মুদ্রাকে স্বর্ণের পরিবর্তে আমেরিকান ডলার দিয়ে ব্যাক দেয়। অর্থাৎ অ্যামেরিকা মূলত আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে স্বর্ণের পরিবর্তে ডলার ব্যবহারের প্রস্তাব দেয়। সেই সময়ের আগে দুই দেশের মুদ্রার বিনিময় মূল্য নির্ধারিত হত স্বর্ণের ভিত্তিতে । ব্রেটন উডস-এর নীতিতে গৃহীত হয় যে তখন থেকে আন্তর্জাতিক মুদ্রার বিনিময় হার স্বর্ণের পরিবর্তে ডলারের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে। আর ডলারের মান নির্ধারিত হবে স্বর্ণের ভিত্তিতে। মূলত এখান থেকেই মার্কিন ডলারের রাজত্ব শুরু হয়।<br /><br />অনেকেই ভাবতে পারেন ১৯৪৪ সালে যখন অ্যামেরিকা ৪৪টি দেশকে এই অদ্ভুত প্রস্তাব দিয়েছিল তখন তারা এই প্রস্তাব মেনেই বা নিয়েছিল কেন? আসলে দুইটি বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের অর্থনীতিই একদম ভেঙ্গে পড়েছিল। কিন্তু অ্যামেরিকা যুদ্ধে জড়ালেও তার অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল খুবই সামান্য। অন্যদিকে এই দেশগুলো ছিল যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র। যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র এই দেশগুলোকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রচুর সাহায্য করেছিল। পাশাপাশি অ্যামেরিকা প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩৫ ডলার করে দিতে চেয়েছিল। যা ঐ সময়ের জন্য ছিল বেশ লাভজনক প্রস্তাব। আবার দেশটি তখন ছিল বিশ্বের ৮০ শতাংশ স্বর্ণের মালিক। অর্থাৎ ডলারকে ব্যাক দেওয়ার জন্য, ডলারের মান স্থিতিশীল রাখার জন্য তাদের কাছে যথেষ্ট পরিমাণ স্বর্ণের মজুদ ছিল। তাই সবদিক বিবেচনা করে এই প্রস্তাবটি সবাই মেনে নেয়। এখানে আরেকটা কথা বলে রাখা ভাল যে এই ‘ব্রেটন উডস’ চুক্তির ভিত্তিতেই আজকের বিশ্বের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী দুইটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান “আইএমএফ” এবং “বিশ্বব্যাংক” প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।<br /><br />এদিকে ফেডারেল রিজার্ভের কেইনসিয়ান মানি ম্যানেজারদের কারণে অ্যামেরিকাতে নিয়মিতই মুদ্রাস্ফীতি ঘটতে থাকে। ডলারের মান ক্রমাগত কমতে থাকে। এতে দেশগুলো ডলারের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলতে শুরু করে। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে ইউরোপ ও জাপানের অর্থনীতি উন্নত হতে শুরু করে এবং তারা ডলার জমা দিয়ে আমেরিকান রিজার্ভে থাকা স্বর্ণ তুলে নিতে শুরু করে। ১৯৬৫ সালে ফ্রান্সের নেতৃত্বে বিদেশি সরকারগুলো ফেডারেল রিজার্ভের নোট জমা দিয়ে স্বর্ণ তুলে নিতে শুরু করে। ইতিহাসে এই ঘটনাটা ‘গোল্ড ড্রেইন’ নামে পরিচিত। বিশ্বের অনেক দেশ এই গণহারে স্বর্ণ উত্তোলনে অংশ নেয়। ১৯৩২ সালের পুরনো দামে স্বর্ণ কেনার সুযোগ পাওয়ার ফলে বিদেশি সরকারগুলো খুব দ্রুতই মার্কিন রিজার্ভ খালি করে ফেলে।<br /><br />অন্যদিকে ভিয়েতনাম যুদ্ধের ব্যয় মেটাতে আমেরিকা প্রচুর কাগজের ডলার ছাপায় । ফলে স্বর্ণ ও ডলারের সংযোগ টিকিয়ে রাখাটা মার্কিন সরকারের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। স্বর্ণ উত্তোলন বন্ধ করার কোনো পথ দেখতে না পেয়ে অ্যামেরিকার সরকার বিভিন্ন আইন পাশ করে ধীরে ধীরে স্বর্ণ উত্তোলনের সব পথই বন্ধ করে দেয়। মার্কিন সরকার তাদের নাগরিকদের জন্য সেই ১৯৩৩ সালেই ডলার দিয়ে স্বর্ণ উত্তোলনের পথ বন্ধ করেছিল। ১৯৭১ সালে প্রেসিডেন্ট নিক্সন ঘোষণা করেন যে এখন থেকে মার্কিন ডলারের মান আর স্বর্ণের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হবে না। এই ঘোষণাটি ‘নিক্সন শক’ হিসাবে পরিচিত। এই ঘোষণার ফলে মার্কিন ডলার কোনো প্রকৃত মূল্যবান বস্তুর ব্যাকআপ ছাড়াই শুধু ‘ফিয়াট মানি’তে পরিণত হয়। এতে করে একটু সময়ের জন্য ডলার মান কমে গেলেও মার্কিনদের সামনে আরেকটা সুযোগ এসে হাজির হয়।<br /><br />১৯৭৩ সালে সৌদি আরবের সাথে আমেরিকা একটি গোপন চুক্তি করে। সেই চুক্তিতে ঠিক হয় সৌদি আরব এখন থেকে কেবল মাত্র অ্যামেরিকান ডলারেই তাদের তেল বিক্রি করবে এবং এর বিনিময়ে অ্যামেরিকা সৌদিকে সামরিক নিরাপত্তা দিবে। ১৯৭৫ সালে অন্যান্য তেল উৎপাদনকারী রাষ্টগুলোও একই নীতি অনুসরণ করে। অর্থাৎ তেলে বিক্রি হবে কেবল মার্কিন ডলারে। জন্ম হয় পেট্রোডলারের। এবং এভাবেই ধীরে ধীরে সমগ্র বিশ্বেই আন্তর্জাতিক মুদ্রা হিসেবে ডলারের আধিপত্য সৃষ্টি টিকে আছে। ইউরো আসার আগ পর্যন্ত ডলারের একক আধিপত্য ছিল। এখন কিছুটা কমে গেলেও সেই আধিপত্য এখনও টিকে আছে। বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর রিজার্ভের ষাট শতাংশের বেশি টাকা এই ডলারেই মজুদ রয়েছে।<br /><br />একদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা হিসেবে মার্কিন ডলার সারা বিশ্বেই গৃহীত হচ্ছে। আর অন্যদিকে ফেডারেল রিজার্ভ চাইলেই এখন ইচ্ছেমত ডলার ছাপতে পারছে। এই কারণেই মূলত অ্যামেরিকার অর্থনীতি এখনও বহাল তবিয়তে আছে। শুধু একবার ভেবে দেখুন- আপনার কাছে এমন একটা টাকা ছাপানোর মেশিন আছে যে মেশিন দিয়ে যত খুশি টাকা ছাপতে পারবেন, আবার সেই টাকা বিশ্বের সব দেশের মানুষই গ্রহণ করবে! ১৯৭১ সালের পর থেকে অ্যামেরিকা মূলত এই সুবিধাটাই পেয়ে আসছে।<br /><br />আর এরপর থেকেই মূলত অ্যামেরিকার সরকার চাইলেই নিজের ইচ্ছেমত ডলার ছাপতে পারে। কিন্তু ডলার ছাপলেই তো আর সব সমস্যা সমাধান হয় না। কেইনসিয়ান নীতির কারণে দেশটিতে নিয়মিত মন্দা এবং মুদ্রাস্ফীতি চলতেই থাকে। আর যখনই মন্দার সম্ভাবনা দেখা দেয় তখনই দেশটি রাষ্ট্রীয় ঋণ তৈরি করে ডলার ছাপিয়ে সেই সমস্যার সমাধান করে। এভাবে ডলার ছাপতে ছাপতে অ্যামেরিকার রাষ্ট্রীয় ঋণ এখন ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার। আর এই ঋণ দিন দিন বেড়েই চলেছে।<br /><br />আসলে সেই গ্রেট ডিপ্রেশনের সময় থেকেই অ্যামেরিকার অর্থনীতি মূলগতভাবে অবনতির দিকেই চলেছে। অথচ এই অ্যামেরিকা ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে এক অনন্য দেশ।<br /><br />অ্যামেরিকার ইতিহাসে ১৫০ বছর ধরে জিনিসপত্রের দাম ক্রমাগতভাবে কমেছে। সময়টা ছিল ১৭ শতকের শেষ দশক থেকে ১৯১৩ সাল পর্যন্ত। এই অ্যামেরিকার অগ্রগতি শুধু যে আর্থিক দিকে হয়েছিল তা কিন্তু নয়। এখানে ছিল সীমিত ক্ষমতার সরকার। অর্থাৎ, সরকারের হাতে কেন্দ্রীয় ক্ষমতা ছিল, কিন্তু সেটা নাগরিকদের সুবিধার জন্য, দেশের সুবিধার জন্য। এর বাইরে গেলেই সেটার লাগাম টেনে ধরা হতো। এখানে জন্ম নিয়েছিল মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতা। দাসত্ব বাতিল হয়েছিল। একসময় যারা আয়কর দিত তারাই শুধু ভোট দিতে পারত। একটা পর্যায়ে এসে সবার জন্য ভোটাধিকার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। অর্থাৎ, অ্যামেরিকার অগ্রগতি হয়েছিল ধীরে ধীরে একদম সঠিক পথে। কিন্তু কেইনসিয়ান অর্থনীতির নীতি প্রয়োগের পর থেকে দেশটির অর্থনীতি যেমন খারাপ হতে থাকে তেমনই জনগণের স্বার্থও লঙ্ঘিত হতে থাকে। ধীরে ধীরে রাষ্ট্র বা কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়। বিলুপ্ত হতে থাকে সীমিত ক্ষমতার সরকার। এতে সরকার চাইলে অর্থবাজারের উপর ইচ্ছামত প্রভাব খাটাতে পারে।<br /><br />এখন অ্যামেরিকা যেভাবে তার রাষ্ট্রীয় ঋণ বাড়িয়ে চলেছে সেটার ভবিষ্যৎ আসলে কী? কোনো কারণে যদি অ্যামেরিকা তার রিজার্ভ স্ট্যাটাস হারিয়ে ফেলে তাহলে অ্যামেরিকার অর্থনীতি কোন দিকে মোড় নেবে? অনেকেই হয়ত ভাবতে পারেন এটা একটা অবাস্তব চিন্তা। আধুনিক পৃথিবী নিয়ন্ত্রণ করে পশ্চিমা বিশ্ব, আর পশ্চিমা বিশ্বের মুরুব্বি হচ্ছে অ্যামেরিকা। তাই অ্যামেরিকান ডলার তার রিজার্ভ স্ট্যাটাস হারাবে না। কিন্তু ইতিহাস থেকে আমরা দেখতে পাই যে কোনো বিশেষ ব্যবস্থাই চিরকাল স্থায়ী হয় না।<br /><br />ইতোমধ্যে চীন এবং রাশিয়ার নেতৃত্বে ব্রিকস নামে একটি নতুন আন্তঃদেশীয় সংগঠন তৈরি হয়েছে। এই সংগঠন বর্তমান বিশ্বের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে চায়। এজন্য সংগঠনটি সেই পুরনো দিনের মত স্বর্ণ ভিত্তিক মুদ্রাব্যবস্থা চালু করতে চায়। ব্রিকসের পরিকল্পনা যদি ধীরে ধীরেও বাস্তবায়ন হয় তবুও অ্যামেরিকার অর্থনীতির জন্য তা সমূহ বিপদ ডেকে আনবে। আর কোনোদিন যদি ডলার তার রিজার্ভ স্ট্যাটাস পুরোপুরি হারিয়ে ফেলে, তাহলে অ্যামেরিকার অর্থনীতি তাসের ঘরের মত নিমেষেই ভেঙ্গে যাবে।<br /><br />পিটার শিফ নামে এক বিখ্যাত অ্যামেরিকান স্টক ব্রোকার এবং অর্থনীতিবিদ অ্যামেরিকার অর্থনীতির এই নাজুক পরিস্থিতি নিয়ে একটি গল্প তৈরি করেছেন। এটাকে আসলে গল্প বললে ভুল হবে। বাস্তব পৃথিবীর ঘটনা লেখা হয়েছে গল্পের ছদ্মবেশে। যেমনটা করা হয়েছিল জর্জ অরওয়েলের “এনিম্যাল ফার্ম” বইতে। ঠিক একই কাজ করেছিলেন জোনাথন সুইফট তাঁর “গালিভার ট্রাভেলস” বইতে। তেমনই পিটার শিফও অ্যামেরিকা তথা সারা বিশ্বের অর্থনীতির ইতিহাসকে নিয়ে লিখে ফেলেছেন একটা রূপক গল্প, আস্ত একটা বই।<br /><br />ইতিহাস কি সেটাতো আমরা চাইলেই অর্থনীতির ইতিহাস থেকে পড়ে নিতে পারি। কিন্তু পিটার শিফ কল্পনার আশ্রয় নিয়ে এখানে আমাদের ভবিষ্যৎটাও দেখিয়ে দিয়েছেন। সেখানে দেখা যায় অ্যামেরিকা তার রিজার্ভ স্ট্যাটাস হারানোর পর চীন এসে অ্যামেরিকার সবকিছু কিনে নেয় এবং দেশটিকে আক্ষরিক অর্থেই ধ্বংস করে ফেলে। এমনটা নাও হতে পারে। তবে এই গল্পটি আসলে আমাদের অর্থনীতির একদম বেসিক নীতিগুলো শেখায়। আজকের দিনের পৃথিবীতে যে ধরনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চলছে- সেটা আসলে কীভাবে পরিচালিত হয় এই বইটিতে তা গল্পের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। একদিক থেকে দেখতে গেলে এই বইটা হলো অ্যামেরিকার অর্থনীতি নিয়ে। আবার অন্যদিক থেকে দেখতে গেলে এই বইটা হলো একটি দেশের অর্থনীতি কীভাবে পরিচালিত হয় তার মূল কাঠামোটি নিয়ে।<br /><br />আধুনিক অর্থনীতি খুবই জটিল। অর্থনীতির ছাত্র না হয়ে এই জটিল বিষয়গুলো বুঝা এক অর্থে প্রায় অসম্ভব। সেই অসম্ভব কাজটাই করেছেন এই বইয়ের লেখক।<br /><br />নির্জন একটা দ্বীপে তিনজন মানুষ বাস করত। ছোট্ট এই দ্বীপে তেমন কোন খাদ্য ছিল না, পাওয়া যেত শুধু এক ধরনের মাছ। সারাদিন পরিশ্রম করে ওরা একটি করে মাছ ধরতে পারত, আর সেটা দিয়ে তাদের শুধুমাত্র একদিনের খাবারের চাহিদা মিটত। অর্থাৎ ওরা একরকম দিন এনে দিন খেত। ফলে এই দ্বীপের কোন ইকোনোমি ছিল না। কিন্তু একদিন ওদের একজনের মাথায় একটা দারুণ আইডিয়া আসে। সে এমন একটা মাছ ধরার যন্ত্র তৈরি করে যাতে করে অনেকগুলো মাছ ধরা যায়। সে বাড়তি মাছ ধরত এবং লাভের বিনিময়ে বাকি দুইজনকে মাছ ধার দিত। ফলে দ্বীপে প্রথমবারের মত পুঁজি তৈরি হলো, ক্রেডিট বা ঋণ তৈরি হলো।<br /><br />এই বইয়ের লেখকরা একটা ইনক্রেডিবল কাজ করেছেন। এই সরল ঘটনাকে গল্পের মাধ্যমে ধীরে ধীরে তারা একদম জটিল পর্যায়ে নিয়ে গেছেন! একটা পর্যায়ে গিয়ে দ্বীপে একটা রিপাবলিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। অন্য দ্বীপ থেকে অভিবাসী আসে। দ্বীপের সরকার টাকা প্রচলন করে। সেখানে বিভিন্ন ঘটনার কারণে ইনফ্লেশন হয়। সেগুলো কীভাবে সামাল দেওয়া যাবে সেটাও গল্পের মধ্যে দেখানো হয়। অর্থাৎ একটা দেশের অর্থনীতি কীভাবে পরিচালিত হয় সেটাকে এই বইয়ের লেখকরা ঐ দ্বীপের গল্পের মাধ্যমেই তুলে ধরেছেন। এক কথায় অবিশ্বাস্য। তবে লেখক শুধু গল্পেই থেমে থাকেননি। বাস্তবে অর্থনীতি কেমন হয় সেটাকেও ব্যাখ্যা করেছেন, পাশাপাশি উদাহরণ দিয়েও দেখিয়েছেন।<br /><br />যারা অর্থনীতির ছাত্র নন কিন্তু একটা দেশের অর্থনীতি কীভাবে চলে সেই বিষয়টা ভালোমতো বুঝতে চান তাদের জন্য এই বই একটা অসাধারণ রিসোর্স। বইটি সানডে টাইমসে ১ নং বেস্ট সেলার হয়। বইটির লেখক পিটার শিফ বিখ্যাত স্টক ব্রোকার এবং অর্থনীতিবিদ। তিনি ২০০৮ সালের ডিপ্রেশনের আগেই সেটার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বলেও বেশ বিখ্যাত। বইটি পুঁথি থেকে বাংলা অনুবাদ হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। ইকোনোমিকস নিয়ে আগ্রহী পাঠক বইটি পড়ে দেখতে পারেন।<br /><br /><br />**********<br /><b>হাউ অ্যান ইকোনোমি গ্রোস অ্যান্ড হোয়াই ইট ক্র্যাশেস</b><br />রচনা: <b>পিটার শিফ ও অ্যান্ড্রু শিফ</b><br />ভাষান্তর: <b>অপু তানভীর</b><br /><br />প্রকাশনী: পুঁথি, ঢাকা।<br />প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারী ২০২৪<br />পৃষ্ঠা: ২৪০<br />মূল্য: ৪৭০ টাকা<br />ISBN: 978-984-89-9316-0<br /></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-45487374773889834322024-03-06T19:10:00.007+06:002024-03-06T19:17:34.977+06:00বিশ্বজিৎ চৌধুরীর 'অভিযুক্ত' - বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সুবিধাবাদীতা ও হীনম্মন্যতার মুখোশ উন্মোচন | আলমগীর মোহাম্মদ<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjLQPCAKXSJJBDEvJ1NE5f_NtVGPHffmQc_W5I3xrelHudl3agvndmiV-8C9ZkcyRjm7lco8EQLSQQ8eHCksfOJHLN60_7gfa281aomUBGFe79NDSuqR7GeW__7VFm1GJ6VE52wz47qbXiSARPNLOGwEkIhQgme2fYtFN02FNExcuE9JdbpTezqsdvvTHU/s500/avijukto-biswajeet-chaudhuri.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="বিশ্বজিৎ চৌধুরীর অভিযুক্ত উপন্যাসের প্রচ্ছদচিত্র" border="0" data-original-height="500" data-original-width="380" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjLQPCAKXSJJBDEvJ1NE5f_NtVGPHffmQc_W5I3xrelHudl3agvndmiV-8C9ZkcyRjm7lco8EQLSQQ8eHCksfOJHLN60_7gfa281aomUBGFe79NDSuqR7GeW__7VFm1GJ6VE52wz47qbXiSARPNLOGwEkIhQgme2fYtFN02FNExcuE9JdbpTezqsdvvTHU/s16000/avijukto-biswajeet-chaudhuri.jpg" title="বিশ্বজিৎ চৌধুরীর অভিযুক্ত উপন্যাসের প্রচ্ছদ" /></a></div><br /><br />বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে একটা ইতিবাচক উচ্চ ধারণা আছে। ছিলো। তবে ভবিষ্যতে সেই ধারণা কেমন থাকবে এ বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহের কারণ আছে। সন্দেহের উল্লেখযোগ্য কারণ হলো সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ, পদ-পদবী, পদোন্নতির জন্য শিক্ষকদের রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি, শিক্ষকদের মধ্যে দলীয়করণ, একই মতাদর্শের শিক্ষকদের মধ্যে নানা উপ-গ্রুপে বিভাজন, ভাইস-চ্যান্সেলরের পদত্যাগের জন্য শিক্ষক সমিতির আন্দোলন, সাংবাদিক সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত দুর্নীতি নিয়ে হওয়া সংবাদ প্রতিবেদনের প্রদর্শনী আয়োজন, শিক্ষক নিয়োগে নগ্ন দলীয়করণ এবং শিক্ষকদের হাতে শিক্ষার্থীদের যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়া ইত্যাদি বিষয়ের কথা আমরা সরাসরি বলতে পারি। বিশ্বজিৎ চৌধুরীর অভিযুক্ত এমন একটি উপন্যাস যার থিম খুঁজতে গেলে পাঠক উপরেল্লিখিত সবগুলো খারাপ বিষয়ের উল্লেখ পাবেন। <br /><br />একজন শিক্ষককে জ্যেতির্বিদের সাথে তুলনা করেছেন খলিল জিবরান। জার্মান প্রবাদে আছে, একজন শিক্ষক দুটি বইয়ের সমান। শিক্ষকতাকে এখনো সঙ্গত কারণে মানুষ সবচেয়ে সম্মানের চোখে দেখে। যদিও শিক্ষকরা ‘সম্মানজনক দারিদ্র্য’র শিকার তবুও তাদের আলোয় আলোকিত হচ্ছে সমাজ। মানুষ গড়ার এই কারিগরদের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ জীবনে নায়কের মতো লালন করে। কথায় আছে, যিনি বিদ্যা দেন, তিনি স্তন্যও দেন। সেই বিদ্যাদাতা শিক্ষকের স্নেহ, মমতা, উতসাহ, অনুপ্রেরণা লাভের প্রত্যাশা প্রত্যেক শিক্ষার্থীরই থাকে। একজন প্রকৃত শিক্ষকের সান্নিধ্য একজন শিক্ষার্থীর জীবনে অভূতপূর্ব পরিবর্তন আনে। তবে, নিয়তির নিষ্ঠুরতম দিক হলো বাতির নিচেও অন্ধকার থাকে। একজন খুনীর খুনের ব্যাখ্যা হতে পারে নানা রকম, কিন্তু একজন নৈতিক স্খলনের দায়ে দায়ী শিক্ষকের কোনো ব্যাখ্যা বা যুক্তি থাকতে পারে না। ’চাঁদেরও কলংক আছে’ কথাটা আমরা মুখে আওড়াই ঠিক; কিন্তু মানি না, বা আমাদের পক্ষে মানতে কষ্ট হয়। একজন শিক্ষক সমাজের কাছে চাঁদের মতো। চাঁদের আলো উপভোগ করে আমরা পুলকিত হয়। আর একজনের শিক্ষকের জ্ঞানের আলোয় আমরা আলোকিত হই। তাই তাঁদের চরিত্রে ‘কলংক’ থাকতে নেই। <br /><br /> ভারতীয় বংশোদ্ভূত আইরিশ কবি নিকিতা গিল তাঁর “<b>লেখকরা ভয়ংকর মানুষ</b>” কবিতায় বলেছেন, <p></p><p></p><blockquote>কখনো কোনো লেখককে নিশ্চিতভাবে /ভালো মনে করবেন না। /তারা স্নাইপার /শব্দ-সস্ত্রে সজ্জিত। /তাঁরা জানেন/ কিভাবে লক্ষ্য করতে হয় / বাক্যের মাধ্যমে, / কিভাবে প্রোজ্জ্বলিত করতে হয় /অনুচ্ছেদের মাধ্যমে, /এবং / কিভাবে তাঁদের দক্ষতাকে অক্ষয় রূপ দিতে হয়/ কবিতায়।</blockquote><p></p><p> </p><p><b>বিশ্বজিৎ চৌধুরী</b> তেমন একজন লেখক। নাগরিক জীবনের অলিগলি হাতড়ে কলাম লেখেন মানুষের কথা তুলে ধরে। খুন ও আনন্দ কুসুম নামক একটা উপন্যাস লেখেন তিনি সম্প্রতি। সেটা পড়ার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি তিনি নগরের মানুষের দুর্দশা নিয়ে ভাবেন। নাগরিক জীবনে ঘটে যাওয়া নানাবিধ দুঃখজনক ঘটনা, মানুষের মনের উপর লোভের প্রভাব, রিপুর তাড়নায় মানুষ কী জঘন্য আচরণ করতে পারে তার বাস্তব চিত্র দেখতে আমরা এই উপন্যাসে। সদ্য প্রকাশিত অভিযুক্ত কে আমরা সেই উপন্যাসের ধারাবাহিকতা বলতে পারি। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের হীনম্মন্যতা, লাম্পট্য, নিজেদের মধ্যে হীন প্রতিযোগীতা, নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করা, প্রয়োজন শেষে ছুঁড়ে ফেলা, যৌন হয়রানি, এবং শিক্ষক রাজনীতির নষ্ট দিক সাবলীলভাবে এই উপন্যাসে চিত্রিত করেছেন লেখক।<br /><br /><b>'অভিযুক্ত</b>' লেখা হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে। টাকা দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ, দলীয় লেজুড়বৃত্তি, ভিসি হওয়ার জন্য শিক্ষকদের লাগামছাড়া দৌড়, নিজেদের স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মারামারি লাগানো, আন্দোলন গড়ে তোলা ইত্যাদি কাজে শিক্ষকরা প্রত্যক্ষভাবে ইন্দন যোগান। সে কথা লেখক তুলে ধরেছেন এই উপন্যাসে৷ সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষকতা করা লোকজনের আসল রূপ উন্মোচিত করার কাজটাও যথাযথভাবে করেছেন লেখক। আহমদ ছফার গাভী বিত্তান্ত, মুহম্মদ জাফর ইকবালের মহব্বত আলীর একদিন, গাজী সালেহ উদ্দীনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার আমি‘র সাথে বিশ্বজিৎ চৌধুরীর <b>'অভিযুক্ত'</b> নবতর সংযোজন। <br /><br />বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা একজন তরুণ শিক্ষকের ভারতে উচ্চ শিক্ষার্থে যাত্রা, সেখানে বছর তিনেক অবস্থান, নিগার নামের এক তরুণীর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়ানো, শারিরীক উদ্দামতার চূড়ায় পৌঁছে যাওয়ার পরিণতি হিসেবে নিগারের পেটে বাচ্চা আসা, দায়িত্ব নেওয়ার অনীহা থেকে এবোরশন করিয়ে নেওয়া, সেই প্রেমের সলিল সমাধি ঘটার কথা আমরা জানতে পাই উপন্যাসের শুরুর দিকে। শাহজাহান নামের এই উচ্চাকাঙ্খী অথচ লোভী শিক্ষকের পরবর্তী জীবনের ঘটনা জানতে পাই আমরা তাঁরই নিজস্ব ন্যারেটিভে। বাংলা বিভাগের খ্যাতিমান এই অধ্যাপক ভিসি হওয়ার দৌড়ে যখন অন্যদেরকে ফেলে উসাইন বোল্টের গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তখনই বাধ সাধে তারই একজন প্রিয় ছাত্রী, বিভাগের টপার দেবযানী। দেবযানী প্রফেসর সাহেবের প্রিয় ছাত্রী। সেই সুবাদে তাঁর বাসায় আসা যাওয়ার সুযোগ পান সেই শিক্ষার্থী। ভদ্রলোকের নিঃসন্তান স্ত্রীর সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠতা একসময় গড়ায় বিছানা পর্যন্ত। শুধু তাই নয় তাঁকে ‘প্রথম শ্রেণীতে প্রথম’ করার জন্য প্রফেসর সাহেব তাঁরই কোর্সের প্রশ্ন দিয়ে দেন ছাত্রীকে। ঘটনা এতটুকুতে চুকে যেতে পারতো। কারণ সেই শিক্ষার্থী প্রশ্ন পেয়ে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে নিজ গ্রামে চলে যাওয়ার পরের ঘটনাই উপন্যাসের প্লটের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। তিনি অন্তঃসত্তা হলে শিক্ষক দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। দেবযানী তাঁর কাছে সহযোগিতা চান অন্তত এবোরশন করার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে এগিয়ে আসতে। ভদ্রলোক তাতেও অসহযোগিত্তা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ণ প্রতিরোধ সেলে লিখিত অভিযোগ করেন সেই শিক্ষার্থী। <br /><br /> ক্ষমতার লোভ দিনকে রাত বানায়, রাতকে দিন। কার্ল মার্ক্স তাঁর ‘লোভের টান’ তত্ত্বে ঠিক এমন কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছেন। ভিসি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকা জনাব শাহজাহান আপাত দৃষ্টিতে খুব সংসারী ও স্ত্রী অনুগত হলেও তাঁর অন্তরে লুকিয়ে থাকা পশুকে তিনি বাগে আনতে পারেননি। যা তাঁর স্ত্রীর কাছে অবিশ্বাস্য ঠেকেছে। দেবযানীর সাথে সাক্ষাতে তিনি সবকিছু পরিষ্কার জানতে পেরে ভদ্রলোকের কাছে কৈফিয়ত চান। অনুগত স্বামীর প্রতারণা মানসের সাথে আগে পরিচয় না থাকায় ভদ্রমহিলার জন্য বিষয়টা একটা বড়ো মানসিক যাতনা হয়ে দাড়ায়। তিনি আত্মহত্যা করেন। এখানেও আমরা ক্ষমতাসীন শিক্ষকদের নোংরা মানসিকতার পরিচয় পাই । আত্মহত্যা করা স্ত্রীকে মানসিক ভারসাম্যহীন বা মানসিক সমস্যার কারণে আত্মহত্যা করেছেন বলে চালিয়ে দেওয়ার সমস্ত আয়োজনে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন অধ্যাপক সাহেব ও তাঁর সুহৃদ সহকর্মী জনাব রেজিস্ট্রার সাহেব। <br /><br />শিক্ষক কতৃক শিক্ষার্থী নিপীড়িত হওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলে অভিযোগ জমা হওয়ার পর আমরা শিক্ষকদের মধ্যে বিভাজন, নিজেদের স্বার্থে একে অপরের বিরুদ্ধে আপাত নৈতিক অবস্থান নেওয়া, নিজ দলের শিক্ষককে বাঁচাতে জোট বেঁধে মিটিং করা, ক্ষমতাসীন ছাত্র নেতাদের ব্যবহার করে ন্যায় বিচারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের শারিরীক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করার মতো কলুষ দিকের সাথে আমরা পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এই ধরণের হীন প্রতিযোগিতার কথা শুনে অভিযুক্ত অধ্যাপক সাহেবের অল্প শিক্ষিত অথচ নীতিবান বড় ভাইয়ের করা প্রশ্ন আমাদের বিবেককে প্রশ্ন করতে বাধ্য করে মানুষ আসলে এত লোভী কেন? <br /><br /></p><blockquote>কী আশ্চর্য ইউনিভার্সিটি টিচারদের মধ্যেই যদি এসব লাগালাগি থাকে, তাহলে শিক্ষিত- অশিক্ষিতের তফাতটা আর কী থাকল?</blockquote><br /><br /> তখন অধ্যাপক সাহেব বড় ভাইকে জবাব দেন, <br /><br /><blockquote>স্বার্থের জায়গায় শিক্ষিত-অশিক্ষিত সব সমান। কোনো তফাত নেই। </blockquote><br /><br />স্বার্থের প্রয়োজনে কতিপয় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করতে দ্বিধা করেন না। বাইবেল সূত্রে আমরা সাতটি নারকীয় পাপের কথা আমরা জানতে পাই। ভারতের বিখ্যাত কবি বিজয় কান্তে ডুবের “<b>দ্য সেভেন ডেডলি সিন্স</b>” কবিতাটি উল্লেখ করা এখানে প্রাসঙ্গিক মনে করছি। <br /><br /><blockquote>“ নারকীয় সাত পাপ,/ এগুলো কি আবার, /জানো,/ সাতটি/ সংখ্যায় সাত?/ লোভ ব্যঙের,/ হিংসা সাপের,/ রাগ সিংহের,/ শ্লথগতি শামুকের,/ পেটুকপনা শূকরের, / লাম্পট্য ছাগলের,/ অহংকার ময়ূরের।/ এগুলোই সাত পাপ,/ নরকের সাত বোন, / বিশ্বজনীন বোন, রূপক?/ কিন্তু এখনো ব্যাপারটা পরিস্কার নয়,/ আরো ব্যাখ্যা প্রয়োজন।“<br />( অনুঃ আলমগীর মোহাম্মদ)</blockquote><br /><br />অভিযুক্ত উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্রের মধ্যে আমরা উপরোক্ত বেশ কয়েকটি পাপের অস্তিত্ব খুঁজে পাই। নীতিহীন শিক্ষক শাহজাহান ক্ষমসাঈন দলের দুইজন ছাত্র প্রতিনিধিকে নিজেদের স্বার্থে সময়ে অসময়ে ব্যবহার করেছেন। বিশেষ করে তিনি যখন শিক্ষক সমিতির নেতা ছিলেন। এই বর্ণনা আমরা পাই তারই নিজস্ব বয়ানে। উপন্যাসের শেষের দিকে একজন নেত্রীর বক্তব্য আমাদের সামনে লোভী, লম্পট, আদর্শহীন শিক্ষক শাহজাহানকে আমাদের সামনে উন্মুক্ত করে; <br /><br /><blockquote> আপনারা নিজেদের স্বার্থে ছাত্রছাত্রীদের নানাভাবে ইউজ করেন। আর আমরা হইলাম ভেড়ার পাল। বুঝে না বুঝে…। ইউ আর ডিজার্ভিংলি একিউজড। আসি স্যার। </blockquote><p><br /><br />অভিযুক্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতিকে প্রতিফলিত করে। এই উপন্যাস যখন পড়ছিলাম তখন পত্রিকা মারফত জানতে পারলাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে তঁর অধীনে গবেষণা করা এক ছাত্রী যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনেছেন। শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচারের দাবিতে আন্দোলন করছেন। বর্তমান যেনো উপন্যাসের পাতায় জীবন্ত হয়ে ফুটে উঠেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক রাজনীতি কতটা ভয়াবহ, শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থে তাঁরা কতটুকু হীন আচরণ করতে পারেন, এবং শিক্ষকদের মধ্যে রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তির কুৎসিত রূপ সম্পর্কে জানতে অভিযুক্ত পড়া জরুরি। <br /><br />* <b>আলমগীর মোহাম্মদ।</b> শিক্ষক ও অনুবাদক। তিনি বাংলাদেশ আর্মি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি, কুমিল্লায় ইংরেজি সাহিত্য পড়ান।</p><p> </p><p>**********<br /><b>অভিযুক্ত<br />বিশ্বজিৎ চৌধুরী</b></p><p><b> </b><br />ধরন: উপন্যাস<br />প্রকাশকাল: ২০২৪<br />প্রকাশক: প্রথমা প্রকাশন<br />পৃষ্ঠাসংখ্যা: ১২৫<br />মূল্য: ৩৪০ টাকা<br />ISBN: 9789849869962</p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-57887264605547461692024-03-05T23:36:00.003+06:002024-03-05T23:36:42.991+06:00 কবিতার ইন্দ্রজাল পিয়াস মজিদের ‘ভুলে যাওয়া স্কার্টের সিঁড়ি’ — অন্তর চন্দ্র<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi9rbMWQZ3MfMaCjWQeDetDlBsTZxhDb5_77XTPZUrj3iyoKCPLc96cuEUEc9AJRvtZAm4HWRWsqcV5r3q4TZf5KzDGwkQl3ulRrMGyaKOV8OwB7JWgGpL7bi5vqeaV1FONaaYnMWXI-aqhdfzfP0Hm7F0TAF61thg6YUzXanfz_6drBE8L28MDkBW6iNs/s500/bhule-jaoa-skirter-siri-pias-majid.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="কবিতার ইন্দ্রজাল পিয়াস মজিদের ‘ভুলে যাওয়া স্কার্টের সিঁড়ি’ — অন্তর চন্দ্র" border="0" data-original-height="500" data-original-width="371" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi9rbMWQZ3MfMaCjWQeDetDlBsTZxhDb5_77XTPZUrj3iyoKCPLc96cuEUEc9AJRvtZAm4HWRWsqcV5r3q4TZf5KzDGwkQl3ulRrMGyaKOV8OwB7JWgGpL7bi5vqeaV1FONaaYnMWXI-aqhdfzfP0Hm7F0TAF61thg6YUzXanfz_6drBE8L28MDkBW6iNs/s16000/bhule-jaoa-skirter-siri-pias-majid.jpg" title="কবিতার ইন্দ্রজাল পিয়াস মজিদের ‘ভুলে যাওয়া স্কার্টের সিঁড়ি’ — অন্তর চন্দ্র" /></a></div><br /><p>কবিতা বিষয়টি আমাদের কাছে অন্যরকম হয়ে গেছে। আমরা যে সময়টায় এসে পৌঁছেছি, সেই সময়টায় কবিতা দুর্বোধ্য হয়ে যাচ্ছে। এমনকি আমার নিজের লেখাও অন্যের কাছে দুর্বোধ্যের তালিকায় যুক্ত হয়েছে। সে দোষ লেখককে দিব না। সুধীন্দ্রনাথ দত্তের ভাষায়, ‘<i>যে-দুরূহতার জন্ম পাঠকের আলস্যে , তার জন্য কবির উপরে দোষারোপ অন্যায়।’</i> কবিতার পাঠক হয়ে ওঠার যোগ্যতা হয়তো এখনো হয়ে ওঠেনি! তাই বলে যে কবিতা নিয়ে চিন্তা করতে পারবো না তা নয়। কবিতা বিষয়টিকে যত সহজ করে দেখা যায় আমার মতে ততই ভালো। আজকাল যে বিষয়টিকে আমরা কঠিন বলে ভাবছি কাল হয়তো সেটিই সহজ বলে গণ্য হবে। <br /><br />কবি <b>পিয়াস মজিদ </b>তাঁর ‘<b>ভুলে যাওয়া স্কার্টের সিঁড়ি’</b> কাব্যগ্রন্থে জীবনের আনুষঙ্গিকতাকে নানাভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন। তিনি এখানে যে বিষয়গুলো উল্লেখ করেছেন প্রত্যেকটি বিষয় পাঠকের জন্য নতুন কিছুর সমাহার। ‘আমি, তুমি, আপনি’ কবিতায় তিনি প্রশ্ন তুললেন নিজের প্রতি...<br /><br /></p><blockquote> বাজারে কি পাওয়া যায় <br /> ন্যায্যমূল্যে আমার নিঃশ্বাস?</blockquote><br /><br />এই দুটি বাক্যের মাধ্যমে তিনি পুরো কবিতাটিকে জীবন্ত করে তুলেছেন। আমাদের চারদিকের মানুষজন হিংস্র হয়ে উঠছে। আজকাল মানুষ শব্দটি নিয়েও অনেক খামখেয়ালি প্রশ্ন থেকে যায়। মানুষের স্বভাব-চরিত্র পশুর চেয়েও অধম হয়ে যাচ্ছে। আমরা কোথায় এসে দাঁড়িয়ে গেছি? আমাদের পদে পদে বিপদ। আমরা এগোতে পারিনা, পিছন থেকে সবাই টানতে থাকে। তাইতো কবি বলেন যে শ্বাস নিতেও তাঁর অসুবিধা হচ্ছে। অমানুষের বিষাক্ত ছোবলে একটা সভ্যতা ধীরে ধীরে গ্রাস করে নিচ্ছে বিশৃঙ্খলা প্রবণ মানুষজন। ভালো মানুষেরা সব সময় অমানুষের কবলে পড়ে জীবনকে যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ত রাখছেন।<br /><br /><blockquote>এভাবেই মানুষ<br />ইতিহাসকে এগিয়ে নিয়ে চলে<br />ঝোপ বুঝে কোপ মারে .....</blockquote><br /><br />এই যা দশা! কোথাও ঠিক মতো চলা যায় না। দিন দিন আধুনিকতার আলোকে উন্নত জীবন প্রয়োজনীয় হয়ে উঠছে অথচ মানুষ হতাশায় ভুগছে। মানুষের মন থেকে অমানুষের ছায়া দূর করার প্রক্রিয়া আমাদের মনে তৈরি হয়নি। আমাদেরকে সেই আবছা ছায়াটি থেকে দূরে সরে আসতে হবে। কবি পিয়াস মজিদ মনে হয় আক্ষেপ করেই বলেছেন...<br /><br /><blockquote>মানুষ, তুমি কেন আসলা<br />এই সাধের দুনিয়ায়—<br />খুশিতে না ঠেলায়?</blockquote><br /><br />এই কথা বললে আর পরেরবার কিছু বলার থাকে না। মানুষ সম্পর্কে যে ধারণাটি ইতিমধ্যেই উপস্থাপন করা হলো দ্বিতীয়বার বলে আপনাদের বিরক্ত করতে চাই না। কবি তবুও মনে মনে ভাবেন যে সবকিছু যদি নষ্ট ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যায়, তবু মাটির ভাষা মাটির গান উকিল মুন্সী, লালন শাহ্, হাসন রাজা এদের জড়িয়ে সারা জীবন কাটাতে চান। বাংলা গানের জগতে বাউল এর মত চলে যেতে চান নিজের আত্মসন্ধানে। নিজেকে তিনি কাছে থেকে দেখতে চান। বাড়ির পাশে সেই আরশিনগরের আয়োজনে মেতে থাকতে চান। এখানেই কবি সত্তার পূর্ণ অভিপ্রায়। কবি সুখ চান না দুঃখ চান, মৃত্যু চান না অমৃত চান, সফলতা চান না সার্থকতা চান। কবি মনের দোলায় দোলায়িত হতে থাকে শৈল্পিক ব্যঞ্জনার অনুভূতি। <br /><br /><blockquote>রাস্তাকে হাতে রাখতে হলে<br />পায়ে পায়ে খোঁজ নিতে হয়।</blockquote><br /><br />জীবনের অস্থিতে অস্থিতে দ্রোহ। সেখান থেকে উদগীরনের পথ খুঁজে ফিরে কবির সংসার। ‘ভুলে যাওয়া স্কার্টের সিঁড়ি’ কাব্যগ্রন্থের মধ্যে যে কবিতাগুলো গ্রন্থিত হয়েছে তা পাঠক হৃদয়ে ভিন্নমাত্রার অনুভূতি যোগাতে সক্ষম। পাঠক কবিতায় রসাস্বাদনে যে সময়টুকু ব্যয় করবেন তা পাঠক হৃদয়ে প্রথম প্রথম বোঝা বলে মনে হবে এবং পরবর্তীতে যখন বারবার পড়ার চেষ্টায় থাকবেন ঠিক তখন পাঠকের মনে ভিন্নমাত্রার ব্যঞ্জনা শুরু হয়ে যাবে। মনে হবে এখানেই যেন শেষ নয়। কবি মানুষের চারদিকটা যেভাবে উপস্থাপন করলেন, তাতে সুন্দরের বিচ্ছুরণ যাথাসাধ্য প্রকাশ পেয়েছে। <br /><br /><blockquote>ভুলে যাওয়া স্কার্টের সিঁড়ি<br />মনে আসা হু হু বেয়ে<br />বিস্মৃতিও এতটা সুন্দর<br />পার্পল-প্রহেলি;</blockquote><br /><br />কবি তাঁর গ্রন্থের নামকরনের ব্যাখ্যাটা যেভাবে তিনি দিলেন সেটা অনেকটা কঠিন আবার অনেকটা সহজ। খুব ছোট্ট একটি কবিতায় অসম্ভব সুন্দর একটা দৃশ্য-কল্পের মাধ্যমে কবিসত্তাকে তুলে এনেছেন। এখানে তিনি হতাশার কথা তুলে ধরলেন। নিজের থেকে তিনি কেন ছিটকে পড়লেন এও প্রশ্ন থেকে যায়? কবিরা কি সবসময় ছিটকে পড়বে? শব্দের দোলায় ধাবমান কালচক্রে সাম্প্রতিক শব থেকে কি আমাদের বেরিয়ে আসার পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে? একজন কবি কতটা হতাশায় ভুগলে নিজেকে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। কেন তাঁর কাছে সবকিছু মিথ্যা মনে হয়! আসলে কবি কি চাচ্ছেন তা পরিষ্কার নয়। সব সময় যে তিনি দুঃখের বোঝা বয়ে বেড়াবেন এমনটা নয়! যতদূর সম্ভব, ‘কবি’ কবিতায় তিনি নিজেকে একটা স্তম্ভে দাঁড় করে রেখে বিচার করতে চাইছেন। <br /><br />‘হাসপাতাল থেকে’ কবিতায় তিনি যে অনুভূতি ব্যক্ত করলেন তা সাধারণত একজন ভীষণ অসুস্থ রোগীর হাসপাতালে ঢুকে আহাজারি করা পরে প্রেসক্রিপশন, সিরিয়াল, ইনভেস্টিগেশন, ডেলিভারি ইত্যাদি শেষে সুস্থ সবল জীবন নিয়ে আবার নতুন করে শুরু করাকে দেখিয়েছেন। এই কবিতার কেন্দ্রবিন্দু হাসপাতালকে তিনি ‘হাঁস’ শব্দটির চন্দ্রবিন্দু না থাকা নিয়ে মাটির উপরে দাঁড়িয়ে থাকা পাতাল বলে অবিহিত করলেন। কারণ সেখানে মানুষের আহাজারি, হাহাকার, কান্না সব সময় লেগে থাকে, ঠিক তেমনি সুচিকিৎসার ফলে জীবন ফিরে পাওয়া যায়। এবং পরবর্তীতে সেই মানুষটি হাঁসের মতোন তই তই করে ছুটে বেড়ান এদিক-ওদিক। এই কবিতায় শুধু হাসপাতাল না, কবিতার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে ফুটে উঠেছে পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অসম্ভব পরিস্থিতি। আসলে, পুরো কবিতাটা জীবন দর্শন নিয়ে লেখা। যদিও তিনি হাসপাতালের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন কিন্তু আদতেই এটা হাসপাতাল নিয়ে নয়! পৃথিবীতে আমরা সাধারণত যেভাবে যাপন করছি তাঁর একটা লৌকিক চিত্র।<br /><br />‘ভুলে যাওয়া স্কার্টের সিঁড়ি’ এই কাব্যগ্রন্থটিতে বর্তমান সময়ের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। আমাদের চলাফেরা থেকে শুরু করে যাপন অবধি প্রত্যেকটি জিনিস পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তাঁর কবিতায় ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। সমাজে বর্তমান সময়ে যা হচ্ছে, তাঁরও একটা রূপায়ণ দেখতে পাই পিয়াস মজিদের কবিতায়। কবিতা পড়ার আগ্রহকে পাঠকের হৃদয়গ্রাহী করতে এরকম সব কবিতা অনায়াসেই পাঠকের মনোজগতে তোলপাড় তোলে। যদিও বর্তমান সময়ের কবিতা পাঠে পাঠকের মনে একটা অস্বস্তিকর বোধ কাজ করে। কিন্তু ‘ভুলে যাওয়া স্কার্টের সিঁড়ি’ একদম সেই ধারণাটা পাল্টে দিয়েছে। যদিও এখানকার কবিতাগুলো খুব গভীরতম ভাবনার সাথে জড়িত। তবুও কবিতাগুলো একজন সাধারণ এবং সচেতন পাঠকের চিন্তাধারাকে সুদৃঢ় করে তুলবে।<br /><br />আমরা বর্তমান সময়ে কবিতা নিয়ে যে বাক্যগুলো সদা-সর্বদা শুনতে পাই, তাতে আমাদের সাধারণদের ভিতরে একটা অস্বস্তিকর বোধ জন্মে। এটা কথা ঠিক যে কবিতা সব সময় এক থাকবে না, প্রত্যেকটি বস্তুরই পরিবর্তন অনিবার্য। এই সময়কার কবিতা নিয়ে আর বেশি কিছু বলতে চাই না। <br /><br />দেখা যাচ্ছে, আমরা কাউকে ঠিকঠাক মূল্যায়ন করতে পারি না। এবং কেউ যদি কাউকে মূল্যায়নও করে তবে সেই ব্যক্তিকে পেছনে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টায় থাকি। এই রোগটি আমাদের মাঝে যতদিন থাকবে, আমরা ততদিন এগোতে পারবো না। ‘ডেড পয়েটস সোসাইটি’ কবিতায় কবি দুঃখ নিয়ে বললেন...<br /><br /><blockquote>পৃথিবীর ০১ কবি<br />আর ০১ কবিকে<br />০২ পয়সার দামও দেয় না।</blockquote><br /><br />এই একই কথা আমরা ১৫ শতকের একজন হিন্দি কবি তুলসীদাসের কবিতায় পাই। তিনি সেই সময় বলেছেন, <br /><br /><blockquote>“স্বরচিত সরস-নিরস কবিতা সকলেরই ভালো বলেই মনে হয়। কিন্তু অপরের লেখা কবিতা শ্রবণ করে আনন্দ অনুভূতি লাভ করেন এমন সজন ব্যক্তি তো জগতে বিরল।”</blockquote><br /><br />কিন্তু তাই বলে যে, কবিরা থেমে থাকবেন তাও নয়! নিঃস্বার্থভাবে কবিতার সাধনা করে একটা জীবন কাটিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টায় থাকেন একজন কবি। কবিদের কখনোই থেমে থাকা শোভা পায় না। কবিতা তো সেই জীবন বিন্দুরই একাংশ।<br /><br /><blockquote>পৃথিবীর কবিরা গোপনে<br />এপিটাফের মতো <br />০১টা-০২টা কবিতা লিখে জমায়<br />জঘন্য জীবন শেষে<br />যেন মৃত্যুর পর তার কবরটা<br />একটু আলাদা দেখায়।</blockquote><br /><br />কবি কিছুই চান না, কারও ভালোবাসারও অপেক্ষায় থাকেন না। শুধু কবিতার জন্ম দিতে দিতে কয়েকটা প্রজন্ম ভোগ করেন। এখানেই কবির সার্থকতা। সব ব্যর্থতাকে সময়ের কাছে এনে প্রশ্ন করে বসেন এবং নিজেই সেই প্রশ্নের উত্তর রূপে আবির্ভূত হন। কাঁচা কাঁচা ব্যর্থতা নিয়েই পরিপক্ক যাপনের সুখ খোঁজেন। <p></p><p><br />‘ভুলে যাওয়া স্কার্টের সিঁড়ি’ বইটি পড়ার সময় প্রথমে আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলাম। এই বইটায় কয়েকটি কবিতা শুধুমাত্র দুই লাইনের। প্রত্যেকটি লাইনে এতটাই গভীর তাৎপর্য লুকিয়ে আছে যা পাঠকের মনোজগতে ছাপ রেখে যেতে সক্ষম। স্বল্প কথায় বিশ্লেষণ করা যদিও কঠিন হয়ে পড়ে তবু একজন কবির কাছে এটি জটিল ব্যাপার নয়! তাইতো পিয়াস মজিদ পাঠকের মনে জায়গা করে নিতে পেরেছেন। তাঁর কবিতায় একদিকে যেমন প্রেমঘটিত ব্যাপারগুলো এসেছে ঠিক তেমনি জীবন যাপনের একটা স্ট্রাকচার দেখতে পাচ্ছি। সবমিলিয়ে পুরো বইটা ভিন্নমাত্রার ব্যঞ্জনা তৈরি করতে সক্ষম। <br /><br /><br />**********<br /><b>ভুলে যাওয়া স্কার্টের সিঁড়ি<br />পিয়াস মজিদ</b><br /><br />প্রকাশক: ঐতিহ্য<br />প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ( দ্বিতীয় মুদ্রণ)<br />মূল্য: একশত আশি টাকা।<br />ISBN : 978-984-776-945-5<br />পৃষ্ঠা: ৭২</p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-16799849495123791602024-03-02T16:43:00.004+06:002024-03-02T16:43:49.253+06:00সৌমেন দেবনাথের ছোটোগল্পগ্রন্থ ❝অগ্রবর্তিনী❞: জীবনমায়া ও জীবনযন্ত্রণা - সুভাষ চন্দ্র দাস<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgiHLsaUFOGweqPQD7s8ceGHa3IwVllGrmR_sUtcpmTV_9L0jh-jLq8IoBGqDz4Fwb_2ADQmQWZOjT_lx5J7Cfnx7YVsTjBpJ0iQpszIptjGH3thlAVmXGJt7WNRilaprgLXW-REd2ahbnT6LvZQ3FF0XZ-0j_yaNqC859LqpB-NDk_fb5VZ-E66-mBwVc/s500/agrabartini-shawmen-debnath.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="সৌমেন দেবনাথের ছোটোগল্পগ্রন্থ ❝অগ্রবর্তিনী❞: জীবনমায়া ও জীবনযন্ত্রণা - সুভাষ চন্দ্র দাস" border="0" data-original-height="500" data-original-width="340" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgiHLsaUFOGweqPQD7s8ceGHa3IwVllGrmR_sUtcpmTV_9L0jh-jLq8IoBGqDz4Fwb_2ADQmQWZOjT_lx5J7Cfnx7YVsTjBpJ0iQpszIptjGH3thlAVmXGJt7WNRilaprgLXW-REd2ahbnT6LvZQ3FF0XZ-0j_yaNqC859LqpB-NDk_fb5VZ-E66-mBwVc/s16000/agrabartini-shawmen-debnath.jpg" title="সৌমেন দেবনাথের ছোটোগল্পগ্রন্থ ❝অগ্রবর্তিনী❞: জীবনমায়া ও জীবনযন্ত্রণা - সুভাষ চন্দ্র দাস" /></a></div><p></p><p>সাহিত্যের অন্যতম সংরূপ ছোটোগল্প। জীবনের খণ্ড খণ্ড মুহূর্তগুলোকে গল্পকারগণ শিল্পরূপ দিতে ব্যপ্ত হলেও বোদ্ধাদের তীর্যক চোখের তরবারি দীপ্তিতে শিল্পস্বীকৃতি পেতে বাধা পায়। তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণদৃষ্টিতে গল্পের ভাব-সুষমা, আঙ্গিক-প্রাঙ্গিক, গঠনশৈলী, পরিবেশনভঙ্গিতে ত্রুটি দৃশ্যত হলেও সৌমেন দেবনাথের গল্পগুলি পাঠান্তে মনে হয়েছে বর্ণনা নান্দনিক, শিল্পশর্তেও উত্তীর্ণ। দৈর্ঘ্যে হ্রস্ব কাহিনি-কল্পে মাধুর্য ও সৌন্দর্য সুপরিস্ফুট। সমাজ-সমস্যা, আদর্শ-বৈষম্য, অসামঞ্জস্য, বিসংগতির পাশাপাশি সৌন্দর্যতন্ময়তা, ভাবাদর্শ, স্বপ্ন-কল্পনার সংমিশ্রণে যে গল্পসৌষ্ঠব নির্মিত হয়েছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। মহাকালের ঘূর্ণাবর্তে ব্যক্তিসত্তা হারালেও সৃষ্টিশীল কর্ম মূর্ত-বিমূর্ত পাতায় বেঁচে থাকে। যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার কপোতাক্ষ নদের পাড়ে জন্ম সৌমেন দেবনাথের গল্পের ভেতরের যে জীবন বীক্ষণ-পর্যবেক্ষণ, চারিত্রিক লীলার বিকার-বিকাশ, রস-সৌন্দর্য, যুগ-চিত্ত চৈতন্য উন্মোচিত তা বর্তমান সমাজ বাস্তবতায় প্রাসঙ্গিক যা কালোত্তীর্ণ হতেও পারে। সৃষ্টিশীল কর্ম শিল্পমানে অনুত্তীর্ণ হলেও সমালোচনার পরিবর্তে সাধুবাদ জানানো যুক্তিযুক্ত।<br /><br />সৌমেন দেবনাথের <b>❝অগ্রবর্তিনী❞</b> গল্পগ্রন্থটি পাঠান্তে আমার নিজস্ব উপলব্ধি তুলে ধরছি:<br /><br /><b>অনালোকের পথে</b> (পেজ-০৯) ছোটোগল্পে আতিকুল চরিত্রের মধ্য দিয়ে গল্পকার সমাজের এমন এক বিষয় অবতারণা করেছেন যেখানে সমাজের মানুষের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করলে সমাজের চোখে কীভাবে শত্রু হয়ে যেতে হয় তার দৃশ্য স্পষ্ট। আত্মীয়-স্বজন, জ্ঞাতি-গোষ্ঠী পক্ষ থেকে সময়ের বদলে প্রতিপক্ষ হয়ে উঠার বিষয়ও রয়েছে, রয়েছে সমাজের জন্য ভালো কাজ করার কারণে নিজ স্ত্রীর রূপ পরিবর্তনের বিষয়টিও।<br /><br /><b>শ্রেয়াঙ্কা</b> (পেজ-১৬) ছোটোগল্পটি একটি প্রেমনির্ভর গল্প। শ্রেয়াঙ্কা এবং ঐষিকের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন, সম্পর্কের টানাপোড়েন, সম্পর্কে গুরুত্বহীনতা এলে তার পরিণতি অত্যন্ত সুন্দরভাবে লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন। অন্য মেয়েদের ভালোবাসার প্রতি নিবেদিত প্রাণ আর গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র শ্রেয়াঙ্কার ভালোবাসার মানুষের প্রতি আস্থাহীনতার গাল্পিক রূপ শ্রেয়াঙ্কা ছোটোগল্পটি।<br /><br />বেকারত্বের নিদারুণ দৃশ্য ফুটে উঠেছে <b>পরাহত জীবন</b> (পেজ-২৫) ছোটোগল্পে। মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও চাকরি না পাওয়ায় একজন মানুষের জীবনযুদ্ধে নিষ্পেষিত হওয়ার গল্প পরাহত জীবন। বেকার মানুষের সংসারে প্রবেশে বাধা এবং বিবেক জলাঞ্জলি দিয়ে প্রবেশ করলেও কতই যে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় তা সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। অম্বিকার সাথে লেখকের মনোদ্বান্দ্বিক বিষয়াদি এ গল্পের প্রাণ।<br /><br />অনুপম আর প্রাপ্তির সাংসারিক জীবনে নানা প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তি নিয়ে <b>দীর্ঘায়ুর অভিমান</b> (পেজ-৩২) গল্পের কাহিনি এগিয়ে গিয়েছে। প্রেমময় সম্পর্কের পাশাপাশি সাংসারিক জীবনে বিষাদময় পরিস্থিতিও গল্পে এসেছে। পরস্পরের প্রতি আস্থা, কিংবা আস্থাহীনতার মতো বিষয়গুলো গল্পে দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। অতিরিক্ত ভালোবাসার মানুষের সাথে অতিরিক্ত অভিমানও হয়, তাই-ই এই গল্পে ফুটে উঠেছে।<br /><br />কালারিজম নিয়ে গল্প <b>কালো গোলাপ</b> (পেজ-৪৬)। বর্ণবাদ নিয়ে লেখা কালো গোলাপ গল্পে কালো মানুষের সামাজিক অবস্থান, সমস্যা তুলে ধরা হয়েছে। কল্যাণী কালো হওয়ার কারণে সমাজে কতভাবে হেয় হয়, পাশাপাশি ফাল্গুনী সুশ্রী হওয়ার কারণে কত বেশি সমাজে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে তা এই গল্পের মাধ্যমে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক।<br /><br />সুতর্ণা আর তুষারের মধ্যের প্রেমময়তার গল্প <b>অগ্রবর্তিনী</b> (পেজ-৫৩)। মেধাবী তুষারের মেধাদীপ্ততার কারণে সুতর্ণা তুষারের সাথে সার্বক্ষণিক থাকে। কিন্তু তুষার তার মেধার স্বাক্ষর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রাখতে পারে না। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মেধা তেমন না থাকা সত্ত্বেও মেধার স্বাক্ষর রাখে সুতর্ণা। একারণে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বে পড়ে যায় তুষার। চাকরিক্ষেত্রেও সুতর্ণা এগিয়ে যায়, তুষার হেরে যায়; মেধাবী মানুষের হেরে যাওয়া, এবং তুলনামূলক কম মেধাবীদের অগ্রসর হওয়া এবং কম মেধাবী সুতর্ণা তুষারের জন্য নিজেকে লুকিয়ে রেখে তুষারকে উপরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা দেখা যায় এই গল্পে।<br /><br />শামীমের কাছে আব্বাস স্ত্রী রজনী সম্বন্ধে সবসময় ভালো ভালো কথা বলে। কিন্তু শামীম তার সংসারে স্ত্রী দ্বারা নির্যাতিত। এই কারণে শামীম আব্বাসের মুখের কথাতে বিশ্বাস করতে পারে না। গল্পে রজনী আব্বাসকে সংসারে অনেক চাপে রাখে, কিন্তু তা সে মানুষের সাথে বলে না, এই বিষয়টি <b>লুকোচুরি খেলা</b> (পেজ-৬০) গল্পের মূল বিষয়। <br /><br />স্বপ্নীল আর অনুমেঘার মধ্যের অন্তরতম সম্পর্কের গল্প <b>অনুমেঘার মন</b> (পেজ-৬৬)। দুইজনের মধ্যের সুন্দর অনুভূতি আর আবেগের গল্প এটি যেখানে অনুমেঘা প্রচণ্ড ভালোবাসে স্বপ্নীলকে। কিন্তু স্বপ্নীলের অতীত সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ায় স্বামীর প্রতি অশ্রদ্ধা জন্মে অনুমেঘার। প্রচণ্ড ভালেবাসায় মানুষের খারাপ অতীত জেনে যাওয়ার কারণে প্রচণ্ড ঘৃণা জাগ্রত হয় অনুমেঘার মনে যা এই গল্পের মূল কাহিনি।<br /><br />সৈকত <b>এক্সপ্লোরার ট্রাভেল</b> (পেজ-৭৫) ফেসবুক পেজের মাধ্যমে জানতে পারে সাশ্রয়ী মূল্যে দেশের ঐতিহ্যবাহী স্থান ভ্রমণ করা যায়। এই কথা সে তার পাঁচ বন্ধু রণৌত, আব্বাস, রিয়েল, কাদের ও শৌণককে জানালে তারা সবাই ভ্রমণে যেতে রাজি হয় এবং ভ্রমণে যায়। ভ্রমণে যাওয়ার সময় বাসের মধ্যের এক বিশ্রী অভিজ্ঞতার গল্প এক্সপ্লোরার ট্রাভেল ছোটোগল্পে ফুটে উঠেছে। <br /><br />মল্লিকা আর ফল্লুরা দুই বোনের বিবাহ হয় দুই ভাই আদিল আর আশিকের সাথে। আদিল ও মল্লিকার ছেলে আমির দুষ্টু প্রকৃতির, অন্যদিকে আশিক ও ফল্লুরার ছেলে আবির শান্ত প্রকৃতির। দুষ্টু আর শান্ত প্রকৃতির দুই ভাইয়ের মধ্যের দ্বন্দ্বই <b>উন্নাসিকের উৎপীড়ন</b> (পেজ-৮২) গল্পের উপজীব্য যেখানে আমির প্রচণ্ড উন্নাসিক প্রকৃতির।<br /><br />সাব্বির হাসি-খুশি প্রাণখোলা আর প্রাণবন্ত মানুষ। সকল পরিস্থিতিতেই সে হাস্যোজ্জ্বল থাকে। সাব্বিরের এই হাসি রুপনার প্রথম দিকে ভালো লাগতো। কিন্তু সাব্বিরের সংসারের বাইরের মানুষের সাথেও এমন হাসি-খুশি ব্যবহার করার কারণে রুপনার ভেতর দাহ্য হতে থাকে। সাব্বিরের হাসির কারণে রুপনার মনের ভেতরের যন্ত্রণা বৃদ্ধির মতো মনস্তাত্ত্বিক বিষয়াদি <b>সাব্বিরের হাসি ও রুপনার মনোদহন</b> (পেজ-৯০) গল্পের উপজীব্য। <br /><br />নিনন বিবাহের উদ্দেশ্যে রুহিনীকে দেখতে একটি রেস্টুরেন্টে দেখা করে। রেস্টুরেন্টে দুইজনের মধ্যের আড়াই ঘণ্টার মতো আলাপ হয়। পরস্পর পরস্পরের জন্য চাওয়া-পাওয়া, পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে আলাপ হয়। কিন্তু পরস্পর পরস্পরের কাছে চাওয়ার মাত্রা বেশি থাকে, কোনো পছন্দের বিষয় ত্যাগের সদিচ্ছা কারও না থাকায় তাদের দুইজনের মধ্যের <b>আড়াই ঘণ্টার আলাপ</b> (পেজ-৯৮) বৃথা যায়। <br /><br />কাজল, আরেফিন ও অমির বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন <b>প্রিয় মানুষের পছন্দ</b> (পেজ-৯৫) গল্পে ফুটিয়ে তুলেছেন গল্পকার। কাজল রিতিমাকে প্রচণ্ড পছন্দ করতো। কিন্তু রিতিমার চাহিদার কাছে কাজল হেরে যায়। পরবর্তীতে আরেফিন ও অমি দুইজনই রিতিমাকে বিবাহের উদ্দেশ্যে তার বাসায় পর্যায়ক্রমে দেখতে যায়, কিন্তু রিতিমার পছন্দের কাছে তারাও হার মানে। অবশেষে রিতিমা কাকে বিবাহ করেছিলো সেই বিষয়টিই প্রিয় মানুষের পছন্দ গল্পের মূল কাহিনি।<br /><br />কৌশিক মোনালিসাকে বিবাহ করতে চেয়েছিলো। কিন্তু মোনালিসার বান্ধবী নিবেদিতা কৌশিক কালো বলে অপছন্দ করতে প্রভাবিত করে। মোনালিসা কৌশিককে তাই বিবাহ করতে চায় না। কিন্তু কৌশিক ছিলো প্রতিষ্ঠিত ছেলে, নিবেদিতায় তাই তাকে বিবাহ করে বাবা-মায়ের কথা শুনে। বিষয়টি জেনে মোনালিসা হাসি দেয়, এমনই একটি সুন্দর কাহিনি আছে <b>মোনালিসা হাসি</b> (পেজ-১১৩) গল্পে।<br /><br />আমির আর সোহার মধ্যকার প্রেমের গল্প <b>মুদ্রার উত্তর-দক্ষিণ</b> (পেজ-১২০), যেখানে সোহা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলে আমিরের সাথে দূরত্ব বাড়ে। সোহা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করলেও আমির মনস্তাত্ত্বিকভাবে হেরে যায়, কারণ সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেনি। আর একারণে তাদের মধ্যে দূরত্ব বেড়ে যায় ও আমির নিজেকে লুকিয়ে নেয়; এমনই অম্লমধুর সম্পর্কের গল্প মুদ্রার উত্তর-দক্ষিণ।<br /><br />ছোটোগল্প হিসেবে ❝<b>অগ্রবর্তিনী</b>❞ ছোটোগল্পগ্রন্থটি কতবেশি সফল বা বিফল সেটি সময় বলবে। তবে ছোটোগল্পের ধরন-ধারণ বিশ্লেষণ করে যতটুকু উপলব্ধি করতে পারি তার আলোকে বলা চলে ❝অগ্রবর্তিনী❞ গল্পগ্রন্থের প্রতিটি গল্পেই গল্প আছে। পড়লে সময় কেটে যায় সহসায়, টানটান কাহিনিতে একঘেয়েমি আসে না। পাঠক হিসেবে ❝অগ্রবর্তিনী❞ গল্পগ্রন্থটির সফলতা কামনা করছি এবং গল্পকারের মনের মধ্যের গল্পসাহিত্যের সত্তা চারাটি বৃক্ষ রূপ নিয়ে পত্র-পল্লবে সুশোভিত হয়ে ফুলে-ফলে মঞ্জুরিত-বিকশিত হোক এই প্রত্যাশা থাকলো।<br /><br /><br />**********<br /><b>অগ্রবর্তিনী<br />সৌমেন দেবনাথ </b><br /><br />প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি-২০২৪<br />প্রচ্ছদ: শ্রীজন<br />ফ্ল্যাপ: মোঃ ফোরকান মোল্লা <br />প্রকাশক: চন্দন চৌধুরী <br />প্রকাশনী: বেহুলাবাংলা প্রকাশন, ঢাকা<br />আইএসবিএন: ৯৭৮-৯৮৪-৩৫-৪৩২০-২<br />মূল্য: ৪০০ টাকা<br />পৃষ্ঠা: ১২৮<br />ISBN: 978-984-35-4320-2<br /><br /># বইটি প্রকাশের খবর পড়ুন <a href=" https://www.granthagata.com/2024/02/agrabartini-shawmen-debnath.html">এখানে</a><br /></p><p></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-73530359874247200512024-02-22T23:38:00.008+06:002024-02-26T10:51:49.779+06:00'আদিপাপের পরের পাপ' বই সম্পর্কে লেখক মোজাফ্ফর হোসেনের নিজের মতামত<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh6YP-Hr2J6vIF9IUoZoxwgz7EVZTg3R2NVsp2cG5vODzl1HGVZ9oBaDptCqNXSakBh01jLdGR9Ymk438SKmgTnvm5XuqGt2tKjDBhA_nTiyMEtYH5oZqmo9f-yhZ_rDVOm_qaEPvAZlUBJF1HPb6JbdBnJOETOikV_i9LG3-Mu2BIPcFk33Ws6Tb9MCjk/s500/adipaper-porer-pap-cover.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="লেখক মোজাফ্ফর হোসেনের ভাষ্যে নিজের অণুগল্পের বই 'আদিপাপের পরের পাপ'" border="0" data-original-height="500" data-original-width="323" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh6YP-Hr2J6vIF9IUoZoxwgz7EVZTg3R2NVsp2cG5vODzl1HGVZ9oBaDptCqNXSakBh01jLdGR9Ymk438SKmgTnvm5XuqGt2tKjDBhA_nTiyMEtYH5oZqmo9f-yhZ_rDVOm_qaEPvAZlUBJF1HPb6JbdBnJOETOikV_i9LG3-Mu2BIPcFk33Ws6Tb9MCjk/s16000/adipaper-porer-pap-cover.jpg" title="অণুগল্পের বই 'আদিপাপের পরের পাপ'" /></a></div><p></p><p>অণুগল্প বা ফ্লাশফিকশন সম্প্রতি সাহিত্যের জনপ্রিয় শাখা হয়ে উঠেছে। অণুগল্প সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় আমেরিকায়। ব্রিটেনের সাহিত্যজগতেও এখন ‘ন্যাশনাল ফ্লাশফিকশন ডে’ উদযাপিত হয়। নিউজিল্যান্ডেও অনুরূপভাবে জাতীয় অণুগল্প দিবস পালিত হয়। ইউরোপ-আমেরিকায় অণুগল্পের জন্য আলাদা করে ম্যাগাজিন, ই-ম্যাগাজিন প্রকাশিত হচ্ছে। অণুগল্পের জন্য আলাদা করে পুরস্কারের ব্যবস্থাও আছে।<br /><br />ফেসবুক-টুইটারের এই যুগে গল্পের এই ক্ষুদে ফর্মটি নিয়ে হৈ চৈ হলেও এটি একেবারে নতুন কিছু না—মুখে মুখে বলা গল্প-ঐতিহ্যে (ওরাল ট্রাডিশন) বহু যুগ থেকে চলে আসছে। পশ্চিমে ঈশপের গল্প, ভারতবর্শে জাতক কিংবা লোকমুখে প্রচলিত গোপাল ভাড়ের গল্পও আকারে বেশ ছোট ছিল। গ্রিম ভাইদ্বয় যে ফোক-টেলস সংগ্রহ করেছিলেন তার বেশির ভাগই ছিল অণুগল্পের আকারে। তবে আকারে ছোট হলেও স্বভাবে সেগুলো অণুগল্প না। আধুনিক বাংলা সাহিত্যে অণুগল্পের প্রধানতম লেখক হলেন <i><b>বনফুল</b></i>। বর্তমান বিশ্বে অণুগল্প লিখে ‘ম্যান অব বুকার’ পুরস্কার পেয়েছেন মার্কিন লেখক <i><b>লিডিয়া ডেভিস</b></i>। ডেভিসের গল্পের দৈর্ঘ্য এক লাইন থেকে শুরু করে দু-তিন পৃষ্ঠা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। ছোটগল্পের পাশাপাশি অণুগল্প লিখে পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছেন আরেক মার্কিন কথাসাহিত্যিক রবার্ট ওলেন বার্টলার। ছোটগল্পের পাশাপাশি অণুগল্প লিখে বিখ্যাত হয়েছেন জাপানের প্রথম নোবেলজয়ী লেখক <i><b>Yasunari Kawabat</b></i>a। হেমিংওয়ের নিক অ্যাডামস সিরিজের প্রায় সব গল্পই অণুগল্প। অণুগল্প লিখেছেন <i><b>কাফকা, আর্থার সি ক্লাক, রে ব্রাডবুরি, নগিব মাহফুজ, ডোলান্ড বার্থলেম, আমব্রুস বিয়ার্স, কেট শপা, শেখবের</b></i> মতো প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিকরাও।<br /><br />অণুগল্পে বেঁধে দেওয়া কোন আকার না থাকলেও কেউ কেউ মনে করেন এটি ১০০ শব্দের মধ্যে শেষ হওয়া চায়, আবার কেউ কেউ ১ হাজার শব্দের নিচে যে কোনো গল্পকে অণুগল্প বলে মনে করেন। যেমন <i><b>হেমিংওয়ে</b></i> প্রায় ৯০০ শব্দে ‘ক্যাট ইন দ্য রেইন’ গল্পটি লিখেছেন; আবার তিনি একটি অণুগল্প লিখেছেন মাত্র ৬ শব্দে : <b>‘For sale: baby shoes, never worn.’</b> হন্ডুরাসের লেখক <i><b>Augusto Monterroso</b></i> ‘সাত শব্দের এপিক’ বলে বিখ্যাত ডাইনোসর গল্পটি লিখেছেন : <b>‘Upon waking, the dinosaur was still there’</b>। প্রখ্যাত মেক্সিকান লেখক <i><b>এডমান্ড ভালাদেস</b></i> বারো শব্দে লিখলেন দ্য সার্চ গল্পটি :<b> Those maddened sirens that howl roaming the city in search of Ulysses</b>। একটা অসমাপ্ত বাক্য, কিন্তু গল্প! তবে অণুগল্প নিয়ে যেন একটু বাড়াবাড়িই করে ফেললেন মেহিকোর লেখক <i><b>Guillermo Samperio</b></i>। তিনি ‘<b>Fantasma’</b> নামে একটি গল্প লিখলেন যেখানে শিরোনামের পর একটিও শব্দ লেখা হয়নি। শিরোনাম আর একটি খালি পৃষ্ঠা!<br /><br />অণুগল্পের এই শব্দসীমাকে চীনা সাহিত্যে বেঁধে দেয়া হয়েছে ‘স্মোক লং’ ফিকশন বলে। অর্থাৎ একটি সিগারেট শেষ করতে যে সময় লাগবে তার ভেতর এ গল্প শেষ হয়ে যাবে। এটিকে মাইক্রো ফিকশন, পোস্টকার্ড ফিকশন, ন্যানো ফিকশন, সাডেন ফিকশন, সুপার শর্ট ফিকশন কিংবা শর্ট শর্ট স্টোরি নামেও ডাকা হয় বিভিন্ন দেশে।<br /><br />ফরাসি কবি বোদলেয়ার-এর মতো অনেক কবি ক্ষুদে গদ্য-কবিতা (prose poetry) লিখেছেন যেগুলোকে অণুগল্প হিসেবে চিহ্নিত করা চলে। অন্যদিকে হালের জনপ্রিয় মার্কিন কবি ও গল্পকার স্টুয়ার্ট ডাইবেক-এর অনেক অণুগল্প গদ্য-কবিতা হিসেবে কবিতার কাগজে প্রকাশিত হয়েছে। এতে বোঝা যায়, কবিতা এবং ছোটগল্প দু’য়ের বৈশিষ্ট্যই অণুগল্পে বিদ্যমান। যে কারণে মার্কিন কথাসাহিত্যিক জয়েস ক্যারল ওয়াটস (জ. ১৯৩৮) বলছেন, অণুগল্প <br /><br /></p><blockquote>often more temperamentally akin to poetry than to conventional prose, which generally opens out to dramatize experience and evoke emotion; in the smallest, tightest spaces, experience can only be suggested।</blockquote><br /><br />মার্কিন কবি ও কথাসাহিত্যিক গ্রেস পালে বলছেন, <i>‘অণুগল্প কবিতার মতোই ধীরে পড়া উচিত।’</i> অণুগল্প গল্পের মতোই সমাজ বাস্তবতার কোনো সুপ্ত চেতনাকে ইঙ্গিত করে। চরিত্র থাকে, কথোপকথন (ডায়লগ) থাকে। একটা চমৎকার সমাপ্তিও থাকে। কেবল বলাটা হয় দ্রুত-বিদ্যুৎ চমকের মতন ঝলক দিয়েই শেষ। এক মুহূর্তে বর্ণিত বাস্তবতার এক ঝলক দেখে নেয়া। একটি সার্থক অণুগল্পে একটি বিশেষ মুহূর্ত একক দৃশ্যপটের ভেতর দিয়ে উপস্থাপিত হয়। কিছু পরিষ্কার করে বলা হবে না, কেবল একটা ইঙ্গিত দিয়েই ছেড়ে দেয়া হবে। অণুগল্পের সঙ্গে উপন্যাস এবং ছোটগল্পের সঙ্গে তুলনা করে আর্জেন্টিনার কথাসাহিত্যিক লুইসা ভেলেনজুয়েলা (জ. ১৯৩৮) বলছেন : <br /><br /><blockquote>I usually compare the novel to a mammal, be it wild as a tiger or tame as a cow; the short story to a bird or a fish; the micro story to an insect (iridescent in the best cases)।</blockquote><p><br />অণুগল্প নিয়ে এত কথা বলার কারণ একটাই, আদিপাপের পরের পাপ। বইটাতে ৪৬টা গল্প আছে। সব কি অণুগল্প? বোধহয় না। তবে বাংলাদেশে এখন অণুগল্প যেভাবে লেখা হচ্ছে সেপথে আমি হাঁটিনি। নিরীক্ষা ঠিক বলব না, বলব আমার ছোটগল্পেরই আরেক সংস্করণ। নতুন কিছু নতুনভাবে বলার চেষ্টা করা। যেহেতু এখানে অণুগল্পের ঐতিহ্য তৈরি হয়নি, পাঠোভ্যাস কম, ফলে চ্যালেঞ্জ আছে—লেখকের সঙ্গে সঙ্গে সেই চ্যালেঞ্জটা পাঠকের জন্যও। লেট সী…<br /><br /><br />**********<br /><b>আদিপাপের পরের পাপ<br />মোজাফ্ফর হোসেন</b><br /><br />প্রকাশকাল: অমর একুশে বইমেলা ২০২৪<br />প্রকাশক: পাঠক সমাবেশ<br />মূল্য: ৩৫০ টাকা<br />পৃষ্ঠা: ১৩২<br />আকার: ৮.৭"x ৬"</p><p>* প্রচ্ছদ কৃতজ্ঞতা: <a href="https://pathakshamabesh.com/" rel="nofollow" target="_blank">পাঠক সমাবেশ</a><br /></p><p></p><p></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-75207696475444511592024-02-19T21:24:00.008+06:002024-02-19T21:42:02.166+06:00কাব্য সমালোচনা: বনলতা সেন - গুঞ্জন রহমান<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgpSrqhebGB_jWtQW00J83Idp4PSYghHvfMOo2FkOQz4OmTcgeR0pW0LzPzj6QZDMu85aA5bdMdn5ha84LoNcM5ZV6P_YXcKF191WgqNuqV5SOQMjfR93srlMjj1Nho08FbytEcwHoHFroh_8NpS7eoMPt08aTCXmK8dh7upWDDHrwMcKL6HvQ8HgXxG4I/s825/banalata-sen-goonjohn-rahman.jpeg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="জীবনানন্দ দাশের 'বনলতা সেন' কাব্যের আলোচনা গুঞ্জন রহমান" border="0" data-original-height="500" data-original-width="825" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgpSrqhebGB_jWtQW00J83Idp4PSYghHvfMOo2FkOQz4OmTcgeR0pW0LzPzj6QZDMu85aA5bdMdn5ha84LoNcM5ZV6P_YXcKF191WgqNuqV5SOQMjfR93srlMjj1Nho08FbytEcwHoHFroh_8NpS7eoMPt08aTCXmK8dh7upWDDHrwMcKL6HvQ8HgXxG4I/s16000/banalata-sen-goonjohn-rahman.jpeg" title="জীবনানন্দ দাশের 'বনলতা সেন' কাব্যের আলোচনা গুঞ্জন রহমান" /></a></div><br /><br /><div class="suc">হাজার বছর ধ’রে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে,<br />সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে<br />অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগতে<br />সেখানে ছিলাম আমি; আরো দূর অন্ধকারে বিদর্ভ নগরে;<br />আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,<br />আমারে দু-দণ্ড শান্তি দিয়েছিলো নাটোরের বনলতা সেন।<br />চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,<br />মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; অতিদূর সমুদ্রের ’পর<br />হাল ভেঙে যে-নাবিক হারায়েছে দিশা<br />সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি-দ্বীপের ভিতর,<br />তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে সে, ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’<br />পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।<br />সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতন<br />সন্ধ্যা আসে; ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল;<br />পৃথিবীর সব রং নিভে গেলে পাণ্ডুলিপি করে আয়োজন<br />তখন গল্পের তরে জোনাকির রঙে ঝিলমিল;<br />সব পাখি ঘরে আসে— সব নদী— ফুরায় এ-জীবনের সব লেনদেন;<br />থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন।<br /><br /></div><br />বনলতা সেন কবিতাটিকে আমি বলি বাংলা কবিতার মোনালিসা। যেভাবে দ্য ভিঞ্চির অমর পেইন্টিংয়ের সৌন্দর্যের যতটা না আকর্ষণ, তার চেয়েও দুর্নিবার আকর্ষণ এর রহস্যময়তার; একইভাবে, বনলতা সেন কবিতার সৌন্দর্য যতটা, এর রহস্যময়তা তার চেয়েও অনেক অনেক। মোনালিসার মিষ্টি হাসির সাথে অসামান্য চোখের যে সংমিশ্রণ, তাকে উতুঙ্গ মাত্রায় নিয়ে যায় ছবিটার পটভূমি বা ব্যাকগ্রাউন্ড। ফোরগ্রাউন্ডের মোনালিসার পেছনে যে ব্যাকগ্রাউন্ড লিওনার্দো এঁকেছেন, তা কোনো মাস্টার পেইন্টারও আঁকতে পারেন না, এর জন্য দরকার হয় গ্র্যান্ডমাস্টারের। একইভাবে, জীবনানন্দ কেবল স্তবকের পর স্তবক লিখে গিয়ে এক কল্পিত নারীর সৌন্দর্য বর্ণনা করেছেন তাই নয়, সেই সব স্তবক, চরণ, পদ, মাত্রা, ছন্দ, অন্ত্যমিল... সবকিছুতেই নিয়ম মেনেছেন কবিতার ব্যাকরণ থেকে। নিয়ম মেনেছেন, তেমনি নিয়ম ভেঙ্গেছেনও!<br /><br />অক্ষরবৃত্তে লেখা এই কবিতা অমিত্রাক্ষর না হয়েও অমিত্রাক্ষরের নিয়ম অনুসরণ করে গেছে – পদ, স্তবক বা চরণের শেষে বাক্য সমাপ্ত না করে বক্তব্যের শেষে সমাপ্ত করেছে, যার কারণে পরের চরণে চলে যেতেও দ্বিধা করেনি। এবং কবি দ্বিধা করেননি সনেট বা অমিত্রাক্ষরের মাত্রা ভাঙ্গার ক্ষেত্রেও। ছন্দ না ভেঙ্গে তিনি মাত্রা নিয়ে খেলেছেন নিজের নিয়মে। কোথাও ৮+৮+৬ ধরে এগিয়েছেন,<br /><br /><blockquote>হাজার বছর ধ’রে | আমি পথ হাঁটিতেছি | পৃথিবীর পথে, (৮+৮+৬)<br />সিংহল সমুদ্র থেকে | নিশীথের অন্ধকারে | মালয় সাগরে (৮+৮+৬)<br />অনেক ঘুরেছি আমি; | বিম্বিসার অশোকের | ধূসর জগতে (৮+৮+৬)<br />সেখানে ছিলাম আমি; | আরো দূর অন্ধকারে | বিদর্ভ নগরে; (৮+৮+৬)<br />আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, | চারিদিকে জীবনের | সমুদ্র সফেন, (৮+৮+৬)<br />আমারে দু-দণ্ড শান্তি | দিয়েছিলো নাটোরের | বনলতা সেন। (৮+৮+৬)</blockquote><br /><br />আবার কোথাও হিসাবের গরমিল করেছেন বারবার। তবে অক্ষরবৃত্ত ভাঙ্গেননি তাই বলে। লাইনপ্রতি বরাবরের ২২ মাত্রা ভেঙ্গে এই স্তবকের প্রথম চরণে ১৮ মাত্রা ব্যবহার করেছেন, ৮ মাত্রা ও ৬ মাত্রার পদের সাথে প্রথমবার তিনি ২ মাত্রার পদও ব্যবহার করেছেন এখানে। আবার একই স্তবকে ১৮ আর ২২ মাত্রার চরণ ব্যবহার করেছেন, সম্পূর্ণ পদের সাথে অসম্পূর্ণ পদও ব্যবহার করেছেন, দুটি চরণে তো ১০ মাত্রার পদও লিখেছেন, যে চরণ দুটি শেষ পর্যন্ত হয়ে গেছে ২৬ মাত্রার!<br /><br /><blockquote>চুল তার কবেকার | অন্ধকার বিদিশার | নিশা, (৮+৮+২)<br />মুখ তার শ্রাবস্তীর | কারুকার্য; অতিদূর | সমুদ্রের ’পর (৮+৮+৬)<br />হাল ভেঙে যে-নাবিক | হারায়েছে দিশা (৮+৬)<br />সবুজ ঘাসের দেশ | যখন সে চোখে দেখে | দারুচিনি-দ্বীপের ভিতর, (৮+৮+১০)<br />তেমনি দেখেছি তারে | অন্ধকারে; বলেছে সে, | ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’ (৮+৮+১০)<br />পাখির নীড়ের মতো | চোখ তুলে নাটোরের | বনলতা সেন। (৮+৮+৬)<br />সমস্ত দিনের শেষে | শিশিরের | শব্দের মতন (৮+৪+৬)<br />সন্ধ্যা আসে; | ডানার রৌদ্রের গন্ধ | মুছে ফেলে চিল; (৪+৮+৬)<br />পৃথিবীর সব রঙ | নিভে গেলে পাণ্ডুলিপি | করে আয়োজন (৮+৮+৬)<br />তখন গল্পের তরে | জোনাকির রঙে ঝিল | মিল; (৮+৮+২)<br />সব পাখি ঘরে আসে| — সব নদী— ফুরায় এ- | জীবনের সব লেনদেন; (৮+৮+১০)<br />থাকে শুধু অন্ধকার, | মুখোমুখি বসিবার | বনলতা সেন। (৮+৮+৬)</blockquote><br /><br />যাহোক, এগুলো হলো ছন্দ বা মাত্রা তথা কবিতার ব্যাকরণগত গবেষণার বিষয়। কিন্তু আমি ঠিক সে বিষয়ে লিখতে চাইনি, বরং বলতে চেয়েছি কবিতাটার ভাবগত দিকটা নিয়ে।<br /><br />জীবনানন্দ তাঁর অনেক কবিতায় বা অধিকাংশ কবিতাতেই অদ্ভুত কিছু শব্দ ব্যবহার করেছেন, উপমা ব্যবহার করেছেন, সমসাময়িক বিবেচনায় কিছু অপ্রচলিত বিশেষ্যপদও হাজির করেছেন প্রায়শ। শব্দ নিয়ে খেলা সাধারণত ছড়াকারদের প্রিয় বিষয়, যেমন সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের বা সুকুমার রায়ের কবিতায় বা ছড়ায় শব্দের ব্যবহার পাঠককে চমকিত করে থাকে। তবে সে সবই প্রচলিত বা খুব জানাশোনা শব্দকেই বিচিত্রভাবে ব্যবহার করার নৈপূণ্য। কিন্তু জীবনানন্দ শব্দ নিয়ে খেলতে গিয়ে প্রায়শ অপ্রচলিত শব্দকে বেছে নিয়েছেন। তা করতে গিয়ে সেই শব্দটির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা দ্যোতনা কবিতাটির সঙ্গে মিশে গেছে। কবিতাটি পড়তে পড়তে যে ভাবের ভেতর দিয়ে চালিত হচ্ছিলেন পাঠক, ওই অজানা বা কম শোনা শব্দটি আচমকা যখন হাজির হয়, পাঠক তখন ওই ভাবটি থেকে ক্ষণিকের জন্য বেরিয়ে আসতে বাধ্য হন। কবিতার ভাবের চেয়ে ওই শব্দটিই তাঁকে তখন দোলায় বেশি।<br /><br />শব্দের মতো উপমা বা মেটাফোর ব্যবহারেও জীবনানন্দ তাঁর কবিতার পাঠককে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা বারংবার করে গেছেন। যেমন, ‘আট বছর আগের এক দিন’ কবিতাটির কথা ধরুন। এখানে তিনি কবিতার প্রধান চরিত্রটির মানসিক অবস্থার বর্ণনা দিতে গিয়ে হঠাৎ করে লিখলেন ‘উটের গ্রীবার মতো’ নিস্তব্ধতা! আরেক জায়গায় লিখলেন ‘চারিদিকে মশারির ক্ষমাহীন বিরুদ্ধতা’! সেইভাবে, ‘বুড়ি চাঁদ গেছে বুঝি বেনোজলে ভেসে? / চমৎকার! /ধরা যাক্ দু-একটা ইঁদুর এবার—’ এই মেটাফোরও পাঠককে চমকে দেয়, থমকে দেয়। এবং খানিকটা বিভ্রান্তও করে, কবিতার শেষভাগে হঠাৎ করে কবি যখন নিজেই প্রবেশ করেন তাঁর কবিতার কল্প-গল্প-চিত্রায়নের একদম ভেতরে –<br /><br /><blockquote> ‘আমিও তোমার মতো বুড়ো হবো— বুড়ি চাঁদটারে আমি ক’রে দেবো / কালীদহে বেনোজলে পার; / আমরা দু-জনে মিলে শূন্য ক’রে চ’লে যাবো জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার’।</blockquote><br />তো এই বিভ্রান্তির খেলা, পাঠককে চমকে দেয়ার কিংবা বিভ্রান্ত করার খেলাটা জীবনানন্দ প্রাণভরে খেলেছেন এই কবিতাতেও। গোটা কবিতাটিতে কবি নিজেকে স্থাপন করেছেন একজন নাবিকের চরিত্রে, অথচ কবিতাটির শুরুই করেছেন হাঁটার কথা দিয়ে। নাবিক তো জলে ভাসবে, সাগর-মহাসাগর পাড়ি দিয়ে ঘুরে বেড়াবে পৃথিবীর এক মেরু থেকে অন্য মেরু অব্দি। কিন্তু তিনি নাবিক হয়েও হাঁটছেন পৃথিবীর পথে। লক্ষ করুন– পথে কিন্তু, জলে নয় বা সাগরে নয়। এর পরে কয়েকটি সাগরের কথা উল্লেখ আছে যদিও কবিতায়। উল্লেখ আছে ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক মিলিয়ে কয়েকটি নগরের কথাও। যে নাবিক হাজার বছর ধরে পরিব্রাজন করে যাচ্ছেন, তাঁর পক্ষে এসব নগরের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা ও সংস্কৃতির খোঁজ রাখারই কথা। কিন্তু খটকা লাগে তখনই, যখন তিনি কয়েক হাজার বছরের সভ্যতা-সংস্কৃতি, ভূগোল ও কিংবদন্তি ঘেঁটে এসে দুদণ্ড শান্তি পান “নাটোরের” বনলতা সেনের কাছে। নাটোর এমন কোনো ঐতিহাসিক নগর নয়, প্রাচীন বা মধ্যযুগের কিংবা আধুনিককালের কোনো সভ্যতাতেই নাটোরের সম্পর্কে তাৎপর্যপূর্ণ কোনো প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্বের কথা উল্লেখ নেই। বনলতা সেনের চরিত্রটিতেও ‘নাটোরের’ হওয়ার কারণে এমন কিছু আলাদা তাৎপর্য যুক্ত হয়নি। যেভাবে কুইন অব সেবা, হেলেন অব ট্রয়, ঝাঁসির রাণী লক্ষ্মী বাঈ... ইত্যাদি নামের সাথে সেইসব চরিত্রের দেশ/নগরের নাম যুক্ত হওয়ায় তাঁদের চরিত্রের আলাদা একটি মাত্রা প্রকাশ পেয়েছে, বনলতা সেন নাটোরের হওয়ার কারণে তাঁর চরিত্রের এমন কোনো বিশেষ বৈশিষ্ট্য কি আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়? নাটোর বৃটিশ ভারতের প্রাচীন একটি জেলা শহর, এখানকার বিখ্যাত স্থাপনা হলো বৃটিশ আমলে তৈরি একটি প্যালেস, যা দিঘাপাতিয়া রাজবাড়ি (অধুনা উত্তরা গণভবন) নামে সমোধিক পরিচিত। আর বিখ্যাত নাটোরের কাঁচাগোল্লা। তাছাড়া আর কোনো তাৎপর্য এই নামটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বলে আমার জানা নেই, তবে জীবনানন্দের জানা থাকতেও পারে। তবে এই কবিতার কারণে উল্টো নাটোরেরই পরিচিতি ঘটে গেছে বনলতা সেনের ঠিকানা হিসেবে। ... এ হলো জীবনানন্দীয় গিমিক। <br /><br />আরেকটা ব্যাপারও লক্ষণীয়। এই কবিতায় কবি যেখানে নিজেকে নাবিকের বেশে উপস্থাপন করছেন, নানান বন্দর নগরীর নাম উল্লেখ করছেন, সাগর ও দ্বীপের কথা বলছেন, সেখানে বনলতা সেনের বাড়ি নাটোর কিন্তু কোনো বন্দর নগরী নয়। সমুদ্র তীরবর্তী স্থান নয়, কোনো দ্বীপ নয়, নয় কোনো প্রাচীন সভ্যতায় উল্লেখ থাকা ঐতিহাসিক নিদর্শন। তথাপি নাবিক কবির সাথে তাঁর পরিচয়ের যোগসূত্র কী?<br /><br />তো সরাসরি চলে আসি বনলতা সেনের সাথে কবিতার কথকের সম্পর্ক নিয়ে। কথক সে নারীর সৌন্দর্যের বর্ণনা দিচ্ছেন প্রাচীনকালের ঐতিহাসিক নগরীর ভুলে যাওয়া কিংবা কখনো না-জানা সব মেটাফোর থেকে। বিদিশার নিশা, শ্রাবস্তীর কারুকার্য, দারুচিনি দ্বীপের ভেতরের সবুজ ঘাসের দেশ... বনলতা সেনের বাহ্যিক সৌন্দর্যের বর্ণনায় এই সব নগরীর বর্ণনা এবং তারও আগে কথক তাঁর নিজের পরিচিতি বা নিজের পরিব্রাজনের ফিরিস্তি দিতে গিয়ে যে নগরগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন – একটু খেয়াল করলেই লক্ষ্য করবেন, প্রতিটি জায়গায় তিনি রাতের বর্ণনা দিয়েছেন। অন্ধকারের, অস্পষ্টতার, রহস্যময়তার কথা বলেছেন। ‘নিশীথের অন্ধকারে’, ‘ধূসর জগতে’, ‘আরও দূর অন্ধকারে’, ‘অন্ধকার’ বিদিশার ‘নিশা’, ‘তেমনই দেখেছি তারে অন্ধকারে’, ‘দিনের শেষে’, ‘সন্ধ্যা আসে’, ‘থাকে শুধু অন্ধকার’ ... এভাবে বারবার কেবল অন্ধকারের বর্ণনাই দিয়ে গেছেন কবি/কথক। তিনি বনলতাকে প্রথমবার দেখেছেনও অন্ধকারেই! সেই সাক্ষাতেই কিংবা পরবর্তী সাক্ষাতে যখন অন্তরঙ্গ আলাপে মুখোমুখি বসার কথা, সেই অ্যারেঞ্জমেন্টও কিন্তু হয়েছে অন্ধকারেই, একদম শেষ লাইনে যে কথা বলা হয়েছে।<br /><br />কিন্তু এই অন্ধকারের চেয়েও রহস্যময় যে বিষয়টা, তা হলো তাঁর প্রতি বনলতা সেনের বলা প্রথম (এবং আমাদের জানামতে একমাত্র) উক্তিটি – ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’ ভেবে দেখুন, জগৎসংসার ভেজে খেয়ে শেষ করা এই অস্থির “ক্লান্ত প্রাণ এক” নাবিক শেষ পর্যন্ত স্থির শান্ত হয়ে গেলেন যে নারীকে দেখে, তাঁর প্রতি সে নারীর প্রথম উক্তিটি ‘আপনি’ সম্বোধনে! আর এইখানেই দাশবাবুর আসল মুন্সীয়ানা। <br /><br /><div class="dan"><span style="color: #cc0000;"><i><span style="font-size: x-large;">এত কিছু থাকতে চোখের উপমা কেন পাখির বাসার সাথে দিলেন কবি?</span></i></span></div>তার আগে আরেকটি উপমা নিয়ে একটু ভাবি। ‘পাখির নীড়ের মতো চোখ’। এত কিছু থাকতে চোখের উপমা কেন পাখির বাসার সাথে দিলেন কবি? আমাকে অনেকেই বলেছেন যে, পাখির নীড় বলতে কবি এখানে ঠিকানা বুঝিয়েছেন। অর্থাৎ বনলতা সেনের চোখে কবি তাঁর ঠিকানা দেখতে পেয়েছেন। সারা পৃথিবী ঘুরে এসে তিনি ওই চোখেই নিজের শেষ ঠিকানা বা স্থায়ী আবাস খুঁজে পেয়েছেন। ... আচ্ছা, পাখির বাসা কি খুব স্থায়ী কোনো নিবাস? পাখিরা কি একটা বাড়িতে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর থেকে যায়? সারা জীবন কি একই বাসায় কাটায় একটা বা এক জোড়া পাখি? মোটেই নয়। পাখি কেবল ডিম দেয়ার জন্য বাসা বানায়। ডিম ফুটে বাচ্চা বেরুলে এবং সেই বাচ্চা উড়তে শিখলেই সে বাড়ির কথা ভুলে যায় পাখি। তাই পাখির নীড় কোনো স্থায়ী ঠিকানা বা স্থায়িত্বের প্রতীক বা থিতু হওয়ার মেটাফোর হতে পারে না। বরং লক্ষ করলে দেখবেন, পাখির বাসা খুব অগোছালো একটা বাসা। বাবুই ছাড়া আর প্রায় কোনো পাখিই খুব গুছিয়ে বাসা বানাতে পারে না। ছন্নছাড়া, অগোছালো, ভঙ্গুর একটা বাসা। আর ঠিক এই অর্থেই উপমাটিকে বেছে নিয়েছেন জীবনানন্দ দাশ। বনলতা যখন কবিকে বা এই কবিতার কথককে চোখ তুলে তাকিয়ে দেখলেন, তাঁর দৃষ্টি তখন ভাসা ভাসা, অগোছালো, এলোমেলো। ওই দৃষ্টিতে গভীরতা নেই, স্থিরতা নেই। বরং এক ধরনের উদ্ভ্রান্ত অভিব্যক্তি থেকে থাকবে। দিশেহারা একটা অবস্থা। এবং সেই চোখ তুলে মেয়েটি তাঁর দিকে তাকিয়ে শুরুতেই বললেন – ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’ বাক্যটা হতে পারতো এতদিন কোথায় ‘ছিলে’? অথবা, ‘আপনি কোথায় ছিলেন?’ কিংবা ‘এতক্ষণ’ কোথায় ছিলেন? কিন্তু বললেন, ‘এতদিন’। কেন? এতদিন শব্দটার মধ্যে এক ধরনের অপেক্ষা জড়িয়ে আছে, প্রতীক্ষা মিশে আছে। কেউ যখন কাউকে বলে এতদিন কোথায় ছিলে, তার মানে এতদিন ধরে বা অনেক দিন ধরে তার জন্য সে অপেক্ষা করছে, প্রতীক্ষা করে আছে। যার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে অপেক্ষা করে থাকা যায়, সে তো তার খুব কাছের কেউ, খুব চেনা কেউ, তাই না? তো সেই কাছের মানুষ, খুব চেনা মানুষকে কেউ ‘আপনি’ সম্বোধন করবে কেন? আমি মনে করি, এর পেছনে দুটি কারণ থাকতে পারে।<br /><br /><b>প্রথম কারণ:</b> মেয়েটির তিনি খুব চেনা, খুব কাছের মানুষ বলেই তাঁর জন্য মেয়েটি ‘এতদিন’ ধরে অপেক্ষায় কিংবা প্রতীক্ষায় আছে এটা যেমন ঠিক; তেমনি যতই কাছের মানুষ হোক বা চেনা হোক না কেন, বাস্তবে ওই সাক্ষাতটাই তাঁদের জীবনের প্রথম সাক্ষাত। ‘মুখোমুখি বসিবার’ প্রথম ঘটনা। আর তাই অনোভ্যাসগত জড়তা থেকে সম্বোধনের ‘আপনি’ থেকে গেছে। ... কিন্তু, এটা যদি প্রথম সাক্ষাত হয়, তাহলে আবার খুব চেনা হলেন কী করে? কারণ, তাঁদের চেনা-জানা বা বোঝাপড়ার মাধ্যম ছিলো– চিঠি। সাগর-মহাসাগরে ঘুরে বেড়ানো এই নাবিকের সাথে বনলতা সেনের পরিচয় পত্রালাপে। সারাদিন জাহাজের কাজে ব্যস্ত থাকা নাবিক রাতের অন্ধকারেই কেবল অবসর পেতেন সেসব চিঠি পড়বার কিংবা চিঠির উত্তর লিখবার, তাই কবিতায় বনলতাকে ঘিরে সব বর্ণনা, সব মেটাফোর অন্ধকারের। সেইসব চিঠিতে চিঠিতেই তাঁদের প্রেম, তাঁদের একে-অপরকে জানা। আর তারপর যখন প্রথম সাক্ষাতের দিনক্ষণ ঠিক হলো, বনলতা অপেক্ষায় ছিলেন আগে থেকে তাঁর। কবি পৌঁছুতেই সেই উদ্ভ্রান্ত, দিশেহারা চোখ তুলে কবিকে দেখলেন তিনি এবং বুঝতে পারলেন – এই সেই মানুষ, তাঁর একদম নিজের মানুষ, যার অপেক্ষায় ছিলেন তিনি জীবনভর। আর তাই, বিস্ময়াভিভূত কণ্ঠে তাঁর ওই প্রথম উচ্চারণ – ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’<br /><br /><b>দ্বিতীয় কারণ</b>টি অপেক্ষাকৃত সহজ। এবং আমার ধারণা এই কারণটাই সঠিক, এটাই বেশি যুক্তিযুক্ত। সেটা আর কিছুই নয়, পরের বাক্যে সেন-এর সঙ্গে অন্তমিল দেবেন বলেই এতদিন কোথায় ছিলে না লিখে ছিলেন লিখেন, এর বেশি কিছু না। এ নিয়ে এত গবেষণার কিছু নেই।গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-29086344051167109272024-02-19T14:42:00.011+06:002024-02-19T14:44:30.784+06:00ভ্রমর সেথা হয় বিবাগি - পলাশ মজুমদার<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhdB_D6eqgwwEjGUOaCpch-EC9OoPxwnRI8spWEm8J0gPciISknAotL6QJoUz2ayVaSe55mA1QAizLQqB9thYRFTSX8P4Q_hAJSqg1lLp6j7713H-wxTMsQNfiDpbl2ucTCYdDT5aZbStpVLDBjB8mLJqKOFO7NoisKbxYdQUFFTCMAHHu36FpvhCgtf5M/s500/bhramar-setha-hoy-bibahi-palash-majumdar.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="ভ্রমর সেথা হয় বিবাগি - পলাশ মজুমদার" border="0" data-original-height="500" data-original-width="336" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhdB_D6eqgwwEjGUOaCpch-EC9OoPxwnRI8spWEm8J0gPciISknAotL6QJoUz2ayVaSe55mA1QAizLQqB9thYRFTSX8P4Q_hAJSqg1lLp6j7713H-wxTMsQNfiDpbl2ucTCYdDT5aZbStpVLDBjB8mLJqKOFO7NoisKbxYdQUFFTCMAHHu36FpvhCgtf5M/s16000/bhramar-setha-hoy-bibahi-palash-majumdar.jpg" title="ভ্রমর সেথা হয় বিবাগি - পলাশ মজুমদার" /></a></div><br />এটি পলাশ মজুমদারের প্রকাশিত তৃতীয় গল্পগ্রন্থ। বইটিতে স্থান পেয়েছে দশটি গল্প যেগুলো প্রায় দুই বছর ধরে লেখা হয়েছে এবং ইতিমধ্যে বিভিন্ন সাহিত্য সাময়িকী ও লিটল ম্যাগে প্রকাশিত ; যথাক্রমে- পরিণতি, বিপ্লব, যুগল প্রেমের স্রোতে, ছলনাজাল, বিশ্বাসের ফাঁদ, ভ্রমর সেথা হয় বিবাগি, রক্তমাখা চরমতলে, না পেয়ে তোমার দেখা, হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা এবং শূন্যতার গোলকধাঁধা। সমকালীন রূঢ় বাস্তবতা, বৈষম্য ও অনাচার, মানবিক অবক্ষয়, মানুষের স্ববিরোধিতা, ভণ্ডামি ও কপটতার মতো নিকৃষ্ট মনোবৃত্তি, আধুনিক ও প্রাচীনপন্থার বিরোধ, যৌনতা, গতানুগতিকতার সঙ্গে দ্বন্দ্ব, সম্পর্কের টানাপোড়েন, সংবেদনশীলতা এবং নারী-পুরুষের মনস্তাত্ত্বিক জটিলতা গল্পগুলোতে অনায়াসে চলে এসেছে।<br /><br />বইটি পাঠের সময় পাঠক অস্বস্তিতে পড়ে যাবেন গল্পের শুরু এবং শেষ নিয়ে। পলাশ মজুমদার বাস্তবজীবনে সমাজমনস্ক, রাজনীতির ধার না ধারলেও তার লেখায় সূক্ষ্মভাবে চলে আসে রাজনীতি। পর্যবেক্ষণশীল পাঠকের কাছে তা ধরা পড়ে অনায়াসে। তবে বলা যায় যুক্তিবাদিতা তার গল্পের অন্যতম অনুষঙ্গ। নর-নারীর চিরন্তন প্রেমও লেখক এড়িয়ে যান না। একই সঙ্গে তার লেখায় প্রকাশ পেয়েছে প্রচলিত সমাজব্যবস্থার প্রতি রাগ-ক্ষোভ ও বিদ্রূপ।<br /><br />তাঁর লেখায় ধর্মকে তিনি কোন প্রকার আঘাত করেননি, তবে আঘাত করেছেন ধর্মীয় মুখোশের আড়ালে ভণ্ডামিকে। ধর্মের নামে মানুষে মানুষে বিদ্যমান ভেদাভেদ ও হিংসা-বিদ্বেষের চিত্র এঁকেছেন রাখঢাক না রেখে, কারও পক্ষাবলম্বন না করে। অপ্রিয় সত্য বলায় দ্বিধাহীন পলাশ মজুমদার দার্শনিক না হলেও তাঁর লেখায় দার্শনিকতা স্পষ্ট। "ভ্রমর সেথা হয় বিবাগি" বইয়ের গল্পগুলো ঝরঝরে ও প্রাণবন্ত।<br /><br />পলাশ মজুমদারের পূর্ব প্রকাশিত বই "হরিশংকরের বাড়ি", "দিব্যপুরুষ", "জনৈক বিনিয়োগকারীর আত্মহত্যা প্রসঙ্গে" এবং "ফুলের ভাষা যদি বুঝি"। বইগুলোর প্রকাশক বিদ্যাপ্রকাশ। বইমেলায় বিদ্যাপ্রকাশের স্টল নং ৩২৬-৩২৯।<br /><br />**********<br /><b>"ভ্রমর সেথা হয় বিবাগি"<br />লেখক: পলাশ মজুমদার</b><br />প্রচ্ছদ: রাজীব দত্ত<br />প্রকাশক: বিদ্যাপ্রকাশ<br />মুল্য: দুইশ বিশ টাকা<br />প্রকাশকাল : ২০২৪ বইমেলা<br /><p></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-77737914718554159372024-02-18T00:04:00.000+06:002024-02-18T00:04:05.662+06:00ঝিনুক নীরবে সহো - মোশতাক আহমদ<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhDrS4u_tcGnf2mv2us-dExqthHnEELjBmLpX2u80FkFjcXdhU7P4JWTsBGB1DqSltXR9GbZHEiZ0kuRJuApm9GIBeDqTv-dZYB8Fg5sxfFfE1gsqpeVS2douxXxIIPO95kWDOzIZaN8SPUGAQoU5NEnF6uJSj2x5GmKxVmkE-HCaFa17wUesN4rVrajYk/s500/jhinuk-nirobe-saho-mostak-ahmad.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="ঝিনুক নীরবে সহো - মোশতাক আহমদ" border="0" data-original-height="500" data-original-width="335" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhDrS4u_tcGnf2mv2us-dExqthHnEELjBmLpX2u80FkFjcXdhU7P4JWTsBGB1DqSltXR9GbZHEiZ0kuRJuApm9GIBeDqTv-dZYB8Fg5sxfFfE1gsqpeVS2douxXxIIPO95kWDOzIZaN8SPUGAQoU5NEnF6uJSj2x5GmKxVmkE-HCaFa17wUesN4rVrajYk/s16000/jhinuk-nirobe-saho-mostak-ahmad.jpg" title="ঝিনুক নীরবে সহো - মোশতাক আহমদ" /></a></div><br />বাতিঘর থেকে প্রকাশিত হয়েছে কবি আবুল হাসানের জীবনভিত্তিক উপন্যাস '<b>ঝিনুক নীরবে সহো</b>'। রচনা করেছেন <b>মোশতাক আহমদ</b>।<br /><br />বইটি সম্পর্কে কবি জিললুর রহমান লিখেছেন—<br /><br /><blockquote>সুখী মানুষ, তোমরাই শুধু জানলে না<br />অসুখ কত ভালো<br />কতো চিরহরিৎ বৃক্ষের মতো শ্যামল<br />কত পরোপকার<br />কত সুন্দর</blockquote><br /><br />এমন উচ্চারণ কেবল একজন কবিই করতে পারেন, যিনি খুব অল্প বয়সে অসুখের যন্ত্রণায় বুঁদ হয়েছিলেন: রাহাত খানের ভাষায় 'একটুখানি আয়ুষ্মতী ঘুম চেয়েছিলেন'। অকাল মৃত্যুর আগে আবুল হাসানের বিনিদ্র রাতগুলো এভাবেই দীর্ঘতর হয়েছিল; চিরতরে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছিল তাঁকে—রয়ে গেল থোকা থোকা দুঃখের মতো অসামান্য টলটলে সব কবিতা, সতীর্থদের বেদনার স্মৃতি এবং একখানি সুরাইয়া খানম মিথ। হয়তো এতটুকু অনেকেই জানেন।<br /><br />ঔৎসুক্যও কম নয় আরও গভীরে যাবার, আরও বিস্তারিত জানার। সেই ঔৎসুক্য একদিন উকি দিয়েছিল আরেক কবির মনে। তারপর আবুল হাসান নামের এক দুঃখদীর্ণ জীবনের আখ্যান রচিত হয় 'ঝিনুক নীরবে সহো' শব্দবন্ধের আঙিনায়। এই আখ্যানে আমরা জানতে পারি অসুস্থ অবস্থায় কবির পূর্ব বার্লিনের জীবনের একটা অকথিত জগতের উন্মোচনসহ জীবনের নানা পর্বের ঘটনা, যে-জীবন স্পর্শ করেছে বাঙালি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বছরগুলোর সাহিত্যিক ও রাজনৈতিক বিস্তার। <br /><br />মোশতাক আহমদ একজন কবি হয়ে খুঁজে ফিরেছেন তাঁর প্রিয় কবির জীবনগাথা। হয়তো এই একই জীবনালেখ্যের ভেতরে সঞ্চারিত হয়েছে লেখকের জীবনেরও অনেক গোপন দীর্ঘশ্বাস।<br /><br />**********<br /><b>ঝিনুক নীরবে সহো<br />মোশতাক আহমদ</b><br />প্রচ্ছদ রাজীব দত্ত<br />মুদ্রিত মূল্য ৭০০ টাকা <br /><p></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-13187657093874850512024-02-17T23:58:00.006+06:002024-02-17T23:58:35.800+06:00আমাদের ভাষার লড়াই - বদরুদ্দীন উমর<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh8C_4YzTRg_7VS2rLmC4cNEy4NIJKGwXlJ5fl4CPRkWFidwXmT_zJ9B_ORbBrQCENRTc7u22gi15gEoOcohiSkwcj7aZgSyF1dIcsj8fsyFlQZshzVuEtlDpirT-SkIGWo6-oXCE2TLqHvmi4vQjQpvBBS01DVRITQzRTpICPWecF83BeHDQMEziKGTw0/s500/amader-bhasar-larai-badruddin-umar.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="আমাদের ভাষার লড়াই - বদরুদ্দীন উমর" border="0" data-original-height="500" data-original-width="361" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh8C_4YzTRg_7VS2rLmC4cNEy4NIJKGwXlJ5fl4CPRkWFidwXmT_zJ9B_ORbBrQCENRTc7u22gi15gEoOcohiSkwcj7aZgSyF1dIcsj8fsyFlQZshzVuEtlDpirT-SkIGWo6-oXCE2TLqHvmi4vQjQpvBBS01DVRITQzRTpICPWecF83BeHDQMEziKGTw0/s16000/amader-bhasar-larai-badruddin-umar.jpg" title="আমাদের ভাষার লড়াই - বদরুদ্দীন উমর" /></a></div><br />বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস রচনায় <b>বদরুদ্দীন উমর</b> ইতোমধ্যে নিজস্ব স্থান তৈরি করে নিয়েছেন। ছিলেন রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের প্রথমদিকের গুরুত্বপূর্ণ কর্মী। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নিবেদিত কর্মী হিসেবে রচনা করেছিলেন <b>'আমাদের ভাষার লড়াই</b>' নামের ইশতেহার। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে ইশতেহারটি ব্যাপকভাবে সারা বাংলাদেশে প্রচার করা হয়। দেশের আপামর জনগণকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে ইশতেহারটি কার্যকর ভূমিকা রেখেছিল।<br /><br />বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করবার আন্দোলন, প্রেক্ষাপট নিয়ে তাঁর ঐতিহাসিক বই 'পূর্ব বাঙলার ভাষা-আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি'। তিন খণ্ডে প্রকাশিত প্রায় সাড়ে এগারশ পৃষ্ঠার বইয়ে পূর্ববঙ্গের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত আলোচনা প্রচুর তথ্যসহ উপস্থাপিত হয়েছে। ভাষা-আন্দোলনের শুরু থেকে আটচল্লিশ সালের ভাষা-আন্দোলনের বিভিন্ন ঘটনা, আরবি হরফে বাংলা ভাষা লেখার অপপ্রয়াস, পূর্ববাংলা ভাষা-কমিটির কার্যক্রম, পূর্ববঙ্গের দুর্ভিক্ষ, জমিদারি ব্যবস্থা ও প্রজাস্বত্ব আইন, কৃষক আন্দোলন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, জুলুম ও প্রতিরোধ আন্দোলন, মুলনীতিবিরোধী আন্দোলন, পূর্ববঙ্গের শ্রমিক আন্দোলন, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন, প্রাথমিক শিক্ষক ধর্মঘট, ছাত্র আন্দোলনের নতুন পর্যায়, পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগ গঠন, রাজনৈতিক দলগুলোর সাংগঠনিক অবস্থা, খাজা নাজিমুদ্দীনের বক্তৃতার প্রতিক্রিয়া, ২০ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারির ঘটনাপ্রবাহ, ভাষা-আন্দোলনের পরবর্তী পরিস্থিতি, মার্চ-এপ্রিলের ঘটনাবলি, এলিস কমিশনের কার্যক্রমসহ ভাষা আন্দোলন সম্পর্কিত যাবতীয় ঘটনাবলীর সামগ্রিক মূল্যায়ন রয়েছে।<br /><br />ইতিহাসের এই বিপুল তথ্যভান্ডারকে সংক্ষিপ্ত করে সমকালের পাঠকদের উপযোগী সহজ ভাষায় উপস্থাপন করে অমর একুশে বইমেলা ২০২৪ এ প্রকাশিত হয়েছে 'আমাদের ভাষার লড়াই'। নতুন প্রজন্মের কৌতুহল মেটানোর জন্য যথাযথ তথ্যউপাত্তসমৃদ্ধ একটি ভালো বইয়ের অভাব সব সময় ছিল। সে অভাব পূরণ করেছে সহজ ভাষায় লেখা বদরুদ্দীন উমরের 'আমাদের ভাষার লড়াই'।<br /><br />**********<br /><b>আমাদের ভাষার লড়াই<br />বদরুদ্দীন উমর</b><br />প্রচ্ছদ সব্যসাচী হাজরা <br />মুদ্রিত মূল্য ৪০০ টাকা<br />প্রকাশক বাতিঘর চট্টগ্রাম<br />অমর একুশে মেলায় বাতিঘরের স্টল নম্বর ১১৭–১২০<p></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-33827268681613061312024-02-15T21:12:00.005+06:002024-02-16T14:00:19.501+06:00অ্যালবার্ট আইনস্টাইন আপেক্ষিকতা: বিশেষ ও সাধারণ তত্ত্ব - অনুবাদ: হেলাল উদ্দিন আহমেদ<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjz__i-qkY95JQy2PnPzQvAP30dTCaLltwuGDZv1gpzSZQCglTrpnnl_tEKTg7K_crDw-sY1jCaNYMFFK7UuuHe1PhBQNDpWRQF4dHejcJ4AT-ZanjPxsaO7yeoChA4Qjfo1r2N9b9MyTW8K3kAklWVKBe4JU11o4ZzQ7Fg3zmiabjbZLR2BHr0h58NehQ/s500/albert-einstein-relativity-helel-uddin-ahmed.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="অ্যালবার্ট আইনস্টাইন আপেক্ষিকতা: বিশেষ ও সাধারণ তত্ত্ব - অনুবাদ: হেলাল উদ্দিন আহমেদ" border="0" data-original-height="500" data-original-width="350" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjz__i-qkY95JQy2PnPzQvAP30dTCaLltwuGDZv1gpzSZQCglTrpnnl_tEKTg7K_crDw-sY1jCaNYMFFK7UuuHe1PhBQNDpWRQF4dHejcJ4AT-ZanjPxsaO7yeoChA4Qjfo1r2N9b9MyTW8K3kAklWVKBe4JU11o4ZzQ7Fg3zmiabjbZLR2BHr0h58NehQ/s16000/albert-einstein-relativity-helel-uddin-ahmed.jpg" title="অ্যালবার্ট আইনস্টাইন আপেক্ষিকতা: বিশেষ ও সাধারণ তত্ত্ব - অনুবাদ: হেলাল উদ্দিন আহমেদ" /></a></div><br />বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন-এর বিখ্যাত ‘Relativity: The Special and General Theory' গ্রন্থটি অনুবাদক ও গবেষক ড. হেলাল উদ্দিন আহমেদ সরল বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেছেন। পদার্থবিজ্ঞানের একটি বড় স্তম্ভ হলো আপেক্ষিকতার তত্ত্ব। সময়, ভর, দৈর্ঘ্য-এগুলোর কোনোটিই পরম নয়-এটাই এই ধারণা ও তত্ত্বের মূল উপজীব্য। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে আইনস্টাইন-এর এই কালোত্তীর্ণ তত্ত্বের কারণেই মহাবিশ্ব সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের ধারণায় এসেছে আমূল পরিবর্তন। মানব ইতিহাসে তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যার ক্ষেত্রে যত যুগান্তকারী আবিষ্কার হয়েছে, তার মধ্যে আপেক্ষিকতার তত্ত্ব হলো অন্যতম। কেউ যদি এই তত্ত্বটি সঠিকভাবে বুঝতে ও অনুবাধন করতে পারে, তাহলে সে অনুভব করতে পারবে তার চারপাশের জগৎ কত বিচিত্র, অনিশ্চিত ও রহস্যময়।<br /><br />এই অনূদিত গ্রন্থে অনেক জটিল বিষয় অত্যন্ত সরল বাংলায় উপস্থাপন করা হয়েছে, যা বাংলাভাষী পদার্থবিদ্যার ছাত্র-ছাত্রীদের বিষয়টি নির্ভুলভাবে বুঝতে সাহায্য করবে। তত্ত্বটি হদয়ঙ্গম ও করায়ত্ত করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আলবার্ট আইনস্টাইন কর্তৃক পদার্থবিদ্যায় সংযোজিত জ্ঞানের এই নবীন শাখার অসাধারণ মূলনীতি ও সূত্রসমূহের অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য ও প্রতিসাম্যকে অনুবাধন করবে এবং এর মাধ্যমে বিজ্ঞান ও দর্শনের জগতে এর গুরুত্ব সম্যকভাবে উপলব্ধি করতে পারবে।<br /><br />অনুবাদের ক্ষেত্রে দুটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, বইটি অত্যন্ত সহজ, প্রাঞ্জল ও প্রমিত বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, বৈজ্ঞানিক বিষয়ের ভাষাগত দুর্বোধ্যতা দূর করার জন্য বইটিতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। সে কারণে অপ্রচলিত বেজ্ঞানিক পারিভাষিক শব্দের ক্ষেত্রে যেমন অনেক সময়ে তার ইংরেজি প্রতিশব্দটি যুক্ত করা হয়েছে, তেমনি বাংলা প্রতিশব্দেরও প্রয়োগ ঘটানো হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্তরে অধ্যয়নরত পদার্থবিদ্যার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা এর দ্বারা উপকৃত হবেন বলে আশা করা যায়। <br /><br />**********<br /><b>অ্যালবার্ট আইনস্টাইন আপেক্ষিকতা : বিশেষ ও সাধারণ তত্ত্ব<br />অনুবাদ: হেলাল উদ্দিন আহমেদ</b><br />প্রচ্ছদ: রাজীব দত্ত<br /><br />প্রকাশনী: আগামী প্রকাশনী<br />প্রকাশকাল: অমর একুশে বইমেলা ২০২৪<br />মূল্য: ৫০০ টাকা<p></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-34614663275247727562024-02-15T21:04:00.002+06:002024-02-15T21:14:03.778+06:00কবি মাহবুব ইসলামের ভাষ্যে রুদ্র রিয়াজের 'নিরুদ্দিষ্ট রাজহাঁস' কাব্যের রিভিউ<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjoPqfwKBpvvRpFLcww4_LFS3Y7cEHtdv5EzM7UmgQcHuOsiL6ds4yrR4aVSHCwNmXjyFgNRn-9zXEEldFJVhIG2V-3N0mYbHJf9srgaLZ4LuG1SzDDwCjdrIgI3pHcgefRy6TokHnQofsbqGeg2e4G2QdPrtsHq1OsedMuXqahJU4Qr3pWCtxmjvs5E6Q/s500/niruddista-rajhans-rudra-riaj.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="কবি মাহবুব ইসলামের ভাষ্যে রুদ্র রিয়াজের 'নিরুদ্দিষ্ট রাজহাঁস' কাব্যের রিভিউ" border="0" data-original-height="500" data-original-width="333" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjoPqfwKBpvvRpFLcww4_LFS3Y7cEHtdv5EzM7UmgQcHuOsiL6ds4yrR4aVSHCwNmXjyFgNRn-9zXEEldFJVhIG2V-3N0mYbHJf9srgaLZ4LuG1SzDDwCjdrIgI3pHcgefRy6TokHnQofsbqGeg2e4G2QdPrtsHq1OsedMuXqahJU4Qr3pWCtxmjvs5E6Q/s16000/niruddista-rajhans-rudra-riaj.jpg" title="কবি মাহবুব ইসলামের ভাষ্যে রুদ্র রিয়াজের 'নিরুদ্দিষ্ট রাজহাঁস' কাব্যের রিভিউ" /></a></div><br /> (প্রারম্ভিক আলোচনা) <br /><br /><blockquote>"কাছে গিয়ে দেখি <br />সবাই তীব্র একাকী!"</blockquote><br /><br />কোন কেন্দ্র নেই, কোন ভরকেন্দ্র নেই, যেখানে দাঁড়াই পায়ের তলা থেকে সরে যায় প্রস্বেদন ক্রিয়া। এই শূন্যতা, নিহিলিজম, কেন্দ্রহীনতা ও অর্থহীনতার এই পৃথিবীতে নিরুদ্দিষ্ট হয়ে চলছে সময়ের রাজহাঁস। এই রাজহাঁস কে? আপনি আমি কিংবা কাফকা'র স্যামসা। সবাই। আমরা সবাই যেতে চাই কিন্তু কোথায়? কবি এ্যাবসার্ড থিয়েটারের অথর্বতার কথা মনে করিয়ে দেয়। বেকেট যেমনটা বলেন:-<br /><br /><blockquote>" এখানে আমরা কী করছি এটাই মূল সমস্যা "</blockquote><br /><br />রিয়াজের কবিতা অস্তিত্বের চরম সংকটের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়।<br /><br /><blockquote>" ইঁদুরের শহরে বিড়ালরা সংখ্যাগরিষ্ঠ তাই<br />'বেঁচে থাকা ' কেনার মতো আমাদের সামর্থ্য নাই।"<br />"যে যতো গভীরে যায় <br />সে তত অগভীরে যায়। "</blockquote><br /><br />কিংবা <br /><br /><blockquote>"এ পৃথিবীর অন্তহীন দেয়ালে আমি কেবলই প্রতিধ্বনি। "<br />"বাঙালি প্রাণভরে হাসতে পারে না<br />কেননা তার ফুসফুস বিভিন্ন স্বার্থক্যান্সারে আক্রান্ত "</blockquote><br /><br />আমরা যে একটা ট্রাপে আটকে আছি এবং পালাবার পথ নেই সার্ত্রের " being and nothingness " এর অস্তিত্ববাদের ইংগিত পাই প্রায় কবিতায়। 'Man is condemned to be free' কিংবা কাফকা যখন বলে" when I am free, I'm lost" স্বাধীনতা যে একটা মিথ্যা আস্ফালন। মানুষ স্বাধীন হতে গিয়ে আরও বন্দী হয়ে পড়ে এই কথাটা মনে করিয়ে দেয় <br /><br /><blockquote>" মানুষ কারাগার থেকে পালাতে গিয়ে কারাগারেই ফিরে আসে।"<br />" ষাড় থেকে বলদে রূপান্তরিত হওয়ার ইতিহাসই সভ্যতা"।<br />" ঘরের দরকার মানুষের না কি মানুষের ঘরের?<br />এই সংকটে তীব্র হতে হতে ফোটে সংখ্যাহীন ফুল--<br />ওগো দূরের চঞ্চল আজন্ম এক চিতা বুকে নিয়ে <br />তবুও হেরে যাও দৌড়ের সামান্য প্রতিযোগিতায়!"</blockquote><p><br /><br />এরকম অসংখ্য maxim পাওয়া যায় কবিতার পরতে পরতে পাওয়া যায় যা খুবই উইটী, এবং আমাকে ভাবাতে শেখায়।</p><p><br />আাশা করি রূদ্র রিয়াজের কবিতার বই" নিরুদ্দিষ্ট রাজহাঁস" পাঠকমহলে সমাদৃত হবে।<br /><br />**********<br /><b>নিরুদ্দিষ্ট রাজহাঁস <br />রুদ্র রিয়াজ<br /></b>প্রকাশক: ঘাসফুল, একুশে বইমেলা ২০২৪<br />মেলায় পাওয়া যাবে— স্টল নং- ১৪৭-১৪৮ <br /></p><p></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-21813555784625934902024-02-15T20:48:00.002+06:002024-02-15T20:48:27.883+06:00৮৪, চ্যারিং ক্রস রোড - হেলেন হ্যানফ<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh70msPmwbhmh58s_Ydv5oea6bNyu_HIqfEVtnUklRkq4AKRKo4EuhYhZb-49SHPAldtjlVixD37wcbz5LXSuk6ouDZylMXlBaXOYAV9037myWUgwJGczIqnLW5EXZiTYalsv74q3NOD0r6uyRaUjuajYAhMRlD4ObeBuHJ1xEwY9SnNPrwXefBueb1nR4/s500/84-charing-cross-road-helene-hanff.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="৮৪, চ্যারিং ক্রস রোড - হেলেন হ্যানফ" border="0" data-original-height="500" data-original-width="336" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh70msPmwbhmh58s_Ydv5oea6bNyu_HIqfEVtnUklRkq4AKRKo4EuhYhZb-49SHPAldtjlVixD37wcbz5LXSuk6ouDZylMXlBaXOYAV9037myWUgwJGczIqnLW5EXZiTYalsv74q3NOD0r6uyRaUjuajYAhMRlD4ObeBuHJ1xEwY9SnNPrwXefBueb1nR4/s16000/84-charing-cross-road-helene-hanff.jpg" title="৮৪, চ্যারিং ক্রস রোড - হেলেন হ্যানফ" /></a></div><br />কোনোদিন দেখা হয়নি তাদের। মুখোমুখি কথা হয়নি কোনোদিন। তবু তারা বন্ধু ছিলেন। কুড়ি বছরের অবিস্মরণীয় এক বন্ধুত্বের গল্প এটি। <br /><br />যারা বই পড়তে ভালোবাসেন, চিঠি লিখতে ভালোবাসেন, যারা বিশ্বাস করেন বন্ধুত্বের আন্তরিক শক্তিতে—তাদের সবার জন্যে এই গল্পটি।<br /><br />আসলে তো গল্প নয়—গল্প হলেও সত্যি!<br /><br />**********<br />৮৪, চ্যারিং ক্রস রোড<br />হেলেন হ্যানফ<br />ভাষান্তর: আঞ্জুমান লায়লা নওশিন ও অরূপরতন।<br /><br />প্রকাশক: পেন্ডুলাম <br />প্রচ্ছদশিল্পী: রৌদ্র মিত্র<p></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-55900523541603569532024-02-15T20:41:00.005+06:002024-02-15T20:41:39.321+06:00ভাড়া বাড়ির দেওয়াল - রাফাতুল আরাফাত<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiEwdg_lWAwwhhPmEajE6AuJdlTgViVGjlqnCKjBzvGzOKm6yJCigAIigLB05VimwKxpnjKn84SzjZlWUVjZYymuQWnlo311mMI1EpXk5cNIgniTbUh6pHs4LFwK2UsT67qZ0XSoDzjmiXC8tRu4ffGPrNm8HwHyu4P93edBY7ZrA_4gFCY-JeMNSBbDQ0/s500/bhara-barir-deoal-rafatul-arafat.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="500" data-original-width="349" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiEwdg_lWAwwhhPmEajE6AuJdlTgViVGjlqnCKjBzvGzOKm6yJCigAIigLB05VimwKxpnjKn84SzjZlWUVjZYymuQWnlo311mMI1EpXk5cNIgniTbUh6pHs4LFwK2UsT67qZ0XSoDzjmiXC8tRu4ffGPrNm8HwHyu4P93edBY7ZrA_4gFCY-JeMNSBbDQ0/s320/bhara-barir-deoal-rafatul-arafat.jpg" width="223" /></a></div><br /><b>রাফাতুল আরাফা</b>ত ১৯৯৮ সালের ২৮ জুন গাজীপুরের শ্রীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। শ্রীপুরের মাটি ও মায়ায় বেড়ে ওঠা রাফাতুল আরাফাত বর্তমানে মাগুরায় বসবাস করছেন। সম্পাদনা করেন অনলাইন লিটলম্যাগ ‘মিহিন্দা’। সেপ্টেম্বর ২০২৩-এ দ্বিমত থেকে প্রকাশিত হয়েছে তার প্রথম কবিতার বই ‘ভাড়া বাড়ির দেওয়াল’৷ ৩৯টি কবিতা নিয়ে ৪৮ পৃষ্ঠার বইটির প্রচ্ছদশিল্পী তাইফ আদনান৷<br /><br /><b>‘ভাড়া বাড়ির দেওয়াল</b>’ বইটি সম্পর্কে কবি ও প্রাবন্ধিক ফারুক সুমন ফ্ল্যাপে লিখেছেন:<br /><br /><blockquote>ভাড়া বাড়ির দেওয়াল কবি রাফাতুল আরাফাতের প্রথম কাব্যগ্রন্থ, যেখানে জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির কাব্যময় উৎসারণ ঘটেছে। তিনি অনুভূতির নিবিড়তম অঞ্চল থেকে কুড়িয়ে এনেছেন হৃদয়মথিত পংক্তিমালা। কবিতার বিষয় ও প্রকরণে একটা স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ লক্ষ্য করা যায়। তার কবিতা দুর্বোধ্যতার আগল এড়িয়ে ক্রমশ নন্দনবোধের অনুগামী হয়েছে। আমাদের চিরচেনা দৈনন্দিনতার ভেতর লুকিয়ে থাকে তার কবিতার রসদ। ফলে জীবনঘনিষ্ঠ চিত্রকল্প, উপমা ও রূপকের ব্যবহারে কবিতা স্বতন্ত্র অবয়ব পেয়েছে।</blockquote><br /><br />রাফাতুল আরাফাতের কবিতা বোধের বহুমুখী দরজায় কড়া নেড়ে যায়। যারা সময়ের উত্তাপ এড়িয়ে নির্লিপ্ত থাকে, তাদের জন্য এই কবিতা আহ্বানের। যারা মানবিকতার পথে না গিয়ে ক্রমশ নিষ্ঠুরতাকে আরাধনা করে, তাদের জন্যও এই কবিতা প্রেরণার হতে পারে। রাফাতের কবিতা নীতিকথা নয়, তবে শুভবোধ ও মহত্তম পথে এগিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই কবিতা আমাদের ভাবিয়ে তুলবে। মানুষের যাপিত জীবনের চিরন্তন আর্তি, প্রেম-প্রকৃতি, সময়ের অভিঘাত, ব্যক্তিগত দুঃখবোধ ও দ্রোহচেতনা রাফাতুল আরাফাতের কবিতার প্রধান বৈশিষ্ট্য। বিশ্বাস করি, প্রথম বইয়ের এমন সম্ভাবনাকে তিনি আগামীতে আরও বেশি পরিচর্যা করবেন। কবিতার জয় হোক।<br /><p></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-54451401609456933352024-02-15T20:33:00.003+06:002024-02-15T20:33:26.433+06:00কবীর রানা'র মেয়াদোত্তীর্ণ নিরাপত্তাসমূহ গল্পের বই সম্পর্কে সাফওয়ান আমিনের রিভিউ<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgWTs8HJVUGWwRSr5Iv8l0MOOWzR8nYujZPlZv5GA1fvi7EVrgU4BvuCYjDm5HG6dndVtRb4AJjw1fOY9uQktMsbkfnyhpeaBly9nC6M2Cr7HbtaDie5LnjReCFKAFS3QG5_EH-L5Mf-L8AkMO9_bvSny6v08HYO6QmVMuQp-NY57zIyKC31sCT_4qCBak/s500/keu-marche-na-kabir-rana.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="কবীর রানা'র মেয়াদোত্তীর্ণ নিরাপত্তাসমূহ গল্পের বই সম্পর্কে সাফওয়ান আমিনের রিভিউ" border="0" data-original-height="500" data-original-width="319" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgWTs8HJVUGWwRSr5Iv8l0MOOWzR8nYujZPlZv5GA1fvi7EVrgU4BvuCYjDm5HG6dndVtRb4AJjw1fOY9uQktMsbkfnyhpeaBly9nC6M2Cr7HbtaDie5LnjReCFKAFS3QG5_EH-L5Mf-L8AkMO9_bvSny6v08HYO6QmVMuQp-NY57zIyKC31sCT_4qCBak/s16000/keu-marche-na-kabir-rana.jpg" title="কবীর রানা'র মেয়াদোত্তীর্ণ নিরাপত্তাসমূহ গল্পের বই সম্পর্কে সাফওয়ান আমিনের রিভিউ" /></a></div><br /><br />সেদিন <b>কবীর রানা</b> স্যারের "<b>মেয়াদোত্তীর্ণ নিরাপত্তাসমূহ</b>" গল্পের বইটা হঠাৎ হাত দিয়ে ছুঁয়ে পড়া শুরু করেছিলাম। "মেয়াদোত্তীর্ণ নিরাপত্তাসমূহ" গল্পটা পড়তে এমন কাব্যিক ধাক্কা খাবো, ভাবিনি। গল্পের বুনন এমন যে, সহজে একজন পাঠক জিস্ট গল্পটা হয়তো ধরতে পারবে না। মানে গল্পের সারাংশে পৌঁছানো একটু কঠিন হবে হয়তো। কিন্তু স্যারের যে বলার ধরণ, তা আগে থেকে অবগত থাকার কারণে পড়তে পড়তে আগানো শুরু করলাম। তারপর আমার মন্তব্য হচ্ছে অসাধারণ। শুধু এই একটা গল্পকেই ৩০/৪০ পৃষ্ঠার ব্যাখ্যা দাড় করালেও বলা বাকিই থেকে যাবে বোধহয়। এত হিউজ একটা টপিকের এই গল্পটা। গল্পটা পড়ার ফিলিংসটা এমন হচ্ছিল যে, এইটা কারো কাছে ব্যাখ্যা করে বলতে না পারলে আমার আত্মতৃপ্ত হচ্ছিল না। সেই সুযোগ অবশ্য পরের দিন সকাল সকাল হয়ে গেল। সেদিন সকালে আমার রুমে আসলেন কবি জীবন সাহা ও কবি মাহমুদ কাওছার। তাদের পেয়ে আমার পড়ার অনুভূতি শুনিয়ে দিলাম। ভালো কোনো গল্প পড়ার পর, তার অনুভূতিটা কাউকে জানানো, এ এক আত্মতৃপ্তির ব্যাপার। <br /><br />২.<br />গল্পটা শুরু এভাবে "বিষ জমে, চাঁদ জমে রাতের ডগায়। বিষটুকু পাহারা দেওয়ার কথা ভেবে, সেউজগাড়ি মহল্লার অধিবাসীদের অতি অস্থিরতায় চাঁদ ভুলে যায়।" গল্পটার গড়ে উঠেছে এই সেউজগাড়ি মহল্লাকে ঘিরে। আসলেই কি তাই? সেউজগাড়ি মহল্লা কি শুধুই সেউজগাড়ি মহল্লা? নাকি এই বগুড়া শহর? নাকি এই বাংলাদেশ? নাকি গোটা বিশ্বের সামাজিক অবস্থা? <br /><br />যতদূর জানি, কবীর রানা স্যার নিজেও এই সেউজগাড়ি মহল্লার অধিবাসীদেরই একজন ছিলেন। হয়তো গল্পটা তখন লেখা। অথবা পরে কখনো এসে লেখা। যা হোক, প্রসঙ সেটা নয়, প্রসঙ্গ হলো, তিনি কিভাবে ভাবেন? তিনি কিভাবে এই কঠিন কাজকে গল্পে এনে সহজে রূপ দিলেন?<br /><br />মানে তাঁর গল্পের বিষয়বস্তু একটা বিমূর্ত ভাব। মানে তিনি ডিল করেছেন, সেউজগাড়ি মহল্লার মানুষের মানসিক অবসাদ, মানসিক অতৃপ্তি নিয়ে। <br /><br />আর মানসিক অতৃপ্তিকে তিনি "ঘুম ও বিষ" শব্দদ্বয় দ্বারা উপস্থাপনের প্রয়াস দেখিয়েছে। এই ঘুম ও বিষ শব্দকে ভাঙতে গেলে যে, কত হাজার রকম দিকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব আল্লাহই ভালো জানে! <br /><br />গোটা গল্পে সেই অতৃপ্তিকে দূর করার কথাই গল্পে গল্পে বলে গেছে, কাহিনির বিন্যাসের ভিতর দিয়ে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি সমাধান দেননি। এটাই উচিত, কেননা, সমাধান দেওয়া তো সাহিত্যিকের কাজ নয়। স্যারের গল্পের শেষটা যেন শুরুতে ফিরিয়ে আনে। এ জন্য গল্পটাকে আরও চমকপ্রদ মনে হয়েছে। <br /><br />৩.<br />গল্পের সারাংশটা আমার ঢঙে, সহজ করে একটু বলি, এতে সহজে আলাপটা আলাপযোগ্য মনে হবে! <br />:: <br />তো সেউজগাড়ি মহল্লার মানুষের রাত এক আতংকের নাম। তারা রাতকে ভয় পায়। তাই তাদের রাতের নিরাপত্তা চাই। মহল্লাবাসীদের বিষ রক্ষার জন্য, ঘুম রক্ষার জন্য দু'জন নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়। নিরাপত্তাকর্মীদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য তারা রাত পাহারা দেয় বাঁশি বাজিয়ে। এতে মহল্লার সবাই নিশ্চিতে ঘুমায়। জানে যে, বাঁশি বাজছে, পাহারা হচ্ছে রাতের। রাত পাহারা দেওয়ার অর্থ তাদের ঘুম ও বিষ পাহারা দেওয়া। <br /><br />রাতের সে বাঁশি শুনে মহল্লার বালকদের ফুটবল মাঠের কথা মনে পড়ে। বাঁশি শুনে মহল্লার তরুণদের প্রেম সংগ্রহের ইচ্ছা জাগে। বাঁশি শুনে ওদের কবিতা লিখতে ইচ্ছে করে।<br /><br />অর্থাৎ বাঁশি শুনে তাদের মনের ভয় দূর হলে তারা সুখ অনুভব করে। ভয় থাকে না, ভয় দূর হয়। আর ভয় দূর হলে মানুষ উৎসবে মাততে চায়। শখের জাগরণ ঘটে। তাই বাঁশি বাজে। তরুণীরা শাড়ি পরার চেষ্টা করে। শাড়ি পরার কৌশল শেখার চেষ্টা করে। কিন্তু ওদের তো নিজস্ব কোনো শাড়ি নেই। মায়েদের দাদিদের, নানিদের শাড়িগুলো অধিকার করতে চায়। অথাৎ এই সমাজ, রাষ্ট্র এতটা মূঢ়তায় চলে গেছে যে, ভুলতে বসেছে নিজের ঐতিহ্যকে। এই জেনারেশন এখন ধারণ করে মর্ডান কালচারকে। অথচ পুরোনো ঐতিহ্য মানে সাবলীল সুখকে আলিঙ্গন করা। <br /><br />এই সুখ সুখ অনুভূতিও শেষ হয়, একদিনের তুমুল বৃষ্টিতে। এই বৃষ্টিতে বালকদের দল দেখে, ওদের ফুটবল ভেসে চলে যাচ্ছে। তরূণদের দল দেখে, ওদের প্রেম ভেসে যাচ্ছে। তরূণদের দল দেখে, ওদের শাড়ি ভেসে যাচ্ছে। তারপর বৃষ্টি থেমে গেলে, পড়ে থাকতে দেখা যায়, মৃত ফুটবল, মৃত প্রেম, মৃত শাড়ি। এভাবে ওদের সুখও শেষ হয়। <br /><br />তারপর আবার দুশ্চিন্তার দেখা দেয় মহল্লায়।নজরুলের মুদির দোকানের সামনে আলোচনা বসে। যে মুদির দোকান সেউজগাড়ি মহল্লার তথ্যকেন্দ্র। এ মহল্লার সকল তথ্য, সবার তথ্য এখানে জানা যায়। আলোচনা হয়, কীভাবে হারিয়ে যাওয়া ঘুম ও বিষ পুনরুদ্ধার করা যায় সে বিষয়ে।<br /><br />সে সময় রাত পাহারাদার দুজন আসে। রাত পাহারা কেমন চলছে জিজ্ঞেস করলে ওদের, ওরা বলে, তারা জানায় কাঁধের পেঁচা দু'টো জানে, রাত কতটুকু নিরাপদ অবস্থায় আছে। পেঁচারা রাতের ভাষা বোঝে। তারা পেঁচার ভাষা বোঝে। আর তাদের বাঁশি তাদের ভাষা মান্য করে। ওদের জিজ্ঞেস করে হলো, কীভাবে হারিয়ে যাওয়া ঘুম ও বিষ পুনরুদ্ধার করা যায়? ওরা বলে একজন চিকিৎসক আছে, সে পুনরুদ্ধার করতে পারে হারিয়ে যাওয়া ঘুম ও বিষ। সেই চিকিৎসককে নিয়োগ দেওয়া হয়। চিকিৎসাবীদ রওশন জানায় নারীর পোশাক নারীর জন্য একটা ওষুধ। শিশুদের সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে সে সঠিক মাত্রার ঘুম ও বিষ সংরক্ষণ করতে চায়। সবাই তার চিন্তার সঙ্গে এক মত হয়। সে ধানের গল্প বলে, ধানবীজ সংরক্ষণের গল্প বলে। সে বলে, বীজেই আছে সকল ভবিষ্যৎ। প্রতিটি ভালো বীজে জমা থাকে সঠিক মাত্রার ঘুম ও সঠিক মাত্রার বিষ। শিশুরা তো বীজ। <br /><br />হঠাৎ একদিন রওশন আলীর ক্লিনিকে অনেক পুলিশ। শিশুরা নাকি হারিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ে শিশুশূন্যতা, মাঠে শিশুশূন্যতা। শিশুরা কোথায়? শিশুদের সন্ধানে পুলিশ ব্যর্থ হলে গত রাতে তাদের দেখা হয় এক দিদার নামক ফকিরের সঙ্গে। দিদার ফকিরের চুল থেকে বের হওয়া সময় তারা একটা গল্প অনুসরণ করে পৌঁছে যায় শিশু সমাধিক্ষেত্রে। তারা ঘুম হারিয়ে বিষ হারিয়ে গড়াতে গড়াতে চলে গেছে সমাধিক্ষেত্রে। যদিও পুলিশ বোঝে না ঘুম হারালে, বিষ হারালে কেন শিশুরা কংকাল হয়ে সমাধির ক্ষেত্রে যায়। জানবেইবা কি করে? এই মর্ডান সোসাইটির মানুষদের জীবনে যে সুখ নেই, কিন্তু তারা জানেও না, কেন সুখ নেই তাদের! তারা জানে না, এই অসুখ কেন জেনারেশনের পর জেনারেশন ধরে ছড়িয়ে পড়ছে। আহা জানেও না যে, সভ্যতা তাদের আধুনিকতা নামে দিয়েছে অসুখ। <br /><br />রওশন আলীর সনদ নকল প্রমাণিত হলে, সেউজগাড়ির মানুষেরা তাকে ঘুমচোর, বিষচোর বলে। সনদ নকল প্রমাণিত হওয়ার পর এখন রওশন আলীর বিবেচনা ও আদেশ এই যে, সেউজগাড়ির সবাইকে প্রমাণ করতে হবে, তাদের নিজের আসল সনদপত্র আছে! <br /><br />সেউজগাড়ির সবাই মোমবাতি নিয়ে নিজ নিজ বনে যায়। নিজ নিজ বৃক্ষের শিকড় খুলে নিজ নিজ আয়নার সামনে দাঁড়ায়। তারপর টের পায় তাদের সকল সনদ মেয়াদোত্তীর্ণ। তার পিছনে রেখে এসেছে তাদের সুখ। তারা পিছনে রেখে এসেছে তাদের ঐতিহ্য। তারা সভ্যতার দৌড়ে কেবল নিজেকে বিকিয়ে দিয়েছে। সুখ খুঁজতে খুঁজতে এরা সুখকেই পিছনে ফেলে এসেছে। এরা নিজের জন্য রাখা সময়কে সভ্যতার হাতে তুলে দিয়েছে। তার ফল জোটা জেনারেশন ধরে এই বিষের যন্ত্রণায় ভুগছে। তাই জন্মের শুরু থেকেই শিশুরা এর যন্ত্রণায়, তরুণেরা ধুঁকছে, প্রাপ্তরা হারিয়ে খুঁজছে নিজেদেরকে। <br /><br />৪.<br />জগতের সকল বিষয়ই তো আমার কেন জানি অমীমাংসিত মনে হয়। সমাধানহীনতাই জেনো, জগতের চরম সত্য। গল্পে গল্পে বলা এই অসুখের কি কোনো সমাধান আছে? আপনি জানেন? গল্পকারও এর সমাধান দেননি। ফিরে গেছে শুরুতে। <p></p><p><br />শেষ প্যারা এমন করে লেখা, <br /><br /></p><blockquote>বাঁশি বাজে। সেউজগাড়ির রাত, ঘুম, বিষ পাহারা দিচ্ছে দুজন বামন, দুটা পেঁচা, দুটা বাঁশি। দিদার ফকিরের চুল রাতের সমান দীর্ঘ হলে ঠকঠক করে লাঠি হাতে তাদের পিছনে পিছনে আছে দিদার ফকির।</blockquote><br /><br />এই যে সমাধানহীনতার মাঝে একই অসুখে বারবার বারবার চক্রাকারে ঘুরছে ভাঁওতাবাজির এই বিলাসী সমাজ ও সভ্যতা, তার থেকে রক্ষা পাবে মানুষ? পাবে না, কেননা সেই মডার্ন সোসাইটির সবাই হিপোক্রেট। গল্পের পাহারাদার, ও রওশনসহ প্রতিটি চরিত্র যেমন হিপোক্রেট, তেমনই বাস্তব জগতের সবাইও একেকটা হিপোক্রেট। জগতের ভালো করতে এসেই মানুষ হিপোক্রেসিতে লিপ্ত হয়। এই তো স্বভাব মডার্ন মানুষ তোমার!<br /><br />তো এই সমস্যার সমাধান রয়েছে? <br /><br />ছোট থেকেই তো শিশুরা শেখে তার স্বভাব ও প্রকৃতি সমাজ, পরিবেশ ও পরিস্থিতি থেকে। মন্দ শিখলে মন্দ থাকে। আর এমন সময়ে আছি আমরা মন্দ শেখা ছাড়া কোনো উপায়ও নাই। শেষ পর্যন্ত আমরা অসুখে চক্রাকারে ঘুরতে থাকি। তাই গল্পকারও থেকে গেছে সমাধানহীন। <br /><br />অমর একুশে বইমেলা ২০২৪-এ “কেউ মরছে না” উপন্যাসটি পাওয়া যাচ্ছে দেশ পাবলিকেশন্সের স্টলে। প্রচ্ছদ বিধান সাহা<p></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-38862093929609891422024-02-15T20:26:00.007+06:002024-02-15T20:26:51.440+06:00মুনিয়ার অসুখ - মাসউদ আহমাদ<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhjtuhC_RauVAA0UhZ2brJA_K4Rf4NKO0zBZ1hHOZdQEamyf1_W9UjJRtl7r5rPVzsLKFChKqH-U4D9409lQNVuNgomdtLV8lOEZYyJLSGyUCFdOzhkUJm8HCuw_BUJEx443tKodWV0xdzlkXblUTvfIa5pZfsx6zYME5rPCXPxPPgaG8hMxsp43mJ9Iuc/s500/muniar-ashukh-masud-ahmad.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="মুনিয়ার অসুখ - মাসউদ আহমাদ" border="0" data-original-height="500" data-original-width="327" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhjtuhC_RauVAA0UhZ2brJA_K4Rf4NKO0zBZ1hHOZdQEamyf1_W9UjJRtl7r5rPVzsLKFChKqH-U4D9409lQNVuNgomdtLV8lOEZYyJLSGyUCFdOzhkUJm8HCuw_BUJEx443tKodWV0xdzlkXblUTvfIa5pZfsx6zYME5rPCXPxPPgaG8hMxsp43mJ9Iuc/s16000/muniar-ashukh-masud-ahmad.jpg" title="মুনিয়ার অসুখ - মাসউদ আহমাদ" /></a></div><br />বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা এক আশ্চর্য তরুণ ফাহাদ আবির, ঢাকা শহরে টিউশনি করে চলে। প্রতিকূল পরিবেশ ও সময়ের সঙ্গে লড়াই করে সে এগিয়ে যায়। মায়ের মৃত্যুতে গ্রামে যাওয়ার পর প্রেমিকা নাবিলা নিরুদ্দেশ। ভালো পরীক্ষা দিয়েও সে চাকরি পায় না। বয়স ফুরিয়ে যাচ্ছে। বাবা মুক্তিযোদ্ধা, সনদ নেই। তিনি নেননি। সে ক্রমশ সিজোফ্রেনিক ডিজঅর্ডারের দিকে ধাবিত হয়। বাড়ি থেকে ফিরে অদ্ভুতভাবে দেখা হয় পূর্বপরিচিত মুনিয়ার সঙ্গে। মুনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক বছরের সিনিয়র; নতুনভাবে দেখা হওয়ার পর ফাহাদের জীবন বদলে যায়। করোনাকালীন স্তব্ধ সময় ও ছন্দপতনের অভিঘাত নিয়ে গড়ে উঠেছে উপন্যাস ‘মুনিয়ার অসুখ’। প্রেম, সম্পর্কের লাবণ্য ও আলো-অন্ধকারের আড়ালে এই উপন্যাসে বড় সত্য হয়ে খেলা করে সময়।<br /><br />******<br /><b>মুনিয়ার অসুখ<br />মাসউদ আহমাদ</b><br /><br />প্রচ্ছদ : মাসুক হেলাল <br />প্রকাশক: প্রথমা প্রকাশন, প্যাভিলিন ৫, অমর একুশে বইমেলা ২০২৪<p></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-32459423034936528272024-02-15T20:07:00.006+06:002024-02-15T20:11:25.872+06:00আমাদের কালের গোঁ ও অন্যান্য - অনিকেত শামীম<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiecneCv6uzgpmNkn1aY0227nGsX-TfXdcbMsqhSROf5AjINuh1mYZenPWGss3VAI8X6TkaklqjcTLEeVVVq8DPlF1jeksG0Eibk2397TlNy4MmdxqUvre7PJRKjI0AfHEUO-krWM9a5KS8ciiiidFjuYac0Si92XxoY873iy1Jz4UK-FY-Ip1S8Dx2bOM/s500/amader-kaler-gon-o-anyanya-aniket-shamim.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="আমাদের কালের গোঁ ও অন্যান্য - অনিকেত শামীম" border="0" data-original-height="500" data-original-width="310" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiecneCv6uzgpmNkn1aY0227nGsX-TfXdcbMsqhSROf5AjINuh1mYZenPWGss3VAI8X6TkaklqjcTLEeVVVq8DPlF1jeksG0Eibk2397TlNy4MmdxqUvre7PJRKjI0AfHEUO-krWM9a5KS8ciiiidFjuYac0Si92XxoY873iy1Jz4UK-FY-Ip1S8Dx2bOM/s16000/amader-kaler-gon-o-anyanya-aniket-shamim.jpg" title="আমাদের কালের গোঁ ও অন্যান্য - অনিকেত শামীম" /></a></div><br /><br />কবি ও সম্পাদক অনিকেত শামীমের জন্মদিনে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর প্রবন্ধগ্রন্থ ‘আমাদের কালের গোঁ ও অন্যান্য’৷ বইটি অমর একুশে বইমেলায় লিটলম্যাগ চত্ত্বরে ‘লোক’-এর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে৷<br /><br />অনিকেত শামীমের জন্ম ১২ ফেব্রুয়ারি, দেওয়ানপাড়া, জামালপুর। শিক্ষা : স্নাতকোত্তর, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। পেশা : চাকরি, ডিপিডিসি, উপমহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ)<br /><br />প্রকাশিত বই— তপোবনে তোপধ্বনি [উত্তরণ, ১৯৯১] দূরাগত পাহাড়ের গান [লোক, ২০০৮] অনিকেত শামীমের কবিতা [বাংলালিপি, ২০১৭] সম্পাদনা গ্রন্থ— আবার একটা ঝড় উঠুক [বিপ্লবের কবিতা সংকলন, ১৯৮৮] মায়াবী টানে ডাকে মতিহার [১৯৯২] সম্পাদিত সাহিত্যপত্র— ‘উত্তরণ’, ‘খৈ’, ‘লোক’।<br /><br />‘<b>আমাদের কালের গোঁ ও অন্যান্য</b>’ বইয়ের সূচিপত্র:<br /><br /><p></p><ul style="text-align: left;"><li>বঙ্গদর্পণ : বাঙালির সহস্রাব্দ- সন্ধানী আলেখ্য</li><li>মহাকাব্যিক নির্মলেন্দু গুণ আশ্চর্য প্রেমিক ও ব্যর্থ বিপ্লবী</li><li>সুস্থধারার চলচ্চিত্র আন্দোলনে অনিবার্য নাম মুহম্মদ খসরু</li><li>কবি কামাল চৌধুরী অথবা একজন কামেল কবির দ্রোহ ও নৈঃশব্দ্যের মুশায়রা</li><li>সলিমুল্লাহ খান: আমাদের কালের বাগ্মী, জ্ঞানময় উজ্জ্বল বাতিঘর</li><li>পারভেজ হোসেনের সুবর্ণপুরাণ: বাংলা উপন্যাসে নতুন যোজনা</li><li>সেলিম মোরশেদ: প্রতিষ্ঠানবিরোধিতার লিভিং লিজেন্ড ও আমাদের কালের গোঁ</li><li>খেয়ালি সত্তার ব্রতচারী কবি শেখ ফিরোজ আহমদ</li><li>পানশালারও অনেক উঁচুতে বসে আছি আমি আর স্বপন</li><li>অন্তর্ব্যঞ্জনা ও নিগূঢ় অনুভবের কবি মাহবুব কবির</li><li>মাতিয়ার রাফায়েলের কবিতা: লিখিত ভাষার অনুচ্চারিত কুটুম্বিতা</li><li>রহমান হেনরী: কবিতার কারিগর, সময়ের অনন্য কবিপ্রতিভা</li><li>একজন উপকূল পরিপুত কবি হাসান মাহমুদ</li><li>পাহাড়ে ওঠার ক্লান্তিতে শামীম রেজা</li><li>কবি ও অভিনেতা তারেক মাহমুদ: অকালে চলে গেলে বন্ধু!</li><li>জ্যোৎস্না উপভোগ, ঠেকি বাংলা এবং একটি কবিতার জন্ম</li><li>উত্তাল শাহবাগ : মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তারুণ্যের উদ্দীপনা</li><li>উত্তাল শাহবাগের বিপরীতে হেফাজতের লংমার্চ এবং ১৩ দফা</li><li>সমুদ্রমাধুরী, উপকূল সৌরভ ও আমার ভ্রামণিক কবিতাগণ</li></ul>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-55220394932063241712024-02-15T20:02:00.003+06:002024-02-15T20:02:38.922+06:00আদিবাসিতার ঝরনাতলায় - হাফিজ রশিদ খান<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjszpn_WPaXKVP_hGOTDZXzFd49M1X35UZ2z8R85VDHHd8ItcHxmeA-bECZFPYXhA2pP-66WzcmHivQF-fNbuCsRHCi9LAKwMGkCapvRTBx06QPb_FRfG6OqO-fcOGsaUbYTLwYB_2c6bE1I1ksQhzNOlVx310mzeu4U_e0q-dX9PfBf2CN8e5Qxm03SZc/s500/adibasitar-jharnatalay-hafij-rashid-khan.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="আদিবাসিতার ঝরনাতলায় - হাফিজ রশিদ খান" border="0" data-original-height="500" data-original-width="307" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjszpn_WPaXKVP_hGOTDZXzFd49M1X35UZ2z8R85VDHHd8ItcHxmeA-bECZFPYXhA2pP-66WzcmHivQF-fNbuCsRHCi9LAKwMGkCapvRTBx06QPb_FRfG6OqO-fcOGsaUbYTLwYB_2c6bE1I1ksQhzNOlVx310mzeu4U_e0q-dX9PfBf2CN8e5Qxm03SZc/s16000/adibasitar-jharnatalay-hafij-rashid-khan.jpg" title="আদিবাসিতার ঝরনাতলায় - হাফিজ রশিদ খান" /></a></div><br />এই বই তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি বান্দরবান খাগড়াছড়ির তিন প্রজন্মের কবি, চারুশিল্পী, সাহিত্যিক, গায়ক, শিক্ষক ও শিক্ষাবিদ, গবেষক, উন্নয়নভাবুক, নারীনেতৃত্ব, লিটলম্যাগ সম্পাদক, প্রকাশক, সমাজকর্মী, বাগানবিদ, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, আদিবাসী শিশুদের শিক্ষা, ভাষাচিন্তা, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি, আদিবাসী কর্তৃক লিখিত ও প্রকাশিত বই, বাংলাভাষী লিখিত আদিবাসী বিষয়ক গ্রন্থ, চলচ্চিত্র নির্মাতা, আলোকচিত্রী, নাটক ও নাট্যকার, পাহাড়ের ভাষা ও বাংলা ভাষায় রচিত কবিতা, গানের মানুষ, মণিপুরী কবি ও কবিতা, গারো কবি ও কবিতা প্রভৃতি বিষয়কে খুব কাছ থেকে দেখা ও বুঝতে চাওয়ার এক অকপট দলিল হতে চায় বাংলাদেশের মানুষ ও চলমান সময়ের হাতে।<br /><br />প্রসঙ্গক্রমে লেখক জানান - <br /><br /><blockquote>এই 'আদিবাসিতার ঝরনাতলা'কে ২০২১ সালের মহান একুশের বইমেলায় প্রকাশিত আমার ২৪টি প্রবন্ধ সম্বলিত 'আদিবাসী সাহিত্যের দিগবলয়' এবং 'নির্বাচিত কবিতা : আদিবাসীপর্ব' (২০২২) গ্রন্থের পরিপূরক বলা যাবে।</blockquote><br /><br />প্রচ্ছদ করেছেন পরাগ ওয়াহিদ<br />প্রকাশক: অক্ষরবৃত্ত প্রকাশন<br />প্রকাশকাল: মহান একুশের বইমেলা ২০২৪<p></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-16793431259118972222024-02-15T19:50:00.005+06:002024-02-15T19:56:03.499+06:00আকিমুন রহমানের গল্প 'জলের সংসারের এই ভুল বুদবুদ' : এক ভুলমানুষের আখ্যান - মোহাম্মদ আলি<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhP-Jv0aTQXZnEsYa4ekEsDaeJxLXcrbhyXaUg3HNH4J1zNFuOcmaa-CNS9MpGNLd9tgOxA9cjQEa6EUFW1w6VkBwWNEvO3HIckC_Q9KBPVu-acuNOLzvorzQFyawNPvojc8MX7Qp8Uk-gqm9hIxXASkJ4O_BRSnHW161hgEd-S67tIguo_6xMDfVH-30g/s500/jaler-sangsarer-ei-bhul-budbud-akimun-rahman.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="আকিমুন রহমানের গল্প 'জলের সংসারের এই ভুল বুদবুদ' : এক ভুলমানুষের আখ্যান - মোহাম্মদ আলি" border="0" data-original-height="500" data-original-width="328" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhP-Jv0aTQXZnEsYa4ekEsDaeJxLXcrbhyXaUg3HNH4J1zNFuOcmaa-CNS9MpGNLd9tgOxA9cjQEa6EUFW1w6VkBwWNEvO3HIckC_Q9KBPVu-acuNOLzvorzQFyawNPvojc8MX7Qp8Uk-gqm9hIxXASkJ4O_BRSnHW161hgEd-S67tIguo_6xMDfVH-30g/s16000/jaler-sangsarer-ei-bhul-budbud-akimun-rahman.jpg" title="আকিমুন রহমানের গল্প 'জলের সংসারের এই ভুল বুদবুদ' : এক ভুলমানুষের আখ্যান - মোহাম্মদ আলি" /></a></div><br />মানবাংলার একচেটিয়া অত্যাচারে বাংলা কথাসাহিত্যের জান যায়-যায়। বাংলাসাহিত্য এখন রাজপথ থেকে নামতে নামতে এলাকার গলিঘুপচি বেয়ে কানাগলির দিকে প্রায়। নতুন আর কোনো পথ, নতুন গল্প বলা বা 'না-বলা'র পথ সে আর পাচ্ছে না; এক 'নতুন ভাষা'র নির্মিতি তাকে দিয়ে অসম্ভবপ্রায়। কথাসাহিত্যশিল্পের নতুনত্ব সাহিত্যিকের প্রধানতম অন্বেষা—এ কোনো নতুন বিষয় নয়। কে না জানে, শিল্পী নিজেকে দাঁড় করান তাঁর মাঠের অন্য অনেককে ভেঙে দিয়ে—অন্যের প্রতিষ্ঠিত চিন্তার ধরনকে নতুনত্ব দিয়ে, কিংবা সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়ে। অন্যকে ভেঙে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা যেমন, আবার নিজের প্রতিষ্ঠিত কর্মকে ভেঙেও নতুনকে সৃষ্টি করেন তেমনি। এটা তাঁর শিল্পঅহংকে পৃথিবীর কাছে জানান দেয়া যেমন, তেমনি রয়েছে শিল্পের কাছে তাঁর দায়বদ্ধতা জানানোর ভাবল্পটিও।<br /><br />আকিমুন রহমানের অন্যান্য সৃষ্টিকর্মসহ 'জলের সংসারের এই ভুল বুদবুদ' গল্পবইয়ের নামগল্পটা পড়ে খুব শক্তভাবে ওপরের কথা-কয়টা মনে গেঁথে গেল। জানি, আমাদের অঞ্চলসংস্কৃতিবৈচিত্র্য অনেকের চাইতে উন্নত। অঞ্চলসাহিত্য এখানে দুর্ধর্ষ, মানুষের গভীরতম উপলব্ধির স্মারক এর ছত্রে ছত্রে। আঞ্চলিক ভাষাবৈচিত্র্য এখানে নরনারীর প্রেমপাগলামির চাইতেও দুরন্ত। কিন্তু মানবাংলার একচেটিয়া সম্রাটিপনার কাছে এখন পর্যন্ত পরাজিত তা। মধ্যবিত্তসৃষ্ট মূলধারার সাহিত্য দিয়ে এই কৌমসামাজিক চিন্তাকে ধাক্কা দিতে হবে। এই কথাগুলোর ধারক হয়ে আছে আকিমুন রহমানের 'জলের সংসারের এই ভুল বুদবুদ' নামীয় ৩২ পৃষ্ঠার গল্পটি। গল্পটির ভাষা অভিনব। গল্প বলায় আছে শিল্পচাতুরি। আছে গল্পের ঘটনা-উন্মোচন সবার শেষে। যে মহৎ ভাবের উদয় হয় গল্পশেষে তা অবিশ্বাস্য করুণার, তা প্রবল কান্নার ও নিদারুণ কষ্টের। মানুষ হয়ে দিন গুজরানোর বিষম প্রতিফল তা। <br /><br />পাঠকমাত্রই জানা, লেখকের বয়ানভাষা অভিনব। এবং তা পুরাতনি কোনো বয়ানভাষা দিয়ে নয়, আকস্মিক ও নতুন বলার ভঙ্গি দিয়ে—নিজের কাছে তাঁর যে দায়, তা দিয়ে, বাংলাসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ পাঠকের দায় নিয়ে। তাঁর অন্যান্য রসসাহিত্যকর্মের চাইতে 'জলের সংসারের এই ভুল বুদবুদ' গল্পটা কিছুটা অন্যরকম। একই মলাটের ভিতরে ভিন্ন ভিন্ন ৬ গল্পে দারুণ এক ঐক্য ঘটিয়েছেন তিনি; যে ঐক্য আমাদের এখানকার গল্পসাহিত্যে দেখাই যায় না প্রায়। এই যে আমাদের উপরিতলের সহজ জীবনের মধ্যে ভুল জীবনগুলি ঠাসা আছে, এবং তা আমাদের জানাশোনার একেবারেই গণ্ডির ভেতরে এবং যাকে এতকাল উপেক্ষা করে আছে আমাদের সাহিত্য, তারই মিলমিশ আছে এই বইতে, এ গল্পগুলিতে। এ গল্পগুলির প্রধান চরিত্রের কেউ কেউ জন্মান্ধ, কেউ ল্যাংড়াখোড়া, মনোবৈকল্যধারী, কেউবা পাগল। এরা সবাই লেখকের 'জলের সংসারের ভুল বুদবুদ'। <br /><br />বদ্ধোন্মাদ এক গ্রাম্য মেয়ে দিলরুবা। অভাব-অনটনের, বহু পরিবারসদস্যবিশিষ্ট এক মানুষ সে। ৪ বছর বয়স পর্যন্ত জলের সংসারের মানুষই ছিল সে। এরপর ঘটনাক্রমে রূপান্তরিত হয় ভুল বুদবুদে। আর ২২ বছর বয়সে যে তার মহা-লয় হবে, গল্পশেষে তা অনুমেয়। <br /><br />গল্পটা কেমন একটা ভয়মেশানো, আমরা যাকে বলি ভয়ানক রসের। মায়ের সাথে ৯ মাসব্যাপী দিলরুবা যায় তার নানিবাড়ি। বাবার অভাবী সংসারে টিকতে না পেরে বছর-বছরে পরিবারটির এ ব্যবস্থা। দিলরুবার বয়স যখন ৪, একবার নানি তার মেয়ে, মানে দিলরুবার মাকে বলে নির্ধারিত সময়ের চাইতে একটু দেরি করে আসতে। কেননা, বাড়িঘর ঠিকঠাক তো করতে হবে। শুনে বদরাগি মেয়েজামাই খেপে ওঠে। এ কেমন শাশুড়ি, মেয়েকে নাইওর নিতে চায় না, অলক্ষুণা! অভিশাপ দেয় সে। বিড়ম্বিত শাশুড়ি মেয়েজামাইকে হাতেপায়ে ধরে নির্ধারিত সময়েই দিলরুবা তার মা ও বড়ভাইসহ আসতে বলে তার বাড়িতে। ঘটনা ঘটতে দেরি হয় না মোটেও। ঘটনা নয়, দুর্ঘটনা। শুকনা, খটখটা দিনে হুট করে ঝড় ওঠে। দুই ভাইবোন ভয় পেয়ে খেলা থেকে দ্রুতপায়ে ঘরে ঢোকার পরপরই ঠাটা পড়ে ভাঙচোরা ঘরে, যে ঘর তাদের আসার আগে আগে ঠিক করতে চেয়েছিলেন নিঃসঙ্গ নানি। দুর্দৈবে পড়ে দুই ভাই-বোন অজ্ঞান হয়ে যায়। বড় ভাইটি ঠিকই সুস্থ হয়ে ওঠে। কিন্তু দিলরুবা মাথায় বড়সড় ঘা নিয়ে সুদীর্ঘকাল অজ্ঞান হয়ে থাকে। এ দেখে পাড়াপ্রতিবেশীরা ধিক্কার দেয় নানিকে, কেন তারা মেয়েটাকে কবর দিচ্ছে না। একদিন জ্ঞান ফিরে পায় সে। কিন্তু মা আর নানি বুঝতে পারে, জ্ঞান না ফিরলেই বরং ভালো হতো তার। মস্তিষ্কবিকৃতি তাকে পেয়ে বসে, পা বেঁকে যায়, কথার শক্তি হারিয়ে ফেলে। অনেক ডাক্তার দেখানো হয়। সবাই এক কথায় বলে—এভাবেই বাকি জীবনটা তার কাটাতে হবে। এলাকার কবিরাজি ডাক্তার হাল ছাড়েন না। তিনি বিধান দেন, এটা-ওটা করে পুকুরের পানিতে গলা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে হবে এবং তা যেনতেন সময়ে নয়, জমজমাট অন্ধকার থেকে ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত। এই ব্যবস্থার প্রথম দিন থেকেই দিলরুবা তার বন্ধুদের আহ্বান পায় ঐ ঘুটঘুট্টা অন্ধকারেই। প্রতিদিনই এরকম পায় সে। একদিন তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে পুকুরের পানি থেকে উঠে আসে। এ ঘটনার পর থেকেই সে পাগল হয়ে যায়। তার বন্ধুরা সে সময় থেকেই তার সঙ্গী হয়ে পড়ে। আর দিলরুবা হয়ে পড়ে অসহায়। নির্দয় পৃথিবীতে বিচ্ছিন্ন এক মানুষ। যতদিন নানি বেঁচে ছিল তার যত্ন হয়েছিল, এর পরে যা হয় 'ভুল বুদবুদ'-দের—মা, বাবা, ভাইবোনরা তার মৃত্যুর জন্য অহরহ কামনা করতে থাকে। তার নানিও তাকে শিখিয়ে যায় কীভাবে তার নিজের মরণকে ডেকে আনা যায়। একসময় তার ২২ বছর পূর্ণ হয়। পরিবারসদস্যদের কোনো এক অসতর্ক মুহূর্তে তার গায়ে সার্বক্ষণিক বাঁধা শিকলটি আলগা হয়ে পড়ে। তার অশরীরী বন্ধুদের এদ্দিন বাধ্য হয়ে উপেক্ষা করতে হয়েছিল শিকল দিয়ে বাঁধা থাকার কারণে, এবার মুক্ত হয়ে তাদেরই প্ররোচনায় সে এক বাস ধরে চলে যেতে উদ্যত হয় কোনো এক দূরদেশে, যেখানে কেউই তাকে উৎপাত করতে আসবে না, সবাই তার ভাষা বুঝবে, সবাই তাকে সমাদর করবে।<br /><br />ভুল মানুষ, ভুল সময়, ভুল সিদ্ধান্তে দিলরুবার যে কাল হল, আমরা বুঝি। সে তো স্বাভাবিক মানুষ হয়েই জন্মেছিল। অনেকগুলো ঘটনার শিকার হয়ে তার যে এ অবস্থা হয়, তা আমাদের আর বুঝতে বাকি থাকে না। তাকে অবহেলার, তাকে উপেক্ষার, তাকে অযত্নের খুব খুব বয়ান আছে গল্পটাতে। এবং সেটা একবার লেখকের বয়ানের মাধ্যমে, আরেকবার দিলরুবার নিজের বয়ানে। কিন্তু পরিবারের লোকদের দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো বয়ানে তিনি যান না। দিলরুবার মন ও শরীরই তাঁর অন্বিষ্ট। এ এক আশ্চর্য কৌশল লেখকের। মানবাংলা ও আঞ্চলিক ভাষার মিশেলে নিজের বয়ান এগোয় একবার, তারপর চলে দিলরুবার নিজের মুখের বয়ান। আঞ্চলিক ভাষার ব্যাপারে লেখকের চলন ধীরস্থির প্রথমে। ক্রমে তা চড়তে থাকে। আঞ্চলিক ভাষাতেই তিনি যে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, পাঠ-অভিজ্ঞতা বলে, সে-ই স্বাভাবিক। কিন্তু লেখক এরপর খোলা তরবারি চালিয়ে, ক্রমে ক্রমে আঞ্চলিক ভাষাপ্রধান বয়ানে ঘটনা ও গল্পের মূলভাবকে চিত্রিত করতে থাকেন। এ শুধু অভিনব সাহিত্যকর্মই নয়, এক নতুন সাহিত্যচাঞ্চল্য তা।<br /><br />গল্প-সময়কে ভেঙেচুরে, গল্পকে লম্ব-প্রতিলম্ব করে, কাহিনিকে নির্দিষ্ট একটা বিন্দুতে ঝুলিয়ে রেখে, শক্ত গাঁথুনি দিয়ে বলাতে লেখক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন—এ তাঁর কোনো নতুন করণকৌশল নয়; কিন্তু যে ধরনধারণ দিয়ে গল্পটিকে আমাদের মাধ্যমে পাঠ করিয়ে নেন, তা নির্বিষ নয় মোটেও, পাঠশেষে এক অন-উপম বিষব্যথা রক্তের মধ্যে ঢুকিয়ে দেন তিনি—তা একই সাথে বেদনার যেমন, তেমনি আনন্দের—গল্পপাঠের আনন্দ তা, রস-আস্বাদনের আনন্দ তা। <br /><br />'কে না জানে সকল শেকলই জলের কাছে গিয়ে হেলেঞ্চার লতা হয়ে যায়'—এরকম একটা রোমহর্ষক কথার অনুরণন তুলে গল্পটি যখন শেষ হয়, তখন মহাকালের জমানো দুঃখমেঘ এই ভুলজন্মগুলির জন্য টপটপ করে পড়তে থাকে মন বেয়ে। যেন প্রতিটা বিন্দু বলতে থাকে, বলতেই থাকে—ভুল বুদবুদগুলি যদি অঙ্কুরেই নষ্ট হত তাহলে মহাকালকে খুব করে দোষ দিতে পারত না এই পৃথিবীর জলের সংসারের এই মানুষেরা।<br /><br />-----------------------------------------------<br /><b>জলের সংসারের এই ভুল বুদবুদ<br />আকিমুন রহমান</b><p></p><p><b> </b><br />খড়িমাটি, চট্টগ্রাম<br />ফেব্রুয়ারি ২০২০ <br />প্রচ্ছদ : জন মহম্মদ<br />মূল্য : ২৫০ টাকা<br /></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-11131122661943801092024-02-15T19:44:00.007+06:002024-02-15T19:55:32.314+06:00কবিতার মায়াহরিণ কবির মঙ্গলযাত্রা - কামরুল হাসান<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg7UgT5BIP7ICZiWNiwKr_XGH0phWVUnJ_o4lSFuZCEfobWMJN5g3o3_t5qPgAJG_x-qLOvNSg_K8Fowa1lHm5msD4Oe4QyWBjtsEpbFJH-Id2NcrowxGVGLd82Vczx1GjmWhdyANUOU9212tGJayfi8WWBt5FT1ZtcVU_wEMQcNMAYiJI0ekUVK-Qis7U/s500/kobitar-mayaharin-kamrul-hasan.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="কবিতার মায়াহরিণ কবির মঙ্গলযাত্রা - কামরুল হাসান" border="0" data-original-height="500" data-original-width="336" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg7UgT5BIP7ICZiWNiwKr_XGH0phWVUnJ_o4lSFuZCEfobWMJN5g3o3_t5qPgAJG_x-qLOvNSg_K8Fowa1lHm5msD4Oe4QyWBjtsEpbFJH-Id2NcrowxGVGLd82Vczx1GjmWhdyANUOU9212tGJayfi8WWBt5FT1ZtcVU_wEMQcNMAYiJI0ekUVK-Qis7U/s16000/kobitar-mayaharin-kamrul-hasan.jpg" title="কবিতার মায়াহরিণ কবির মঙ্গলযাত্রা - কামরুল হাসান" /></a></div><br /><br /><b>‘কবিতার মায়াহরিণ কবির মঙ্গলযাত্রা’</b>য় প্রবন্ধ আছে ২৮টি। তাতে নজরুল, জীবনানন্দ যেমন আছেন তেমনি আছেন শামসুর রহমান, বিনয় মজুমদার। ষাটের চার কবি- সিকদার আমিনুল হক, আবদুল মান্নান সৈয়দ, হায়াৎ সাইফ ও মাহবুব সাদিকের কবিতা নিয়ে বিস্তারিত গদ্য রয়েছে। রয়েছে ষাট দশকের কবিতা নিয়ে আলোচনা। সত্তর দশকের কয়েকজন কবি- ফারুক মাহমুদ, মিনার মনসুর, সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল, জাহাঙ্গীর ফিরোজ, গোলাম কিবরিয়া পিনুর কবিতা নিয়ে প্রবন্ধ রয়েছে। আশির দশকের কবি- খোন্দকার আশরাফ হোসেন, রেজাউদ্দিন স্টালিন, রাজু আালাউদ্দিন, হাফিজ রশিদ খান ও বুলান্দ জাভীরের কবিতার বিশ্লেষণ রয়েছে গ্রন্থটিতে। গাণ্ডীব গোষ্ঠীর সাহিত্যকৃতি নিয়ে রয়েছে একটি ভিন্নমাত্রার প্রবন্ধ। নব্বই দশকের কবিতা নিয়ে একটি বিস্তারিত গদ্য রয়েছে এ গ্রন্থে। রয়েছে শামীম কবীরের কবিতাসমগ্র ও মাসুদ খানের একটি কবিতা নিয়ে আলোচনা। কবিতার গতিপ্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে তিনটি প্রবন্ধ যার শেষটি হলো বইটির নাম।<br /><br />প্রকাশক : চৈতন্য<br />প্রকাশকাল: বইমেলা ২০২২<br />প্রচ্ছদ : নির্ঝর নৈঃশব্দ্য<br /><br /><p></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-71266376072759272342024-02-15T19:41:00.004+06:002024-02-15T19:54:52.203+06:00এই নগরীর যত সাহিত্যবাসর- কামরুল হাসান<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEicY8WObZF3G3OGrDsPpP1RnFv_AneI1lLug-4KIT-2fO8rdD_kelTjtHnEDhHrk342h4mQJpGLaRGM3MRHdexQR0h2U6M6VCAA1McA6eW1v5YmgT0Eub5jg7ieGYQ55ILf7M1pCgL0IwlGqTiotEbZh_4cJ8FuBIuO0MlHPO7Inbj-r2brxEX8gCHlRT4/s500/ei-nagarir-jato-sahitya-basor-kamrul-hasan.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="এই নগরীর যত সাহিত্যবাসর- কামরুল হাসান" border="0" data-original-height="500" data-original-width="318" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEicY8WObZF3G3OGrDsPpP1RnFv_AneI1lLug-4KIT-2fO8rdD_kelTjtHnEDhHrk342h4mQJpGLaRGM3MRHdexQR0h2U6M6VCAA1McA6eW1v5YmgT0Eub5jg7ieGYQ55ILf7M1pCgL0IwlGqTiotEbZh_4cJ8FuBIuO0MlHPO7Inbj-r2brxEX8gCHlRT4/s16000/ei-nagarir-jato-sahitya-basor-kamrul-hasan.jpg" title="এই নগরীর যত সাহিত্যবাসর- কামরুল হাসান" /></a></div><br />বইটি প্রসঙ্গে লেখক বলেন, “<b>'এই নগরীর যত সাহিত্যবাসর'</b> রাজধানীর বিভিন্ন সাহিত্য অনুষ্ঠান নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে লেখা আমার বর্ণনামূলক গদ্যের নির্বাচিত গ্রন্থ। নগরীতে সাহিত্য অনুষ্ঠান হয় বা হয়েছে অসংখ্য। তাদের সকলকে ধারণ করা অসম্ভব ব্যাপার। আমি কিছু অনুষ্ঠানকে ধারণ করার চেষ্টা করেছি, যার ভেতর দিয়ে রাজধানীর বহুবিচিত্র ও বহুমাত্রিক অনুষ্ঠানগুলোর একটি হৃদস্পন্দন টের পাওয়া যেতে পারে। আমি যেহেতু সাংবাদিক নই, বরং কবি, আমার লেখায় সাংবাদিকসুলভ নিরেট ভাষ্য নেই, রয়েছে কাব্যিক স্পর্শ। আমার গদ্যের নিজস্ব ভঙ্গি, সুললিত টান ও ডিটেইলস অনেক লেখকের, তাদের মাঝে মহারথীরাও আছেন, মনোযোগ ও প্রশংসা পেয়েছে। এসব লেখার একটি দালিলিক ও কালিক মূল্য আছে। অনেকেই আমাকে সম্বোধন করেন আমাদের কালের একজন 'সাংস্কৃতিক দূত' হিসেবে।”<br /><br />প্রচ্ছদ: নির্ঝর নৈঃশব্দ্য<p></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-35009258013257774222024-02-15T19:36:00.008+06:002024-02-15T19:54:12.203+06:00পৃষ্ঠার বাইরে - এইচ বি রিতা<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEghdoXrSrLS7HloGIqklrngCbSTYJcDCvZyQoK7jSYhZhMlA_NP1qqylp-hR94DDFiaJYsPPuf0SO9skzAeJEm9mAHR2yzazvsTcr2tEq5oRCEeSvWBYgKRQNBYolmRu4xBbLkRc_aRbORwjM00CVSEtL8AgphnjAtydAtjEeWjPwvsNc_ns9OfWwnM_Ac/s500/pristar-baire-h-b-rita.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="পৃষ্ঠার বাইরে - এইচ বি রিতা" border="0" data-original-height="500" data-original-width="333" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEghdoXrSrLS7HloGIqklrngCbSTYJcDCvZyQoK7jSYhZhMlA_NP1qqylp-hR94DDFiaJYsPPuf0SO9skzAeJEm9mAHR2yzazvsTcr2tEq5oRCEeSvWBYgKRQNBYolmRu4xBbLkRc_aRbORwjM00CVSEtL8AgphnjAtydAtjEeWjPwvsNc_ns9OfWwnM_Ac/s16000/pristar-baire-h-b-rita.jpg" title="পৃষ্ঠার বাইরে - এইচ বি রিতা" /></a></div><br /><b>এইচ বি রিতা</b>'র মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বে রচিত গল্পের বই ‘<b>পৃষ্ঠার বাইরে</b>’৷<br /><br />জীবনের সব গল্প শুধু পৃষ্ঠার ভিতরে সংকলন করা সম্ভব নয়। কিছু গল্পের কাহিনী বুঝতে হলে তাকে ছড়িয়ে দিতে হবে পৃষ্ঠার বাইরে। আর এইরকম চৌদ্দটি ছোটগল্প নিয়ে এইচ বি রিতা’র গল্পের বই 'পৃষ্ঠার বাইরে।' প্রকাশ হয়েছে ঘাসফুল প্রকাশনী। প্রচ্ছদ করেছেন শামীম আরেফীন। বইটি এখন পাওয়া যাচ্ছে অমর একুশে বইমেলায় স্টল নম্বর ১৪৭-১৪৮।<br /><p></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-45118039583100595662024-02-15T19:30:00.006+06:002024-02-15T19:53:36.918+06:00 নিসর্গ<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjXHfjnrjd2vaxHpP96_pQtxpXq5eQzPqmw-wMGaoduX_VZJ56UtfkV9LlkHZq4EvHMn_fEH39R8aCQhNUzJDmYTLixlVi7LME3iYMPmPEtu_zGBzGE9RgqE5dVAPc5tW1Tj-24iL0QpuC3Chf_Nk1ESJBckna71AWar_BQRgefNDyf4cu6rcnjfSIE14s/s500/nishorgo.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="নিসর্গ লিটলম্যাগ" border="0" data-original-height="500" data-original-width="322" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjXHfjnrjd2vaxHpP96_pQtxpXq5eQzPqmw-wMGaoduX_VZJ56UtfkV9LlkHZq4EvHMn_fEH39R8aCQhNUzJDmYTLixlVi7LME3iYMPmPEtu_zGBzGE9RgqE5dVAPc5tW1Tj-24iL0QpuC3Chf_Nk1ESJBckna71AWar_BQRgefNDyf4cu6rcnjfSIE14s/s16000/nishorgo.jpg" title="নিসর্গ লিটলম্যাগ" /></a></div><br /><p>প্রকাশিত হয়েছে সাহিত্যের ছোটকাগজ 'নিসর্গ'। বইমেলাকে সামনে রেখে প্রকাশিত এই সংখ্যাটি বেশ সমৃদ্ধ। বেশ কয়েকটি মূল্যবান রচনা দিয়ে সাজানো এই সংখ্যাটি সাহিত্যপ্রেমী পাঠককে আনন্দিত করবে।<br /><br />নিসর্গ লিটলম্যাগের বর্তমান সংখ্যার সূচি<br /><br /></p><ul style="text-align: left;"><li><b>ক বি তা </b></li><li>দিপংকর মারডুক/ শৈবাল নূর/ সাফওয়ান আমিন/ ফরহাদ নাইয়া/ সুবাইতা প্রিয়তি/ জেসিকা আকতার/ জুবায়ের দুখু/ অদ্রিতি মেঘ</li><li><b>ক্রো ড় প ত্র</b></li><li>শিল্প-সাহিত্যের শক্তি</li><li>মাহবুবুল হক : ভাষার রঙ বদল ক্ষমতার হাত বদল সত্যের রূপ বদল</li><li>নন্দিতা বসু : সাহিত্যের শক্তি </li><li>শহীদ ইকবাল : মানবচেতনার নিরঙ্কুশ আওয়াজ </li><li>মাসুদুল হক : কথাসাহিত্যের শক্তি</li><li>শোয়েব শাহরিয়ার : কবিতার শক্তি</li><li>আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া : মহাকাব্যের শক্তি : প্রসঙ্গ মহাভারত-এর চৈতন্য, মানবিকতা ও মঙ্গল-অমঙ্গলের কথা</li><li>পল্লল ভট্টাচার্য : ছন্দে ছন্দে দুলি আনন্দে...</li><li>হাফিজ রশিদ খান : ছন্দের শক্তি, নানামাত্রায় কবিতার স্ফূর্তি</li><li>এলহাম হোসেন : অনুবাদের শক্তি : একটি পুনঃপাঠ</li><li>জিললুর রহমান : লিটল ম্যাগাজিনের শক্তি</li><li>সাইম রানা : সংগীত : শক্তি ও ক্ষমতায়নের সমাজমনস্কতা</li><li>মনিরুল ইসলাম : চলচ্চিত্রের সংগ্রাম ও শক্তি</li><li><b>ক বি তা</b></li><li>নির্ঝর নৈঃশব্দ্য/ উপল বড়ুয়া/ সাম্য রাইয়ান/ মাহমুদ মিতুল/ নীহার লিখন/ মুক্তি মণ্ডল/ চঞ্চল নাঈম/ শুভ্র সরকার/ অনুপম মণ্ডল/ রোজেন হাসান</li><li>সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা ও নারী</li><li>তপোধীর ভট্টাচার্য : সাম্প্রদায়িকতার বিষকুম্ভ</li><li>মুজিব রহমান : ধর্মান্ধতা ও মোল্লাতন্ত্রেরকালে নারী অধিকার, নারী শিক্ষা ও অপ্সরাদের কথা</li><li><b>গল্প</b></li><li>সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ : শেষ শয্যা অশেষ শয়ন</li><li>আবু হেনা মোস্তফা এনাম : ধূলি-ওড়া সন্ধ্যার দিকে</li><li>সরকার আশরাফ : হৃদয়শোধন অভিযান একটি রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ</li><li><b>কবিতা</b></li><li>রণক মুহম্মদ রফিক/ শরীফ শাহরিয়ার/ শাহীন শওকত/ ফজলুররহমান বাবুল/ মারুফুল আলম/ অজিত ত্রিবেদী/ শান্তা চক্রবর্তী/ মুজিব ইরম/ জওয়াহের হোসেন</li><li><b>চ ল চ্চি ত্র</b></li><li>বজলুল করিম বাহার</li><li>বার্গম্যান : তাঁর চলচ্চিত্র শিল্পরীতির স্বাতন্ত্র্য </li><li><b>অনুবাদ কবিতা</b></li><li>ফিলিস্তিনি কবি ও কথাশিল্পী হিবা আবু নাদা-এর ভাষান্তরিত কবিতা </li><li>ভাষান্তর : জহির হাসান</li><li><b>গ্রন্থালোচনা</b></li><li>ওসমান গণি : মুগ্ধতার পাঠ : বিস্তারিত অথবা বিস্মৃতি</li></ul><p><br /><br />**********<br />নিসর্গ, বর্ষ ৩৯ সংখ্যা ০১, ফেব্রুয়ারি ২০২৪, পাওয়া যাচ্ছে বইমেলা লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্টল নং ২৬এ।</p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-13647695739944681652024-02-11T23:59:00.000+06:002024-02-11T23:59:07.476+06:00সাহর - শাহরিয়ার খান শিহাব<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjiebfXuQU1hAxFzndb8SoXdWXzeUo1SFRyXlu9Sl3Y1Yk9gShfp1dpNXWy4JyB9uo1QZa4cRiTWB1LW9B8FJV5npj2j1HW33HEhnPiHjKXUaAOpay28qup4h6fPo9XxNaLsxch5xkb8VniKi6x8S3Axc3Ei1BmC5dTJt0pzX2u_cUkfbSGvmSBwMwHQOs/s500/sahar-shahariar-khan-shihab.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="সাহর - শাহরিয়ার খান শিহাব" border="0" data-original-height="500" data-original-width="328" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjiebfXuQU1hAxFzndb8SoXdWXzeUo1SFRyXlu9Sl3Y1Yk9gShfp1dpNXWy4JyB9uo1QZa4cRiTWB1LW9B8FJV5npj2j1HW33HEhnPiHjKXUaAOpay28qup4h6fPo9XxNaLsxch5xkb8VniKi6x8S3Axc3Ei1BmC5dTJt0pzX2u_cUkfbSGvmSBwMwHQOs/s16000/sahar-shahariar-khan-shihab.jpg" title="সাহর - শাহরিয়ার খান শিহাব" /></a></div><br /> <p></p><p>সত্য ঘটনার আলোকে রচিত অতিপ্রাকৃত উপন্যাস "সাহর"। <br /><br />বই সম্পর্কেঃ <br /><br /></p><blockquote>বড় হুজুর বলেন, শয়তান কাউকে নিজের দলে আসতে বাধ্য করে না। করতে পারেও না, সেই ক্ষমতাও তার নাই। সে শুধু আহ্বান করে, ফূস-মন্ত্র দেয়, ওয়াসওয়াসা দেয় আর তাতেই যারা সাড়া দেয় তারা বিপথে যায়।<br /><br />প্রাচীন বিশ্বদর্শনে সব কিছুর শক্তি তার উৎপত্তিতে থাকে। তাই কোন বস্তু, প্রাণী কিংবা উদ্ভিদের উৎপত্তি জানা তাদের উপর একটি জাদুকরী ক্ষমতা অর্জনের সমতুল্য বলে বলা হয়ে থাকে। যেভাবে কোন কিছু তৈরি করা হয় তা সেই জিনিসটির প্রকৃতি। প্রকৃত বা উৎপত্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ লাভ করা গেলে, সম্পূর্ণর উপর নিয়ন্ত্রণ লাভ করা সম্ভব হয়। বড় হুজুরের খোলা বিলের মাঝখান দিয়ে চলে যাওয়ার পথে তাকিয়ে থাকে আকবর ফিদা। দর্শনের পাঠটুকু নিজের মনে আওড়ায়। যতক্ষণ বড় হুজুরকে দেখতে পাওয়া যায় তাকিয়ে থাকে। একসময় আর তাকে দেখতে পাওয়া যায় না। </blockquote><br /><br />পাওয়া যাচ্ছে দেশের সর্বত্র অসংখ্য বইয়ের দোকানে এবং আপনার পছন্দের সকল অনলাইন বুকশপে! বইমেলায় থাকবে প্রথম দিন থেকেই আফসার ব্রাদার্স ৫৩০-৫৩৩ নং স্টলে।<br /><br />**********<br />সাহর<br />শাহরিয়ার খান শিহাব<br />প্রচ্ছদঃ আবরার আবীর<br />প্রকাশকঃ আফসার ব্রাদার্স।<br /><br /><br /><p></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-75948673632154267692024-02-11T22:16:00.004+06:002024-02-11T22:17:01.460+06:00আমার বর্ণমালা - মাসুম আওয়াল<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg51LhGQsJTVT9Hc5c2g1qIQpIbaXnK-ab0dfZNmzBScO3BgCecgn-r0Oo0Hj8nNymjCp9DNGukdC1If45LalRmFb4WD-4OG9ur42cpe8fsd_Vd5FTk8RgtyGuyrfAd_0iJsyrogp0dqg84NfbZNupGeLLodmWzKRLwoozDClSRiWAFxHMLEl2ou-b4nh4/s500/amar-barnamala.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="আমার বর্ণমালা - মাসুম আওয়াল" border="0" data-original-height="500" data-original-width="393" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg51LhGQsJTVT9Hc5c2g1qIQpIbaXnK-ab0dfZNmzBScO3BgCecgn-r0Oo0Hj8nNymjCp9DNGukdC1If45LalRmFb4WD-4OG9ur42cpe8fsd_Vd5FTk8RgtyGuyrfAd_0iJsyrogp0dqg84NfbZNupGeLLodmWzKRLwoozDClSRiWAFxHMLEl2ou-b4nh4/s16000/amar-barnamala.jpg" title="আমার বর্ণমালা - মাসুম আওয়াল" /></a></div><p><br />অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে মাসুম আওয়ালের <b>‘আমার বর্ণমালা’</b> সিরিজ। চারটি বইয়ের এই সিরিজের বইগুলোর নাম <b>‘আমার বর্ণমালা’, ‘বর্ণমালার পাখি’, ‘বর্ণমালার ফুল’ ও ‘বর্ণমালার ফল’</b>।<br /><br />চার বইয়েরই প্রচ্ছদ করেছেন মামুন হোসাইন। দুইটি বইয়ের অলংকরণ করেছেন আশফাকুল আশেকীন। <b>‘বর্ণমালার ফুল</b>’-এর ছবি এঁকেছেন তাসকিনা তাবাসসুম ও ‘বর্ণমালার ফল’-এর ছবি এঁকেছেন তাফহিম তানিসা।<br /><br />মাসুম আওয়াল জানান, এখানে প্রতিটি বইয়ের ছড়া পড়তে পড়তে সঠিক উচ্চারণে বর্ণমালা শিখবে শিশুরা। </p><p><b>‘আমার বর্ণমালা</b>’ বইটিতে বর্ণমালা শিখতে শিখতে প্রিয় বাংলাদেশ, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের প্রকৃতি, জাতীয় ফুল, ফল, পশু ও পাখি সম্পর্কে জানবে। যেমন- ‘অ তে জানি অমর একুশ/ অমর মাতৃভাষা,/ আ তে আমার আকাশ ভরা/ মায়ের ভালোবাসা।’<br /><br /><b>‘বর্ণমালার পাখি’</b> বইটি পড়তে পড়তে ৪০টির বেশি পাখির সঙ্গে পরিচিত হবে শিশুরা। যেমন- ‘হ্রস্ব ই তে ইমু পাখির/ উড়তে নাকি মানা,/ দীর্ঘ ঈ তে ঈগল পাখির/ মস্ত বড় ডানা।’ <br /><br /><b>‘বর্ণমালার ফুল’</b> বইটিতে ৫০টির বেশি ফুলের দেখা পাবে শিশুরা। যেমন- ‘গ তে গোলাপ গাঁদা’র মেলা/ ঘাস ফুল হয় ঘ তে,/ ঙ সেদিন আঙুর ফুলের/ দেখা পেলো পথে।’<br /><br /><b>‘বর্ণমালার ফল</b>’ বইটিতে আছে ৭০টির বেশি ফলের পরিচিতি। যেমন- ‘ঝ তে ঝুমকা ফলকে সবাই/ প্যাশন বলে ডাকে, আঞ্জির ফলের মাঝে ঞ/ মুখ লুকিয়ে থাকে।’<br /><br />বইগুলোর প্রকাশক কামাল মুস্তাফা বলেন,</p><p> </p><p></p><blockquote>আশা করি বাংলা বর্ণমালার সিরিজটি শিশুদের পছন্দ হবে। কারণ গতানুগতিক বাংলা বর্ণমালার বইগুলো থেকে এটি একটু আলাদা। আবৃত্তির জন্যও দারুণ ছড়াগুলো। বইমেলার প্রথম দিন থেকে এতে বেশ সাড়া মিলছে।</blockquote><br /><br />অমর একুশে বইমেলায় বইটি পাওয়া যাবে লিটলম্যাগ চত্বরে ‘দোলন’ এর ৪০ নাম্বার স্টলে। চার রঙে ছাপা ‘আমার বর্ণমালা’ সিরিজের মুদ্রিত মূল্য ৬০০ টাকা। মেলা উপলক্ষ্যে ২৫% ছাড়ে মূল্য ৪৫০ টাকা।<br /><br /><p></p><p></p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-292065371659577474.post-65800621516434028762024-02-11T22:08:00.001+06:002024-02-11T22:10:31.508+06:00চল্লিশের বাংলা কবিতা, মুক্তিযুদ্ধ ও স্মৃতির অনুরণন - গোলাম কিবরিয়া পিনু<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhoT7sUMBLylkgBHR3t5Hpplk1D5EUD4kPkze59HZhmqGyS1tr_nckBxJFS2-1vzafSwC97nX1a7YZ8ijvBbXtK5R-f_nSb6y0K0p8DcZlN8FVo7_2Nt5IXWlEhK-fzf3QQKZURg2oFdTz5jeJs8xcNT0xrYPwfi1fi6FfJbP9uou24rxfaD6tzZOfuwwQ/s500/challisher-bangla-kobita-muktijuddho-o-smritir-anuranan.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="চল্লিশের বাংলা কবিতা, মুক্তিযুদ্ধ ও স্মৃতির অনুরণন - গোলাম কিবরিয়া পিনু" border="0" data-original-height="500" data-original-width="326" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhoT7sUMBLylkgBHR3t5Hpplk1D5EUD4kPkze59HZhmqGyS1tr_nckBxJFS2-1vzafSwC97nX1a7YZ8ijvBbXtK5R-f_nSb6y0K0p8DcZlN8FVo7_2Nt5IXWlEhK-fzf3QQKZURg2oFdTz5jeJs8xcNT0xrYPwfi1fi6FfJbP9uou24rxfaD6tzZOfuwwQ/s16000/challisher-bangla-kobita-muktijuddho-o-smritir-anuranan.jpg" title="চল্লিশের বাংলা কবিতা, মুক্তিযুদ্ধ ও স্মৃতির অনুরণন - গোলাম কিবরিয়া পিনু" /></a></div><br /><br />গোলাম কিবরিয়া পিনু'র জীবন সমাজ ও সমকালের নানাবিধ অভিজ্ঞতা দিয়ে সাজানো প্রবন্ধের বই ‘চল্লিশের বাংলা কবিতা, মুক্তিযুদ্ধ ও স্মৃতির অনুরণন’<br /><br />প্রকাশিত হয়েছে অমর একুশে বইমেলা ২০২৪-এ। বইয়ের সমৃদ্ধ প্রবন্ধ সমূহের পরিচিতি পাওয়া যাবে সূচিপত্রে।<br /><br /><br /><b>সূচিপত্র</b><br /><br /><p></p><ul style="text-align: left;"><li>চল্লিশের বাংলা কবিতা: সুলুকসন্ধান ও চৈতন্যের বিন্যাস</li><li>ভূগোল: বিভাজন, অভিঘাত ও পরিবর্তন</li><li>চল্লিশের বাংলা কবিতা: পূর্ববঙ্গ</li><li>চল্লিশের বাংলা কবিতা: পশ্চিমবঙ্গ</li><li><b>পরিশেষ</b></li><li>শামসুর রাহমান: সৃজনমুখর আত্মশক্তি, ছিন্ন-ভিন্ন স্মৃতি ও অনুভব</li><li>মোহাম্মদ রফিক: আমাদের পরিধির কিছু স্মৃতি ও অনুভব</li><li>আসাদ চৌধুরী: স্মৃতির কোণায় কোণায় জেগে থাকা অনুভব</li><li>মুক্তিযুদ্ধের কবিতা : একটি অলোকসামান্য সংকলন</li><li>মুক্তিযুদ্ধ: গাইবান্ধার দৃশ্যপটে দৃষ্টিপাত ও অভিব্যঞ্জনা</li><li>ইতিহাসের ছিন্ন-ভিন্ন পাতা: অগ্নিযুগের বিপ্লবী মজিবর রহমান</li><li>মতিউর রহমান: মোমেনান রোড ও স্মৃতির পরম্পরায় ইতিহাস-চিহ্ন</li><li>বৃষ্টি নিয়ে ক'ফোঁটা গাইবান্ধার স্মৃতি</li><li>সংবাদ: জীবনব্যাপী লেপ্টে থাকা অনুষঙ্গ ও অনুভূতি</li><li>সংবাদের খেলাঘর পাতা ও খেলাঘর সংগঠন</li><li>উপসম্পাদকীয় কলাম ও আদর্শনিষ্ট মানুষেরা</li><li>সংবাদের খবর ও আমাদের ট্রাজেডি আবুল হাসনাত</li><li>'সংবাদ সাময়িকী' ও অন্যান্য প্রসঙ্গ উপসংহার</li><li>আমার তিনটি কবিতা রচনার পটভূমি</li><li>বঙ্গবন্ধু ও ধর্মনিরপেক্ষতা</li><li>বঙ্গাব্দ অনুযায়ী খাজনা: বাঙালির ঐতিহ্যের শেকড় কাটার দুঃসাহস</li></ul><p><br /><br />**********<br />চল্লিশের বাংলা কবিতা, মুক্তিযুদ্ধ ও স্মৃতির অনুরণন<br />গোলাম কিবরিয়া পিনু<br />প্রচ্ছদ : আনিসুজ্জামান সোহেল<br />প্রকাশক : কালের চিঠি<br />স্টল নং : ৬২৭<br />মূল্য : ৩০০ টাকা</p>গ্রন্থগতhttp://www.blogger.com/profile/00674984669281399123noreply@blogger.com0