'C/O ইব্রাহীম' কাব্য সম্পর্কে 'সীমা শামীমা'র সাক্ষাৎকার

'C/O ইব্রাহীম' কাব্য সম্পর্কে 'সীমা শামীমা'র সাক্ষাৎকার
অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০ এ প্রকাশিত হয়েছে সীমা শামীমার প্রথম কবিতাপুস্তিকা 'C/O ইব্রাহীম', প্রকাশ করেছে জলকথা প্রকাশনী; প্রচ্ছদশিল্পী অনূপ সায়ন্ত।  গ্রন্থমেলায় ৭১৯ নম্বর স্টলে পাওয়া যাবে বইটি। দাম রাখা হয়েছে ১৪০ টাকা

নতুন বই প্রকাশের অনুভূতি এবং সমকালীন সাহিত্যের বিবিধ প্রসঙ্গে সীমা শামীমা কথা বলেছেন গ্রন্থগত ডট কম এর সঙ্গে।

===============

❑  সম্প্রতি আপনার বই প্রকাশিত হলো৷ আপনার অনুভূতি জানতে চাই৷

* কোন অনুভূতি'র যথার্থ প্রকাশ কি ভাষায় করা সম্ভব? আমি খুব দুর্বল তা প্রকাশে, যা-ই বলতে যাচ্ছি মনে হচ্ছে না আসলে এমন না, এই ভাললাগার কোন নাম নেই, উপমা নেই, প্রকাশের কোন ভাষাও নেই। একটা বই বিশাল ব্যাপার, আবার একটা বই কিছুই না।

❑  বই প্রকাশের সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন কীভাবে?

*লেখালেখির একপর্যায়ে স্বপ্ন দেখতে শিখলাম যে আমার একটা বই থাকবে, লেখাগুলোকে একসাথে ছুঁয়ে দেখতে চাই!

❑  বইটি প্রকাশ করতে প্রকাশক নিয়ে জটিলতায় পড়তে হয়েছিলো কি?

*এটি বাংলাদেশের একটি কমন সমস্যা। এ ব্যাপারে বলতে গেলে অনেক কিছুই বলতে হয়, আর আমি প্রকাশকদের দোষ দেই না, তারা চান টাকা এবং নাম। আর এটাও তো একটা কমন চাওয়াই, তাই না? তবে কিছু প্রকাশক খুবই মানহীন এবং নীতিহীন।

❑  নিজের লেখার প্রতি আত্মবিশ্বাস কতটুকু?

*সব মানুষের একই সমান আত্মবিশ্বাস থাকে না। আমার আত্মবিশ্বাস বরাবরই কম । আর লেখার ক্ষেত্রে একটা দোলাচল তো চলেই।

❑  কবিতাই কেন লিখলেন? ভাব প্রকাশের জন্য শিল্পের আরও তো মাধ্যম আছে।

ছোট্ট একটা কবিতায় একটা গোটা বিষয়কে, ঘটনাকে, সমাজকে, জীবনকে পুরে দেয়া যায়
* খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আসলে কবিতার ভাবটা আমার কাছে সম্পূর্ণ আলাদা মনে হয়। আর আমি বিশ্বাস করি কেউ বলে কয়ে কবি হয় না, কবিত্ব'টাও একটা প্রতিভা যা অনেক মানুষের ভিতরে ঘুমিয়ে থাকে। যারটা জাগে স্বেচ্ছায়ই জাগে।  ছোট্ট একটা কবিতায় একটা গোটা বিষয়কে, ঘটনাকে, সমাজকে, জীবনকে পুরে দেয়া যায়, এরচে' সহজ পন্থা আমি আর জানি না আসলে।  আর শুধু কবিতা'ই লিখছি না,  একটা উপন্যাসের পাণ্ডুলিপিও গুছানো আছে। আশা করছি আগামীতে প্রকাশিত হবে।

❑  অনেকে বলেন লিখতে আসলেও একটা প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে আপনার প্রস্তুতির কথা জানতে চাই।

* আসলে তারা কী রকম প্রস্তুতির কথা বলেন আমি ঠিক বুঝতে পারছি না, আমি অনেক সময় একলাইন লিখে ঘন্টাও কাটিয়ে দিয়েছি কিন্তু পরের লাইন যথোপযুক্ত মনে হয়নি অথচ, কখনো ঘর ঝাড় দিতে যেয়েও ঝাড়ু ফেলে এসে একটা কবিতা (জানিনা হয়েছে কি না) লিখে ফেলেছি। কখনো মাস চলে গেছে একলাইনও লিখতে পারিনি আবার কখনো দিনে তিনটাও লিখেছি। তাই প্রস্তুতি আসলে কেমন আমি তা জানিনা। তারা যদি শিক্ষাগত যোগ্যতা বা বিভিন্ন আড্ডা, কবিতার ক্লাস ইত্যাদি বিষয়কে বুঝিয়ে থাকেন তবে আমি দুঃখিত, আমার সেসব নেই।

❑  পাণ্ডুলিপি গোছানোর ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছেন?

* সবার আগে মান ও ব্যতিক্রমতা ! আমার অনেক পছন্দের লেখাও পাণ্ডুলিপি থেকে পরে বাদ দিয়েছি কেবল এজন্য যে এর মধ্যে ব্যতিক্রমতা নেই আর মান সচরাচর মনে হয়েছে।

❑  শিল্প না কি পাঠক, আপনার দায়বদ্ধতা কার কাছে?

আমার বেলায় সবার আগে আমার নিজের কাছে আমার দায়বদ্ধতা।  তবে যখন তা বাজারজাত করবো তখন আগে শিল্পকেই গুরুত্ব দেবো, পাঠকের চাহিদা মেটাবার একটা দায় থাকলেও তা শিল্পমানকে ক্ষুন্ন করে নয়।

❑  একজন পাঠক হিসেবে যখন বইটি দেখছেন/পড়ছেন, তখন বইটিকে কেমন মনে হচ্ছে?

* হা হা, সেক্ষেত্রে বলব আমার কাছে আরো ভাল কিছু প্রত্যাশা ছিল।

❑  অধিকাংশ লেখক বইমেলাকে কেন্দ্র করে বই প্রকাশ করে, বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখেন?

* এটাকে আমি পজেটিভলি দেখি। গ্রামে একটা কথা প্রচলিত আছে, "হাটবারেই হাট মিলে"। যদিও বইয়ের চাহিদা সবসময়, সারা বছর, তবু যদি একটা নির্দিষ্ট সময়ে সব বই একসাথে পাওয়া যায় তো মন্দ কি! আর সেই প্রেরণা থেকেই লেখকেরাও এই সময়টাকে বেছে নেন। লেখকদের জন্য এটা একটা উৎসবও বটে। লেখক-পাঠকের মিলনমেলা এ বইমেলা৷

পাঠকদের উদ্দেশ্যে বলবো, বই কিনুন বই পড়ুন, বই হোক আপনার ও লেখকের অনুভূতির একাত্মতার সেতুবন্ধন। আর কবিতা হোক প্রেমের মত প্রয়োজনীয় অনুসঙ্গ।
=============
C/O ইব্রাহীম
সীমা শামীমা

জলকথা প্রকাশনী
প্রচ্ছদ অনূপ সায়ন্ত
পরিবেশক চমন প্রকাশনী
স্টল নাম্বার -৭১৯
পৃষ্ঠা -৪৮
মূল্য -১৪০ টাকা
ISBN  978-984-8968-24-5

মতামত:_

0 মন্তব্যসমূহ