আহমদ রফিকের “স্মরণীয় বরণীয় আপন বৈশিষ্ট্যে” - আলমগীর মোহাম্মদ

আহমদ রফিকের “স্মরণীয় বরণীয় আপন বৈশিষ্ট্যে” বইয়ের প্রচ্ছদ

সদ্য প্রয়াত আহমদ রফিক বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক। তাঁর জন্ম ১৯২৯ সালে। ছাত্রজীবন থেকেই সাহিত্য -সংস্কৃতি ও প্রগতিশীলতার সাথে তিনি  নিবিড়ভাবে সংশ্লিষ্ট ছিলেন । রাজনীতি সচেতনতা ও সংশ্লিষ্টতার কারণে তাঁর ছাত্রজীবন  অনেকটা বিপর্যস্ত  হয়েছিল। আমাদের কালের অন্যতম এই প্রাবন্ধিক তাঁর কবিতা ও তাঁর বোধসম্পন্ন কলামের জন্য সমাদৃত। 'স্মরণীয় বরণীয় আপন বৈশিষ্ট্যে' আহমদ রফিকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধসংকলন। শওকত ওসমান, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, আহসান হাবীব, সত্যেন সেন, সুফিয়া কামাল, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, রণেশ দাশগুপ্ত প্রমুখ কবি-লেখক-সাহিত্যিক এবং ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিক, প্রাবন্ধিক আতাউর রহমান, অধ্যাপক ও অনুবাদক  অনুবাদক কবীর চৌধুরীর  লেখালেখি, ব্যক্তিত্বের স্বরূপ, এবং জাতীয় দুর্যোগ ও দুর্দিনে ভূমিকার কথা লেখক সাবলীলভাবে তুলে ধরেছেন এই প্রবন্ধ সংকলনে।

এই সংকলনের প্রথম প্রবন্ধ ‘চৈতন্যের নানা আলোয় শিল্পী ও ব্যক্তি শওকত ওসমান’ -এ  আমরা ব্যক্তি শওকত ওসমান ও তাঁর শিল্প সত্ত্বার পরিচয় পাই। সমাজ-সচেতন, জীবনবাদী এই কথাশিল্পী তাঁর সাহিত্যকর্মে সমাজের চুল-ছেঁড়া বিশ্লেষণ করেছেন পরিবর্তনের আশায়। সমাজ বদলের  লক্ষ্যে আশাবাদী এই লেখক সম্পর্কে প্রাবন্ধিকের মতামত এখানে তুলে ধরা শ্রেয় মনে করছি।

লেখক না হয়ে রাজনীতিবিদ হলে তিনি সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শ নিয়ে পথ চলতেন, সে আদর্শ বাস্তবায়ন হতো তাঁর লক্ষ্য।


অবশ্যই, প্রাবন্ধিক পরে এই মত দেন যে 

ভাগ্যিস তিনি সক্রিয় দলীয় বা দলীয় রাজনীতিতে হাত পাকাননি। তাই আমাদের সাহিত্যে প্রগতিবাদী অগ্রজের ভূমিকা তাঁর জন্য সুনির্দিষ্ট হয়ে রইল।


শওকত ওসমান সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তাঁর গল্প, ছড়া, স্যাটায়ার ও উপন্যাসে সদা সোচ্চার ছিলেন। সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত সমাজ গঠনকে তিনি সমাজের স্বার্থে বড় ধরণের লড়াই মনে করতেন। ব্রিটিশ নাট্যকার জন অসবর্ণ তাঁর বিখ্যাত নাটক 'লুক ব্যাক ইন এংগার' নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রের মুখ দিয়ে ব্রিটিশ সমাজের শ্লথগতির সমালোচনা করিয়েছেন খুব কড়াভাবে। বাংলা সাহিত্যে শওকত ওসমানকেও আমরা সেই একই ভূমিকায় পাই। মধ্য সত্তরের দশকে রাগে -ক্ষোভে, হতাশায় তাঁর বহুচেনা সীমানা অতিক্রম করে চলে গিয়েছিলেন নিজের জন্মদেশে। এ যেন মনের দুঃখে স্বেচ্ছা নির্বাসন। কলুষিত সমাজের চরিত্র তাঁকে এতই বিরক্ত করেছিল যে এক পর্যায়ে তিনি অভিযোগ করেছিলেনঃ 

বর্তমান বাংলাদেশি সমাজ সময়ের বিচারে আধুনিক হলেও মূল্যবোধ ও মননশীলতায় আধুনিক নয়, শুদ্ধবিচারে অবশ্যই নয়।


অসম্ভব স্বচ্ছ, নির্মেদ, ও নির্মেঘ মনের মানুষ শওকত ওসমান বাংগালী মধ্যবিত্তের অতিমাত্রায় আত্মসচেতনতা ও আত্মতুষ্টির সমালোচনা করে বলেছিলেন,

আমরা বড়বেশি নাগরিক, সংকীর্ণ অর্থে নাগরিক।


দ্বিতীয় প্রবন্ধে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জীবনের নানাদিক ও তাঁর উপন্যাসের আলোচনা করেছেন লেখক। নাম দিয়েছেন 'ব্যক্তি ও সমাজের অন্তর-বাহির নিরীক্ষায় সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ’। বাংলাদেশের মুসলমান সমাজে প্রচলিত ফতোয়াবাজি, পীরবাদ, সংস্কার ও ধর্মব্যবসার স্বরূপ তুলে ধরে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ লিখেছেন  লালসালু উপন্যাসে। লালসালু সম্পর্কে লেখকের মূল্যায়ন যথাযথঃ 
 

গ্রামবাংলার ধর্মীয় অনাচারের বাস্তব এক সমাজচিত্র। যেমন বিষয়ে তেমনি ভাষারীতিতে বাংলা সাহিত্যের ঐতিহ্যাশ্রয়ী একটি গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাস।


ওয়ালীউল্লাহ কিছুটা বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন করতেন। অল্পবয়সে মায়ের মৃত্যু, বাবার দ্বিতীয় বিবাহ, তাঁর পড়ালেখা শেষ হবার আগে বাবার মৃত্যু এসব ঘটনা তাঁকে কিছুটা হলেও প্রচলিত সমাজধারণা, পারিবারিক সম্পর্ক প্রভৃতি বিষয়ে ভিন্নভাবে ভাবতে বাধ্য করেছিল। এই বিচ্ছিন্নতা বা এলিয়েনেশন পরবর্তীতে তিনি আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি। পরিবার, সংসার, চাকুরী, লেখালেখি সবকিছুর ভীড়ে ব্যক্তি ওয়ালীউল্লাহ একা যেন। ওয়ালীউল্লাহর নিজের সম্পর্কে উক্তিটা এখানে স্মরণ করা যায়।

আই ফিল টেরিবলি রুটলেস।


ওয়ালীউল্লাহ সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য এখানে তুলে ধরা প্রাসঙ্গিক মনে করছি যা ব্যক্তি ওয়ালীউল্লাহ ও তাঁর সামগ্রিক লেখকসত্তা বুঝতে পাঠকের জন্য সহায়ক হতে পারে।

অন্তর্মুখী, একাকিত্ব বোধে আক্রান্ত, মননশীল, অপ্রগলভ ও বিনম্র প্রকৃতির সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ প্রকৃতি বিচারে তাঁর সমকালীনদের মধ্যে ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব। একজন অন্তর্মুখী যেমন ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী হয়ে থাকেন তেমনই ছিলেন সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ। তাই কিছুটা নিঃসঙ্গ, কিন্তু প্রখরমাত্রায় আধুনিক। সমষ্টিগত জীবনবোধে ও শিকড়সংলগ্নতা নিয়ে তিনি প্রগতিপন্থি।


আহসান হাবীব বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি। কিন্তু তাঁর কবিতা নিয়ে আলাপ – আলোচনা বা মাতামাতি কম।  তাঁর কবিতায় চড়াস্বর বা প্রচারমুখিতা একেবারে নেই। ব্যক্তি হিসেবেও তিনি ছিলেন খানিকটা অন্তর্মুখী আর নিজেকে  তিনি আড়ালে রাখতে পছন্দ করতেন। 

সত্যি বলতে কি ব্যক্তিত্ব বৈশিষ্ট্যে আহসান হাবীব তার সমকালের কবিদের চেয়ে একেবারে ভিন্ন, আলাদা মেজাজের নিঃসঙ্গ প্রকৃতির বিচারে।


তিনি ছিলেন রাজনীতিমনষ্ক মানুষ। যদিও সরাসরি কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন না। আগাগোড়া দেশপ্রেমিক ও জাতীয়তাবাদী এই কবি শ্রেণীবৈষম্যমুক্ত সমাজের প্রতীক্ষায় ছিলেন। 'বিদীর্ণ দর্পণ মুখ' কাব্যগ্রন্থের ভূমিকায় তিনি লিখেনঃ

ক্ষুধায় সেই হননকারী শত্রু যে মানবজীবন থেকে কবিতা কামনা হরণ করে।ক্ষুধা মানুষই তৈরি করে মানুষের মধ্যে। ক্ষুধার রাজ্যে কবিতা কিছু বলবার দায়িত্ব নিয়ে থাকে।



ক্ষুধা ও কবিতার অন্তর্গত সম্পর্ক এবং বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণই ছিল কবির কবিতার অন্তর্নিহিত উদ্দ্যেশ্য। তাঁর কবিতার বিষয়বস্তু ও থিম নিয়ে এক মন্তব্যে আহসান হাবীব বলেছেন, 



শ্রেণীবৈষম্যের অভিশাপ, মধ্যবিত্ত জীবনের কৃত্রিমতা এবং উদ্ভ্রান্ত উদ্বাস্তু যৌবনের যন্ত্রণা আজো আমার কবিতার বিষয়বস্তু।



অধ্যাপক কবীর চৌধুরী বাংলা সাহিত্যকে নানাভাবে সমৃদ্ধ করেছেন। বিদেশি সাহিত্যকে বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের কাছে পরিচিত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ অথচ স্বীকৃতিহীন মহৎ কাজের দায়ভার নিজের কাঁধে বয়ে বেড়িয়েছেন সারাজীবন। শিক্ষকতা, অনুবাদ, প্রবন্ধ লেখার পাশাপাশি সাহিত্য-সাংস্কৃতিক জগতের সভা-সেমিনারগুলোতে তাঁর ছিল সরব উপস্থিতি। কবীর চৌধুরী সম্পর্কে প্রাবন্ধিক বলেছেন,

অগতির গতি  সর্বজনমান্য কবীর ভাই। সমাজে কিছু সংখ্যক মানুষ থাকেন যারা মানুষকে মানুষ হিসেবে সম্ভ্রমের মর্যাদায় দেখতে পারেন, তা আত্মগরিমার পরিমাপে নয়। প্রফেসর কবীর চৌধুরী তেমনই একজন।


ব্যতিক্রমী মার্ক্সবাদী চিন্তন-লেখক রণেশ দাশগুপ্ত। যিনি বিশ্বাস করতেন যে, 
 

আদর্শবাদী হলেই যে সবাইকে এক্টিভিস্ট হতে হবে তা নয়,বরং উল্টোটা প্রায়শ উপকারী।


তিনি পাকিস্তানের বিপ্লবী কবি ফায়েয আহমেদ ফায়েযের কবিতা অনুবাদ করেছিলেন। তাঁর বিখ্যাত রচনা 'উপন্যাসের শিল্পরূপ' বাংলা সাহিত্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রচনা। জীবনের প্রায়সময় জেলে জেলে কাটিয়ে দেয়া এই ধীমান ব্যক্তিত্ব বাংলা সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। হোক তা মৌলিক সৃষ্টিকর্মে কিংবা অনুবাদে।

সত্যেন সেনকে লেখক পাঠকের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন এভাবেঃ 

সত্যেন সেন মূলত সমাজবাদী ঘরানার রাজনীতিমনষ্ক সাংস্কৃতিক প্রতিভা। মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সংঘটিত কৃষক সম্মেলনগুলো দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি উদীচী গড়ে তোলেন যা পরবর্তীতে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।


মাতৃভাষা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। মাটির টানে, মাতৃভাষার টানে দেশ বিভাগের পরও রয়ে গিয়েছিলেন এদেশে। পাকিস্তানী বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার শিকার হন তিনি একাত্তরে। প্রাণ হারান এই দেশপ্রেমিক। মাতৃভূমি, মাটির ঋণ শোধ করেছিলেন রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে। আহমদ রফিকের মূল্যায়নঃ 

যে মাটির প্রতি ভালোবাসায় স্বদেশভূমি ছেড়ে যেতে পারেননি বাংলাপ্রেমী ধীরেন্দ্রনাথ সেই বাংলার মাটি তাঁকে ধারণ করে রেখেছে। মৃত্যু নেই ভাষাপ্রেমী ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের।


আমীর হোসেন চৌধুরী ছিলেন কবি, গবেষক, নজরুলপ্রেমী ও অনুবাদক। তাঁর সাহিত্য ও রাজনীতির মূলে ছিল তাঁর নজরুল প্রেম। নজরুলের কবিতার অনুবাদ করেছিলেন "Voice of Nazrul" নামে। ভাষাপ্রেমিক এই মানুষ ঢাকার রাজপথে ঐতিহ্যবাহী দাঙ্গা বিরোধী মিছিলে যোগ দিতে গিয়ে ঢাকার রাজপথে শাহাদাত বরণ করেন। তাঁর কবরে লেখা আছে নজরুলের কবিতার লাইন। অনুবাদ নিজেরই। 

Death can never be the end of life
Proclaim! Life is an eternal flow
Its current flows on and on since eternity
Death can never the end of life.


আমীর হোসেন চৌধুরী সম্পর্কে আহমদ রফিকের মূল্যায়নঃ 

কিছু মানুষ থাকেন যারা তাদের সমাজের কাছ থেকে প্রাপ্য মর্যাদা বা স্বীকৃতি পান না, আমীর হোসেন চৌধুরী তাঁদেরই একজন।


সুফিয়া কামাল বাংলাদেশের নারীমুক্তি ও সমাজ পরিবর্তনের ব্রতযাত্রার অন্যতম সৈনিক। নারীর  জন্য শোষণ, বঞ্চনা ও বৈষম্যমুক্ত একটা সমাজের স্বপ্ন দেখতেন 'জননী সাহসিকা'। নারী শিক্ষা, নারী অধিকার সচেতন এই লেখক বেগম রোকেয়ার দেখানো পথে অনেক দূর এগিয়েছিলেন তাঁর লেখালেখি ও কর্মকান্ডের মাধ্যমে। আহমদ রফিক সুফিয়া কামালের প্রশংসা করেছেন নারী অধিকার আদায়ে তার সোচ্চার ভূমিকা, লেখালিখি ও অধিকার আদায়ে সাহসী ভূমিকা পালনের জন্য। 

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের নাম বাংলাদেশের সাহিত্যে স্থায়ী একটা আসন গড়ে নিয়েছে। সমাজনিষ্ঠ ও জীবনঘনিষ্ঠ এই উপন্যাসিক স্ব-মহিমায় কথাসাহিত্যের এক বিশেষ ধারা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। দেশীয় জনগোষ্ঠীর জীবনের সাথে ইতিহাস ও রাজনীতির ওতপ্রোতভাবে জড়িত সম্পর্কের রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করেছিলেন ইলিয়াস। ঐতিহ্যকে ধারণ করে ভবিষ্যতে চোখ ছিল তাঁর। আহমদ রফিক বলেন, 

শ্রমজীবী নিম্নবিত্ত মানুষকে নিয়ে যখন লিখি তখনো পাকে প্রকারে তার মধ্যে ঢুকিয়ে দিই মধ্যবিত্তকে, এবং শক্ত সমর্থ জীবন্ত মানুষগুলোকে পানসে ও রক্তশূন্য করে তৈরি করি। বাংলাদেশে এখন চলছে শ্রমজীবী মানুষের সাথে মধ্যবিত্তের বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া।


বলার ভাষায় এবং কিছুটা স্মৃতিচারণের ভঙ্গিতে লেখা ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিকের ”স্মরণীয় বরণীয় আপন বৈশিষ্ট্যে” পাঠ সাহিত্য সমালোচনার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য  জরুরি।



**********
স্মরণীয় বরণীয় আপন বৈশিষ্ট্যে
আহমদ রফিক


প্রকাশনী: আদী প্রকাশন, ঢাকা
প্রকাশকাল: ২০২৪ (পুনর্মূদ্রণ)
পৃষ্ঠাসংখ্যা: ১৬৮
মূল্য: ২৫০
ISBN: 978 984 906 781 8

মতামত:_

0 মন্তব্যসমূহ