রে ভূ-বারান্দা’র আদুরে ভঙ্গিমা - মেহেরাব ইফতি

তরুণ কবি নাভিল মানদার এর কাব্য ‘ভূ-বারান্দা’ আলোচনা করেছেন মেহেরাব ইফতি


নট মাই ফুড... :)

নাভিল মানদারের কবিতাগুলার ভঙ্গি ঋজু। আবার মাঝে মাঝে আদুরে আদুরেও। অনেকগুলা কবিতায় উনার সম্বোধন দেখলাম 'রে' কইয়া। মানে শুধু রে দিয়াই শুরু। এইটা, শীতের সকালের হাল্কা রইদের মতো কোমল কোমল বিষয়টা যেন। অই ঋজু ভঙ্গির ভিত্রে ভিত্রেই স্মরণযোগ্য সব লাইন লেখা। এইরকম স্মরণযোগ্য ইমেজারি লাইনের কোনো অভাবই নাই। একেকটা ইমেজারি হয়ত আগেও কওয়া হইছে বা এইরকম হইতে পারে যে যেহেতু তার ভঙ্গিমাটার চিন-পরিচয় আমাদের আগেও হইছে, এজন্য অই স্মরণযোগ্য পঙক্তিগুলার দিকেই নজর গেছে বেশি। যেমন ধরেন :

অতো বড়ো ট্রেনের ক্ষুধার্ত পেট
তীব্র হুইসেলে করে হাহাকার।

মানে খুঁইজা খুঁইজা অদ্ভোত কিছু যে ইমেজারি টেক্সট হিশাবে টোগাইয়া কবিতায় ঢুকাইতে হবে এইরকমও ট্রাই করেন নাই লেখক। আশেপাশের পার্টিকুলার ওয়েদারই উনারে হেল্পাইছেন এইগুলা ক্রিয়েট করাতে এইরকমই মনে হইছে। যেমন ধরেন :

সন্ধ্যামালতীর নীরব একটি ফুল
হাত দিয়ে চেটে খায় ঝিঁঝিঁপোকা ডাক

সেই অনেক বছর আগে থেকে
বিড়ালের জিহ্বা প্রচুর অভিজ্ঞ

অবিরাম উড়ে যাওয়া পাখির ডানা
প্রতিদিন পরিষ্কার করে ময়লা আকাশ

কিন্তু আমি যে কইলাম নট মাই ফুড! এই স্মরণযোগ্য লাইনগুলা কবিতার পুরা ঋজু শরীরে যেভাবে ফুইটা আছে মনে হইতেছে কবিতার পুরা অবয়ব না, ইমেজারি লাইনগুলার উপর অবজেকটিভলি কবিতাগুলা ভর দিয়া খাঁড়াইয়া আছে। যদিও অতো উস্কানি দেওয়া কিংবা চোখে সুঁই ফোটানোর মতো লাইন এইগুলা না। কিন্তু কবিতা ব্যতিরেকেই এই লাইনগুলা পড়া যায় কিন্তু এই লাইনগুলারে যদি আপনে সরায়ে দেন তাইলে কবিতার শরীর খারাপ হইবার সম্ভাবনা বাইড়া যায় দ্যাখা যাইতেছে।

আরেকটা জিনিস হইল যে, কবিতার যে ঋজু ভঙ্গিমা, উনার যে টোন বা রিদম সবগুলাই আমার কাছে মোর এপলিটিক্যাল লাগছে (ইস্থেটিকস এর ব্যবহার যদিও পরিমিত) আর সেই সাথে একটা ভেতো ভেতো গন্ধ আছে কবিতা গুলার গাও থেকে। আমার মনে হয় 'হেইনিকেন'র মতো র কিছুই আমার পছন্দ বা আমার জিহ্বার টেস্টই ওইটা। যাজাকাল্লাহ।    

(বানানরীতি লেখকের)

====================
ভূ-বারান্দা
নাভিল মানদার

প্রচ্ছদশিল্পী : মোজাই জীবন সফরী
প্রকাশক : উলুখড় প্রকাশনা, ঢাকা।
প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি ২০১৭
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৪৮
ISBN: 9789848856465

মতামত:_

0 মন্তব্যসমূহ