রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'দেনাপাওনা' গল্প নিয়ে সংক্ষিপ্ত মতামত: রাজশ্রী রায় মৌমিতা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'দেনাপাওনা' গল্প নিয়ে সংক্ষিপ্ত মতামত: রাজশ্রী রায় মৌমিতা




দেনাপাওনা গল্পের মূল বক্তব্য


দেনাপাওনা গল্পটি সমাজে যৌতুক প্রথার দিকটি তুলে ধরেছে। গল্পের নায়িকা নিরুপমা। রামসুন্দর মিত্রের একমাত্র কন্যা এবং সর্বকনিষ্ঠ সন্তান। নিরুপমার বয়স হলে ছেলে দেখতে শুরু করেন। বড় ঘরের এক ছেলে পছন্দ হয়। ছেলের বাড়ির দাবিও হয় বিশাল। বিয়ের আগে কিছুমাত্র পাওনা মিটিয়ে বিয়ে দিলেন। তবে সমস্যা শুরু হলো এখন। বিয়ের পর নিরুপমার স্বামী ম্যাজিস্ট্রেসি পড়তে বাইরে যায়। বিয়েতে চাওয়া যৌতুক এখনও মেয়ের বাবা অর্থাৎ নিরুপমার বাবা শোধ করতে পারেন নি। তাই নিরুপমাকে পদে পদে শ্বাশুরির খোঁটা শুনতে হয়। রামসুন্দর সে বাড়িতে পায় না কোন মূল্য বা সম্মান। পারে না রামসুন্দর নিজের মেয়েকে বাড়িতে আনতে। মেয়ের চোখের জল দেখতে না পেয়ে ভিটে-বাড়ি বিক্রি করে সেই টাকা নিয়ে যায় মেয়ের দুঃখ ঘোচাতে। তবে মেয়ে জানতে পেয়ে নিজের বাপের বাড়ি যাওয়ার ইচ্ছাকে বিসর্জন দেয়। এর সাথে নিরুপমার সকল ইচ্ছারও বিসর্জন হয়ে যায়। সে তার শরীরের প্রতি বেখেয়ালি হয়ে পড়ে। ঠাণ্ডায় ভোরে স্নান, গরম পোশাক না পরা ইত্যাদি। এভাবে চলতে চলতে এক কঠিন ব্যাধিতে সে আক্রান্ত হয়। বাপের বাড়ি যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করলেও তা পেশ হয় না। অবশেষে নিরুপমা মারা যায়। তার ধুমধাম করে শ্রাদ্ধ করেছিল নিরুপমার শ্বশুর রায়বাহাদুর এবং এরপর তিনি তৈরি হন আরও বেশি যৌতুক নিয়ে ছেলের বিয়ে দিতে।



মুলভাব


সমাজের একটি কুপ্রথা হলো যৌতুক। এই যৌতুকের জন্য নিরুপমা ও তার পরিবার দুঃখ কষ্টে দিন পার করেছে। এভাবেই এই যৌতুকই অনেক মেয়ের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ও ছেলের পিতা-মাতাকে লোভি থেকে অমানুষ করে তুলেছে।



মতামত


সমাজে অনেক প্রথা ও কুপ্রথা চালু আছে। তাদের একটি হলো যৌতুক প্রথা। প্রতিটি মেয়ের মা-বাবাই চায় মেয়েকে ভালো ঘরে দিতে। কিন্তু অধিকাংশ সময় মেয়েদের বাবার এই আশা ভেঙ্গে যায় যৌতুকের পরিমাণ শুনে। আর যদি যৌতুক দিতে না পারে তবে মেয়েকে শ্বশুর বাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে হয়। তাই সমাজ থেকে খুব দ্রুত এই অমানবিক যৌতুক প্রথার বিলুপ্তি ঘটাতে হবে।

মতামত:_

0 মন্তব্যসমূহ