১০টি পাঠকপ্রিয় বই রিভিউ ও আলোচনা - এর তালিকা - এপ্রিল ২০১৮

 ১০টি পাঠকপ্রিয় বই রিভিউ ও আলোচনা - এর তালিকা - এপ্রিল ২০১৮
বাংলা ভাষায় শুধুমাত্র বইয়ের আলোচনা, সমালোচনা, বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করার জন্য একমাত্র অন্তর্জালিক ঠিকানা গ্রন্থগত.কম (www.granthagata.com)। এই ওয়েবসাইটে আমরা অনিয়মিতভাবে বিভিন্ন বিষয়ের বইয়ের রিভিউ প্রকাশ করে থাকি। একটি ধারণা সাধারণ্যে প্রচলিত রয়েছে যে বইয়ের পাঠক ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। আমাদের মনে হয় কথাটি সর্বাংশে গ্রহণযোগ্য নয়। বরং আমরা মনে করি পাঠক তার পছন্দের বইটি খুঁজে পাচ্ছেন না। আমরা নতুন পাঠকের মনের মত বইকে তার সামনে উপস্থাপন করতে পারছি না। আমাদের এই ব্যর্থতা বা দুর্বলতার দায়ভার নবীন পাঠকের নয়। গ্রন্থগত ওয়েবসাইট পাঠকদের সামনে বিভিন্ন ধরনের বইয়ের কথা তুলে ধরার কাজটি নিরলসভাবে করে চলেছে। বই সম্পর্কে জানতে উৎসাহী পাঠকগণ গ্রন্থগত সাইটে এসে বিভিন্ন প্রকারের বইয়ের খোঁজ পাচ্ছেন। পাঠকদের এই আগ্রহকে আরেকটু জাগিয়ে দিতে আজ আমরা এপ্রিল (২০১৮) মাসের জনপ্রিয় ১০টি বইয়ের কথা প্রকাশ করতে চাই। আমাদের প্রত্যাশা- জনপ্রিয় বইরিভিউগুলোকে একটি মাত্র পোস্টে প্রকাশ করার এই চেষ্টাকে আপনারা স্বাগত জানাবেন। উল্লেখ্য যে, এই তালিকা সম্পূর্ণভাবে গুগল সার্চ ইঞ্জিন দ্বারা যান্ত্রিকভাবে প্রস্তুতকৃত। ক্রমানুসারে প্রকাশিত এই তালিকা প্রণয়নে গ্রন্থগত ওয়েবসাইট সম্পাদকের ব্যক্তিগত আবেগকে প্রভাবক হিসেব প্রয়োগ করা হয় নি।

প্রথম
সাধারণভাবে আমরা মনে করি বাংলা ভাষায় যারা কথা বলে তারাই বাঙালি। এটা একটি ভাষাভিত্তিক পরিচিতি। কিন্তু প্রাজ্ঞ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আরও কিছু বৈশিষ্ট্য বাঙালির চরিত্রে যোগ করতে চান। বাঙালির সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি বিষয়ে তিনি নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়েছেন। নিজস্ব বিচারবোধ থেকে বাঙালীত্বকে সংজ্ঞায়িত করতে চান। আর সেই মনোভঙ্গির সার্বিক পরিচয় রয়েছে “বাঙালী কাকে বলি” নামের বইতে।

বইয়ের বিস্তারিত আলোচনা পড়ুন “বাঙালী কাকে বলি- সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী”

দ্বিতীয়
বাংলা ভাষা, ব্যাকরণ ইত্যাদি সম্পর্কে আমাদের মনে অনেক সময় নানারকম প্রশ্নের উদ্রেক হয়। বিশেষ করে বানান নিয়ে বিভ্রান্তির তো কোন শেষ নেই। আমরা সাধারণ মানুষরা বানান ও ভাষাভঙ্গির বিচার করতে গিয়ে দিগ্বিদিক হারিয়ে ফেলি। এই পথভ্রষ্টতা থেকে রক্ষার জন্য আমরা “বাংলা ভাষা, বানান ও উচ্চারণ বিষয়ক ৫৫টি বইয়ের তালিকা” প্রকাশ করেছি। এই বইগুলোর নিবিষ্ট পাঠ বাংলা ভাষা সম্পর্কে আমাদের অনেক প্রশ্নের উত্তর দেবে।

পড়ুন “বাংলা ভাষা, বানান ও উচ্চারণ বিষয়ক ৫৫টি বইয়ের তালিকা”


তৃতীয়
পাদপ্রদীপের আলো থেকে অনেক দূরে বাংলাদেশের এক প্রান্তে নিভৃতে বাস করেন কবি মিজান খন্দকার। তিনি জীবনের হাজারও সীমাবদ্ধতার ওপারে অন্বেষণ করে আনন্দ ও প্রত্যাশাকে। আত্মমগ্নতার প্রজ্ঞায় উন্মোচন করতে চান মানুষকে ভালবাসার শক্তিকে। প্রেরণা বোধ করেন আধুনিক মননশীলতা ও মানবতাবাদী দায়িত্ব থেকে। জীবনে সাথে জীবনের যোগসূত্র মেলানোর প্রক্রিয়ায় তিনি নিরন্তর সচেষ্ট থাকেন। আর এসবের সার্বিক চিত্ররূপময় এক আলোকচ্ছটা হল তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ “যথা কবি নিরঞ্জন”।

বইটি সম্পর্কে জানতে পড়ুন “যথা কবি নিরঞ্জন - মিজান খন্দকার”

চতুর্থ
বই আলোচনা বা রিভিউ লেখা একটি আনন্দদায়ক কার্যক্রম। আনন্দের এই অপার ঝর্ণাধারা সম্পর্কে অনেকেই সচেতন নয়। কিন্তু পঠিত বইয়ের ভাললাগাকে অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দেবার অন্তর্গত একটি আকুলতা অনেকেই বোধ করেন। তাঁদের এই প্রত্যাশাকে বাস্তবরূপ দিতে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে আমরা গ্রন্থগত ওয়েবসাইটে বই রিভিউ করার নিয়ম কানুন নিয়ে একাধিক আলোচনা প্রকাশ করেছি। আগামীতেও আমাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। কিভাবে বই রিভিউ করে বা যেভাবে বই রিভিউ করা হয় তার জন্য একটি তথ্যবহুল লেখা হল “কিভাবে বই (বুক) রিভিউ লিখতে হয়?” রচনাটি। এই রচনাটিতে বই রিভিউ কি, পুস্তক পর্যালোচনা কি, বই রিভিউ লেখার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে একাধিক আলোচনাকে একসূত্রে গাঁথা হয়েছে। যে কোন নতুন আলোচক এই রচনাগুলো থেকে বই রিভিউ লেখার নিয়ম কানুন সম্পর্কে প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়।

পড়ুন “কিভাবে বই (বুক) রিভিউ লিখতে হয়?”

পঞ্চম
বই রিভিউ যেভাবে লিখবেন সে সম্পর্কে অনেক রকম পরামর্শ রয়েছে। কিন্তু সবচাইতে সহজ পদ্ধতি কি, বা বই রিভিউ করার সবচাইত সহজ নিয়ম কী সে সম্পর্কে মতভেদ হয়তো রয়েছে। আমরা “বই রিভিউ করার ৬(ছয়)টি সহজ ধাপ” রচনাটিতে পাঠককে আলোচকে রূপান্তরিত করার জন্য কিছু সহজ পরামর্শ দিয়েছি। একজন নতুন আলোচক সহজ ধাপগুলো অনুসরণ করলে বই রিভিউ লেখার অজানা জগতের আলোকিত দ্বার নিজেই খুলতে পারবেন। আর এই প্রক্রিয়াগুলো জানতে -

পড়ুন “বই রিভিউ করার ৬(ছয়)টি সহজ ধাপ”

ষষ্ঠ
মানুষের জীবন বিজ্ঞানময়। প্রয়োজন হল নানারকম আবিষ্কারের উৎসাহদাতা। আর এই আবিষ্কারগুলোর পিছনে থাকে আবিষ্কর্তার অনেক দিনের পরিশ্রম ও ধৈর্যের কাহিনী। কোন কোন আবিষ্কার আবার হঠাৎ করে রোমাঞ্চকর ঘটনার মধ্য দিয়ে ঘটে যায়। এরকম বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার ও তার পেছনের কাহিনী নিয়ে রচিত বই “একটি কল্যাণকর দুর্ঘটনা”; লিখেছেন সেলিনা শাহজাহান ও শাহজাহান তপন। লেখকদ্বয়ের সুনিপুণ বর্ণনায় আবিষ্কারের ঘটনা ও গল্পগুলো এত আকর্ষণীয় হয়েছে যে পাঠককে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলাদা ভাবে আর কোন বই পড়তে হবে না। এই বইয়ের পঠিত জ্ঞান তার মগজে সারা জীবনের জন্য গেঁথে থাকবে।

পড়ুন “একটি কল্যাণকর দুর্ঘটনা- সেলিনা শাহজাহান ও শাহজাহান তপন এর বর্ণনায় বিজ্ঞানের মজার ঘটনা ও গল্প”

সপ্তম
ডক্টর আশরাফ সিদ্দিকী তাঁর ছাত্রাবস্থায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে চিঠি লিখেছিলেন। সহৃদয় কবি আন্তরিকতার সাথে সেই চিঠির উত্তর দিয়েছিলেন। আর সেই চিঠি ডক্টর আশরাফ সিদ্দিকীকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গ লাভে উদ্বুদ্ধ করেছিল। সেই প্রত্যাশায় তিনি ভর্তি হন শান্তিনিকেতনে। শান্তিনিকেতনে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতার সারাৎসার নিয়ে তিনি যে বই লিখেছেন তারই আলোচনা রয়েছে “রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন - ডক্টর আশরাফ সিদ্দিকী” রচনাটিতে। শান্তিনিকেতনে ছাত্র-ছাত্রীর সাথে শিক্ষকদের সম্পর্ক, বিভিন্ন অনুষ্ঠান, বিভিন্ন ব্যক্তিত্বের সাথে সাক্ষাৎকার, প্রকৃতির সান্নিধ্য ইত্যাদির বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে আলোচ্য বইটিতে। আর এই বই সম্পর্কে তথ্যবহুল আলোচনা জানতে -

পড়ুন “রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন - ডক্টর আশরাফ সিদ্দিকী”

অষ্টম
শতাধিক বৎসর পূর্বে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাংলা ভাষার নতুন লেখকদের প্রতি বেশ কিছু উপদেশ দিয়েছিলেন। আজও সেই উপদেশমালার গুরুত্ব একটুও কমেনি। তারই প্রমাণ পাঠকপ্রিয় তালিকায় বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সেই রচনাটির উপস্থিতি। আমরা পুনঃপাঠ বিভাগে পুরনো লেখাগুলো নতুন করে প্রকাশের প্রচেষ্টা নিয়েছি। দেখা যাচ্ছে আমাদের এই প্রত্যাশা বিফলে যায় নি। নবীন পাঠক এখনও আগ্রহভরে পাঠ করে বঙ্কিমচন্দ্র প্রদত্ত পরামর্শগুলি।

আপনিও পড়ুন “‘বাঙ্গালার নব্য লেখকদিগের প্রতি নিবেদন’ -- নতুন লেখকদেরকে ‘বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়’ যে পরামর্শগুলো দিয়েছিলেন”

নবম
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানমনস্ক কবিদের মধ্যে প্রধানতম হলেন মাসুদ খান। তাঁর কবিতার পাঠ শব্দরূপময় যে কল্পনার জগতে পাঠককে নিয়ে যায়, তা বাংলা সাহিত্য জগতে এখনও সেভাবে পরিষ্ফুট হয় নি। মাসুদ খানের ‘পাখিতীর্থদিনে’ কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশের পরপরই আমরা এক নতুন কল্পজগতের সন্ধান পেয়ে যাই। আবিষ্কার করি আমাদের মননের গভীরে থাকা প্রত্যাশা ও ভালবাসার মিশ্রণে লুকিয়ে রাখা স্বপ্নচিত্রগুলোকে। উপমা, রূপক, উৎপ্রেক্ষা, অনুপ্রাসের কাঙ্ক্ষিত, যথাযথ, অভিনব, অভূতপূর্ব প্রয়োগে আমরা ভবিষ্যতের বাংলা সাহিত্যকে চিহ্নিত করতে পারি। আর এসবেরই বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে পাঠকপ্রিয় এই কাব্যালোচনাটিতে।

পড়ুন “মাসুদ খানের পাখিতীর্থদিনেঃ এক প্রত্ননিমগ্ন গভীর অন্তর্লোক" - কাব্য পরিচয় কিংবা আলোচনা”

দশম
যৌনতা নিয়ে এখনও আমাদের সমাজে বিকৃতি রয়েছে। শিক্ষার প্রকাশ ঘটে চিন্তা ও আচরণে। কিন্তু সামাজিক বিভিন্ন আচরণের যে বহিঃপ্রকাশ, তা যেন প্রকটভাবে দন্ত বিকশিত করে আমাদেরকে ব্যঙ্গ করতে চায়। আর এর সার্বিক রূপের প্রকাশ ঘটে সাহিত্য ও শিল্পে। সাহিত্য ও শিল্পে যৌনতা, নগ্নতা বা অশ্লীলতা কীভাবে এসেছে, বা তার স্বরূপ কীরূপ হওয়া উচিত, সে বিষয়ে একাধিক প্রাজ্ঞজনের পর্যালোচনার একটি সংকলন রচনা করেছেন ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। বাঙালি শিক্ষিতজনদের মগজের স্পষ্ট রূপ প্রতিফলিত হয় এই আলোচনাটির পাঠগুরুত্বে। এই সংকলন সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত সমালোচনা রয়েছে গুগল সার্চে স্থান পাওয়া দশম রচনাটিতে।

পড়ুন “শিল্প-সাহিত্যে নগ্নতা যৌনতা অশ্লীলতা' বিষয়ক প্রবন্ধের সংকলন - ফয়জুল লতিফ চৌধুরী”

আগামীতেও প্রত্যেক মাসের বহুল পঠিত জনপ্রিয় রচনাগুলোর তালিকা আপনাদেরকে জানানোর প্রত্যাশা রাখি।

মতামত:_

0 মন্তব্যসমূহ